সকল মেনু

‘শুক্রবার মীর কাসেম আলীর ফাঁসির সম্ভাবনা নেই’

‘শুক্রবার মীর কাসেম আলীর ফাঁসির সম্ভাবনা নেই’
একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর ফাঁসির সম্ভাবনা শুক্রবার নেই। কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বণিক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
কারা সূত্র জানায়, মীর কাসেম আলী রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইবেন না। শুক্রবার বিকালে মীর কাসেম আলী কারা কর্তৃপক্ষকে এ কথা জানিয়েছেন।
জেল সুপার জানান, শুক্রবার ফাঁসি কার্যকরের কোনো সম্ভাবনা নেই। তবে সরকারি আদেশ বাস্তাবায়নে কারা কর্তৃপক্ষ সব সময়ই প্রস্তুত থাকে। কখন ফাঁসি কার্যকর করা যেতে পারে তা জানতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ীই সময়-ক্ষণ ঠিক করা হবে।
কারা সূত্র জানায়, মানবতাবিরোধী অন্য আসামিদের মৃত্যুদণ্ড যেভাবে কার্যকর করা হয়েছে ঠিক একই প্রক্রিয়ায় মীর কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকর করা হবে। ফাঁসি কার্যকরের আগ মূহূর্তে মীর কাসেম আলীর স্বজনরা তার সঙ্গে আরও একবার দেখা করার সুযোগ পাবেন। এজন্যে কারা কর্তৃপক্ষ তাদের ডেকে পাঠাবে। তবে শুক্রবার তাদের ডাকার কোনো সম্ভাবনা আপাতত নেই।
জেলার নাশির আহমদ জানান, মীর কাসেম আলীকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এর ৪০ নম্বর কনডেম সেলে রাখা হয়েছে। তিনি সুস্থ আছেন। কারাগারের চিকিৎসকরা তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছেন। তাকে স্বাভাবিক খাবার দেয়া হয়েছে।
এদিকে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলী রাষ্ট্রপ্রতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাচ্ছেন না। শুক্রবার কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন সাংবাদিকদের একথা জানিয়েছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দ্বিতীয়বারের মতো তার কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদনের বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। তিনি সময় নিয়ে শুক্রবার তার সিদ্ধান্ত জানান।
ইতোমধ্যে যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেম আলীর ফাঁসির দণ্ড কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে কার্যকর করতে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। এরই মধ্যে ফাঁসির মঞ্চ প্রস্তুত করে প্রাথমিক মহড়া দেয়া হয়েছে। প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে জল্লাদ দলকেও।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এর জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বণিক বলেন, সরকারের আদেশ পেলে আমরা রায় কার্যকর করব। এজন্য আমাদের যাবতীয় প্রস্তুতি আছে।
এ দিকে শুক্রবার সকাল থেকে গণমাধ্যম কর্মীরা কাশিমপুর কারা ফটকের সামনে অবস্থান নেন। কারা কর্তৃপক্ষ কারা অভ্যন্তরে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছেন। এ ছাড়া কারাগারের বাইরে পুলিশ ও আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিও লক্ষণীয়। পাশাপাশি সাদা পোশাকে বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা কারাগার এলাকায় অবস্থান করছেন। র‌্যাব ও আর্মড পুলিশের একাধিক টিম কারাগারের সামনে টহল দিয়েছে।
এর আগে বুধবার বিকালে মীর কাসেম আলীর স্ত্রী খন্দকার আয়েশা খাতুন কারাগারে তার স্বামীর সঙ্গে দেখা করার পর কারা ফটকে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন- তার স্বামী মীর কাসেম আলী রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার সিদ্ধান্তের জন্য তার ছেলে ব্যারিস্টার মীর আহমেদ বিন কাসেম (আরমান)-এর জন্য অপেক্ষা করছেন। তার ছেলে ২৩ দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছে। এ বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তার ছেলে নিখোঁজ বলে পরিবার দাবি করেছে। কিন্তু তারা এ বিষয়ে কিছু জানেন না।
গত মঙ্গলবার রাত পৌনে একটার দিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মীর কাসেম আলীর রিভিউ খারিজ সংক্রান্ত রায়ের কপি কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এ পৌঁছানো হয়। রাত অনেক বেশি হওয়ায় তখন মীর কাসেম আলীকে তা পড়ে শোনানো হয়নি। বুধবার সকাল সাড়ে ৭টায় আনুষ্ঠানিকভাবে রায় পড়ে শোনানো হয়।
৬৩ বছর বয়সী মীর কাসেম আলী ২০১২ সালে গ্রেফতারের পর থেকে এ কারাগারে রয়েছেন। ২০১৪ সালের আগে তিনি এ কারাগারে হাজতবাসকালে ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দির মর্যাদায় ছিলেন। পরে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তির পর তাকে ফাঁসির কনডেম সেলে পাঠানো হয়।
২০১৪ সালের ২ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মীর কাসেম আলীকে দুটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড এবং আটটি অভিযোগে সব মিলিয়ে ৭২ বছরের কারাদণ্ড দেন। ওই রায়ের বিরুদ্ধে তিনি সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগে আপিল করেন। আপিলের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে গত ৮ মার্চ আপিল বিভাগ শুধু কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিম উদ্দিন আহমেদকে খুনের দায়ে (১১ নম্বর অভিযোগ) ফাঁসির আদেশ বহাল রাখেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top