সকল মেনু

বাংলার ইতিহাস বঙ্গবন্ধুই – শামীম হক

4284_14068070_674197672737124_3217332358374719763_nবঙ্গবন্ধু-ই বাংলার ইতিহাস। বঙ্গবন্ধুকে তুলে ধরা মানেই বাংলার ইতিহাস তুলে ধরা। ঐ যে বঙ্গবন্ধুর ছবিটা আজো জীবন্ত হয়ে আছে, এ ছবি কথা বলে,বঙ্গবন্ধুর এ ছবিটা যদি সামনে থাকে মনে পড়ে তাকে,তার সাথে বাংলার ইতিহাসকে। আজকে সরকারী অফিস আদালত গুলোতে বঙ্গবন্ধুর ছবি আছে,শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বঙ্গবন্ধুর ছবি আছে কিন্ত  বেশীর ভাগ বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর ছবি নেই। আমার মনে হয় বেসরকারী প্রতিষ্ঠানসহ ঘরে ঘরে বঙ্গবন্ধুর ছবি রাখার উদ্যোগ নেয়া দরকার,প্রয়োজনে আইন হতে পারে এ জন্য। একজন শিশু যখন বঙ্গবন্ধুর ছবিটা দেখে দেখে বড় হবে তার ভেতরে একটা আগ্রহ তৈরি হবে,শিশুটি জানতে চাইবে ছবিটা কার? ছবির মানুষটি কে? শিশুটি ছবি সম্পর্কে জানার সাথে সে জানতে পারবে আমাদের প্রকৃত ইতিহাস।
এ ভাবে শিশুরা আমাদের প্রকৃত ইতিহাস জেনে বড় হবে তখন কেউ তাকে বিকৃত ইতিহাস শেখাতে পারবে না। আমাদের নতুন প্রজন্ম যাতে দেশের প্রকৃত ইতিহাস শিখতে না পারে সে জন্য দেখেছি বঙ্গবন্ধু হত্যার পর থেকে খুনীরা বঙ্গবন্ধুকে আড়াল করে রেখেছে,অন্ধকারে রেখেছে বঙ্গবন্ধুর ছবিটাকে। খুনীদের ,ষড়যন্ত্রকারীদের ভয় ওই ছবিটা কারণ ওই ছবিটা বাংলার ইতিহাসের কথা বলে,বাঙ্গালীর প্রকৃত ইতিহাসের কথা বলে।
স্বদেশজমিনের সঙ্গে আলাপকালে কথাগুলো বলছিলেন সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীম হক। তার সঙ্গে কথা বলেছেন, আমাদের ইউরোপ প্রতিনিধি নেহাল জামান। ফরিদপুরের সন্তান সাবেক ছাত্রনেতা শামীম হক বঙ্গবন্ধুর আদর্শের এক খাটি সৈনিক। পচাত্তর সালে জাতিরজনক বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর জিয়াউর রহমানের রোষানলে যখন রাজনীতি ছিন্নভিন্ন সে সময়ে ফরিদপুরে ছাত্রলীগ গড়ে তোলার কাজে নিজেকে নিয়োজিত করেন তিনি। স্কুল কলেজে ঘুরে ঘুরে দাড়করান ছাত্রলীগ। সে সময়ে একাধিক হামলা-মামলার শিকার হন। এখন তিনি সর্ব ইউরোপ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। গোটা ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ঘুরে ঘুরে আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করার কাজ করছেন। রাজনীতিকে তিনি বানিজ্য বেসাতি করেন না। নিজের উপার্জিত অর্থ দিয়ে ফরিদপুরে একটি অসাম্প্রদায়িক এতিমখানা করেছেন। সেখানে পড়ার সুযোগ পাচ্ছে সকল ধর্মের অসহায় ছেলে মেয়েরা। প্রতি বছর বিদেশ থেকে চিকিৎসক এনে বিনামুল্যে প্লাস্টিক সার্জারী ক্যম্প করেন, বঙ্গমাতা ফজিলাতুননেছার নামে বিনামুল্যে চক্ষু শিবির করেন। কোন নির্বাচন করার বা সরকারী পদলাভ তার অভিপ্রায়ে নেই,তার একমাত্র ধ্যানজ্ঞান বঙ্গবন্ধু আর শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগকেই নিজের শেষ ঠিকানা মনে করেন এই নেতা।
শামীম হক বলেন, এই যে দেখুন বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষন। যদি এটা বিশ্লেষন করি এ ভাষনে কি বলেননি তিনি, সাতই মার্চের বক্তৃতার পর কি আর স্বাধীনতার ঘোষনার কিছু বাকী থাকে? থাকে না। তিনি স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম/এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। কেবল তাই নয় তিনি ভাষনে বলেছেন, তোমাদের যার যা কিছু আছে ..তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে। মানে তিনি বলেই দিলেন,এটাকে তো বলা যায় সরাসরি যুদ্ধের ঘোষনা। আরো স্পষ্ট করে বললেন,শত্রু বাহিনী ঢুকে পড়েছে। আরো বলেলেন,আমি যদি হুকুম দেবার নাও পারি-তার মানে নেতার দুর্র্দিশতাটা দেখুন,তিনি আচ করতে পেরেছিলেন হয়তো পাকিস্তানীরা তাকে গ্রেপ্তার করতে পারে,তাকে হত্যা করা হতে পারে । তাকে মেরে ফেলা হলেও যাতে বাংলার স্বাধীনতার সংগ্রাম বন্ধ না হয় সে জন্য তিনি আগেভাগেই দেশবাসীকে বলে রাখলেন,আমি যদি হুমুক দেবার নাও পারি। দেখুন সেটাই ঘটেছিলো। তারপরও ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানীরা এ্যাটাক করার পর বঙ্গবন্ধু আনুষ্ঠানিক ভাবে স্বাধীনতার ঘোষনা দিয়ে গেলেন।
২৫ মার্চের সে রাতে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ছিলেন,পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ইস্টানকমান্ডের অধিনায়ক জেনারেল নেয়াজীর গনসংযোগ কজর্মকতা সিদ্দিক সালিক,তিনি তার বই এ উইটনেস টু সারেন্ডার এ লিখেছেন ২৫ মার্চ রাত ১২টার সামান্য পরে আমাদের ওয়বে ভেসে আসলো শেখ মুজিব  ইপিআর মানে বর্তমানে যার নাম বর্ডার গার্ড এর ওয়ারলেস যোগে স্বাধীনতার ঘোষনা পাঠাচ্ছেন। দেখুন এরপরও কোন রাজনৈতিক দুবিত্ত যদি দাবী করে জিয়া স্বাধীনতার ঘোষক সেটাকে কি বলা যাবে। আজ কিন্ত একটা বিষয় খুব সত্য বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের ভাষন শুনতে শুনতে সাধারণ মানুষের মনে গেথে গেছে এ ভাষনে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষনা বাকী রাখেনি এবং জিয়ার ঘোষনার দাবী কিন্ত সাধানুষের কাছে কোন ঠাই পাচ্ছে না। আসলে মিথ্যা তো বেশীদিন চালানো যায় না।
একটি ঘটনার কথা বলি দশ টাকার নোটে বঙ্গবন্ধুর ছবি অনেকে এর বিরোধীতা করে কিন্ত একটি ঘটনা দেখে আমার কাছে মনে হয়েছে এটা সঠিক সিন্ধান্ত । আমি একটি বাসায় গিয়েছিলাম। সে বাসার ছোট্ট একটি ছেলে বাবার কাছে এসে জানতে চায় এটা কার ছবি ,বাবা জবাব দেয় এটা বঙ্গবন্ধুর ছবি। তার আবার প্রশ্ন উনি কে ,বাবা বলেন, উনি আমাদের দেশ স্বাধীন করেছেন। এখন ছেলেটির সখ ওই ছবিওয়ালা টাকা জমানো এবং ছবির বঙ্গবন্ধুকে সে ডাকে নানু বলে। বাসায় কোন লোক আসলে টাকার ছবিটা দেখিয়ে বলে ,উনি বঙ্গবন্ধু ,আমাদের দেশ স্বাধীন করেছে,তাকে সালাম দাও। সে কারনে বলছিলাম বঙ্গবন্ধুর ছবিটা বাংলার ঘরে ঘরে থাকলে বাঙ্গালী জাতির প্রকৃত ইতিহাস নতুন প্রজন্ম আপন গতিতে খুঁেজ নেবে। কারন এ দেশটার স্বাধীনতা শব্দটি উচ্চারন থেকে স্বাধীনতা অর্জন পর্যন্ত ইতিহাসের সবখানে বঙ্গবন্ধু। মাঝে তো অন্য কারো নেতৃত্ব নেই। অন্যরা আছেন বঙ্গবন্ধুর সহযোগী। জাতির সঠিক ইতিহাস বেরিয়ে আসলে সহযোগীরাও ইতিহাসের সঠিক জায়গায় থাকবেন। সে জন্য আমার মনে হয় এবং সরকারের কাছেও আমার দাবী বাংলার প্রতিটি ঘরে ঘরে জাতির জনকের ছবি থাকার ব্যবস্থা করা উচিত। প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে এ্যাসেম্বলীর সময়ে প্রতিদিন দশ মিনিট সময় হলেও বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করার উদ্যোগ নেয়া উচিত। সেই সাতচল্লিশ থেকে যদি বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস বলা হয় তার মধ্যদিয়ে বেরিয়ে আসবে গোটা জাতি ও আমাদের মুক্তিযুদ্ধ এমনকি যুদ্ধাপরাধীদের ভ’মিকা। প্রকাশিত হবে প্রকৃত ইতিহাস।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top