সকল মেনু

কলকাতা-যশোর-খুলনা রুটে মৈত্রী সৌহার্দ্য বাস সার্ভিস চালু

unnamed যশোর প্রতিনিধি: ভারত-বাংলাদেশ দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বের সর্ম্পক জোরদার করতে কলকাতা থেকে আনুষ্ঠানিক যাত্রা করা মৈত্রী বাস যশোরের বেনাপোল বন্দর থেকে খুলনা পৌঁছেছে। মঙ্গলবার বিকেল ৫টা ৫৫ মিনিটে বাস দুটি বেনাপোল চেকপোস্ট থেকে খুলনার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
সৌহার্দ্যের বার্তা নিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থার আরো উন্নতির লক্ষ্যে কলকাতা থেকে ১২ কর্মকর্তা নিয়ে পরীক্ষামূলক কলকাতা-যশোর-খুলনা রুটে আন্তর্জাতিক বাস পরিষেবায় যোগ হলো দুটি যাত্রীবাহী বাস। মঙ্গলবার বিকেলে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে বাস দুটি খুলনার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এর আগে কলকাতায় এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ বাস সার্ভিস উদ্বোধন করেন পশ্চিমবঙ্গের পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী।
বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ট্রান্সপোর্ট ডিপার্মেন্টের ল্যান্ড প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি আল্পনা ভট্টাচার্য্যে নেতৃত্বে ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল এ বাস দুটি (ডব্লিউবি-২৩-ডি-৩৩১৩ ও ডব্লিউবি-২৩-ডি-৩৩১৪) নিয়ে বেনাপোল নোম্যান্সল্যান্ডে এসে পৌঁছালে সেখানে তাদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন যশোর জেলা প্রশাসনের পক্ষে শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুস সালাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (ট্রাফিক) নিতাই চন্দ্র সেন, উপ-পরিচালক আব্দুল জলিল, বেনাপোল কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার মারুফুর রহমান, বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ওসি ইকবাল হোসেন, মোমিনুল ইসলাম, বেনাপোল পোর্ট থানার ওসি অপূর্ব হাসান প্রমুখ। পরে কড়া পুলিশ প্রহরায় তারা খুলনার উদ্দেশ্যে বেনাপোল ত্যাগ করেন। এর আগে পাসপোর্টের আনুষ্ঠানিকতা শেষে বেনাপোল পাটবাড়ি সনাতন ধর্মবালম্বিদের হরিদাস ঠাকুরের মন্দির ভারতের প্রতিনিধি দল পরিদর্শন করেন। পথে যশোর সার্কিট হাউজে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে চা চক্রে মিলিত হন বাসের যাত্রীরা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুস ছালাম জানান, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পরিবহন সচিব আলাপন বন্দোপাধ্যয়ের নেতৃত্বে মৈত্রী বাস দুটিতে কর্মকর্তাসহ ১২ ভারতীয় নাগরিক রয়েছেন। বাসটি যাতে ভালোভাবে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে সেজন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় খুলনা সার্কিট হাউজে বাসের যাত্রী এবং ভারতীয় প্রতিনিধি দলকে সংবর্ধনা দেয়া হবে। খুলনার জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এদিকে, আগামী বছরের প্রথম থেকে খুলনা-কলকাতা ট্রেন চলাচলও শুরু হবে। দু’ দেশের মধ্যে নতুন করে ট্রেন ও বাস চলাচল শুরুর প্রক্রিয়ায় আশান্বিত হয়েছে দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ। এ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে খুলনাঞ্চলের আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে ব্যাপক সম্প্রসারণ ঘটবে। এর আগে ১৮৬৪ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি প্রথম খুলনা-বেনাপোল-কলকাতা রুট চালু হয়।
খুলনার জেলা প্রসাশক নাজমুল আহসান জানান, কলকাতা থেকে ভারতীয় বাসটি খুলনায় এসে পৌঁছানোর পর খুলনা সার্কিট হাউজে অভ্যর্থনা জানানো হয়। এ বাসটিতে ভারতীয় একটি প্রতিনিধি দল রয়েছে। এ সময় বাংলাদেশ সড়ক ও পরিবহণ মন্ত্রণালয়ে যুগ্ম সচিব চন্দন কুমার দে খুলনায় আসবেন। বাসটি একদিন থাকার পর বুধবার সকালে ভারতের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে।
সূত্রমতে, ঢাকা-কলকাতা, কলকাতা-আগরতলার পর এবার খুলনা-কলকাতা রুটেও বাস সার্ভিস চালু হলো। খুলনা ও কলকাতায় উভয় দেশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার পরে বাণিজ্যিকভাবে বাস সার্ভিস চালু হবে। এটি হবে দুই-দেশের মধ্যে তৃতীয় সরাসরি বাস সার্ভিস। সার্কভুক্ত দেশসমূহের মধ্যে সরাসরি বাস সার্ভিস চালুর ক্ষেত্রে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ-ভুটান-ইন্ডিয়া-নেপাল মোটর ভেহিকেলস এগ্রিমেন্ট (বিবিআইএন-এমভিএ) এর আওতায় এই বাস সার্ভিস চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়। সংশ্লিষ্ট আরও সূত্র জানায়, খুলনা-কলকাতা ভায়া যশোর রুটে সরাসরি বাস সার্ভিস চালু হলে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন, বাগেরহাটের খানজাহান আলী মাজারসহ খুলনার বিভিন্ন এলাকায় বিদেশি পর্যটকদের আগমন বৃদ্ধি পাবে। পর্যটন শিল্পের বিকাশ হবে। খুলনার সঙ্গে ভারতের ব্যবসা-বাণিজ্যের আরও বিকাশ ঘটবে। এছাড়া খুলনা অঞ্চল থেকে চিকিৎসা সেবার জন্য ভারত ভ্রমণকারী পাসপোর্টযাত্রীদের দুর্ভোগ অনেকাংশে লাঘব হবে। দুই-দেশের মধ্যে রাজনৈতিক, আর্থসামাজিক এবং ভূ-রাজনৈতিক ক্ষেত্রে দুই দেশের নাগরিকদের যাতায়াত নির্বিঘেœ এবং সহজ হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top