সকল মেনু

ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদে এএসপি!

Fake-asp-20130718223627আছাদুজ্জামান, হটনিউজটোয়েন্টিফোরবিডি.কম,ঢাকা: সরকারি চাকরির বিধি লঙ্ঘন করে ভুয়া সনদ ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে সহকারী পুলিশ কমিশনারের (এএসপি) চাকরি বাগিয়েছেন সাতক্ষীরা সরকারি মহিলা কলেজের প্রভাষক শাহিনুর রহমান।

বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনে (পিএসসি)জমা দেওয়া তার মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সনদ ভুয়া বলে প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ।

ঘটনা তদন্তে সাতক্ষীরা সদর সাকের্লের সহকারী পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফার দপ্তরে ৬ জন মুক্তিযোদ্ধা শাহিনুর রহমানের ভুয়া সনদের বিষয়ে লিখিত সাক্ষী দিয়েছেন।

এমন পরিস্থিতি অভিযুক্ত শাহীনুর ঢাকার প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ ও মুক্তিযোদ্ধ‍া নেতাদের সাত লাখ টাকা দিয়ে তদন্ত রিপোর্ট বদলে নিতে দেনদরবার চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সাতক্ষীরার প্রভাবশালী এক মুক্তিযোদ্ধ‍া ও আওয়ামী লীগ নেতা শাহিনুরের এই ভুয়া সনদ তৈরিতে সহায়তা করেছে বলেও অনুসন্ধানে জানা গেছে।

আর ওই ভুয়া সনদ পিএসসিতে দিয়েই বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি বাগিয়েছেন শাহিনুর।

তার ভুয়া সনদ প্রসঙ্গে পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক কেবিনেট সচিব ড. সাদত হোসেন হটনিউজকে বলেন, কোন সরকারি চাকরিতে থাকা অবস্থায় বয়স থাকলে যে কেউ অন্য কোন সরকারি চাকরির জন্য পরীক্ষা দিতে পারেন। তবে কোন পরিস্থিতিতেই তথ্য গোপন করা ঠিক নয়। মিথ্যা তথ্য দিয়ে কেউ চাকরির চেষ্টা করলে তা সরকারি চাকরি বিধিমালার সুস্পষ্ট লংঘন হিসেবে বিবেচিত হবে।

শাহিনুর মিথ্যা তথ্য দিয়ে সরকারি চাকরির বিধিমালা লঙ্ঘন করেছেন বলেও মন্তব্য করেন পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যান।

প্রসঙ্গত, সাতক্ষীরা সরকারি মহিলা কলেজে ইসলামের ইতিহাস বিভাগে বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে প্রভাষকের চাকরি করতেন শাহিনুর রহমান। তিনি সাতক্ষীরার তালা উপজেলার মুড়াকলিয়া গ্রামের কৃষক মোবারক আলী সরদারের ছেলে।

৩১তম বিসিএস-এর মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সহকারী পুলিশ সুপার পদে চাকরি পাওয়ার পর তার ভুয়া সনদের বিষয়টি বেরিয়ে পড়ে।

গত জুনের প্রথম সপ্তাহে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয় সাতক্ষীরার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার ( সদর সার্কেল) গোলাম মোস্তফাকে।

১৬ জুন ১৩২৪ নম্বর স্মারকে তালা থানার প্রাক্তণ ইউনিয়ন কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা শেখ আয়ুব আলী, প্রাক্তণ থানা কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা জিএম সবুর, যুদ্ধকালীন কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সোবহান, মুক্তিযোদ্ধা সন্তোষ কুমার, সাবেক ডেপুটি কমান্ডার মইজুদ্দীন ও যুদ্ধকালীন কমান্ডার এরফান আলী সার্কেল অফিসে উপস্থিত হয়ে শাহিনুর রহমানের ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদের বিষয়টি লিখিত সাক্ষ্যে নিশ্চিত করেন।

তারা তাদের লিখিত বক্তব্যে অত্যন্ত ক্ষোভের সঙ্গে জানান, শাহিনুরের পিতা মোবারক আলী এক জন সাধারণ কৃষক। যাকে আমরা ভালভাবে জানি ও চিনি। মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিধান অনুযায়ী কেবল মুক্তিবার্তা/গেজেটভুক্ত ব্যক্তিই মুক্তিযোদ্ধা সনদ পাওয়ার অধিকার রাখেন। কিন্তু প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় কোথাও মোবারক আলীর নাম নেই।

সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোল্লাহ জাহাঙ্গীর হোসেন হটনিউজকে বলেন,উক্ত বিষয়টি আমার যোগদান করার আগের ঘটনা,তবে বিষয়টি সত্য এবং আমার একতিয়ারাধীন। পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি, প্রাথমিক তদন্তে সনদের বিষয়টি ভুয়া বলে প্রমাণিত হয়েছে। আমরা শিগগিরই একটি তদন্ত প্রতিবেদন পুলিশ সদর দপ্তরে পাঠাবো।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top