সকল মেনু

চাঁদপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু: আওয়ামী লীগ নেতাদের তদ্বির

unnamed শাহ মোহাম্মদ মাকসুদুল আলম, চাঁদপুর: চাঁদপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এর অংশ হিসেবে সদস্য পদের জন্য ১৫টি ওয়ার্ড চূড়ান্ত করেছে চাঁদপুর জেলা প্রশাসন। অনানুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তুতি শুরু করেছে জেলা নির্বাচন অফিসও। উপ-মন্ত্রীর মর্যাদাসম্পন্ন চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন পেতে মরিয়া হয়ে তদ্বিরে নেমেছেন সরকার দলীয় অনেক নেতা। মাঠ জরিপে ব্যস্ত দলীয় ও সরকারি বিভিন্ন সংস্থাগুলো। তবে চুপচাপ বিএনপিসহ শরীক দলগুলো।
বিভিন্ন সূত্রের খবর অনুযায়ী, আগামী ডিসেম্বর অথবা জানুয়ারি মাসে সারাদেশে জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। জেলা পরিষদের পুরনো আইন অনুযায়ী ২১ সদস্যবিশিষ্ট জেলা পরিষদে উপ-মন্ত্রীর মর্যাদায় ১জন চেয়ারম্যান, ১৫জন সাধারণ সদস্য ও ৫জন সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্য নির্বাচিত হবেন। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র, সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনের মহিলা কাউন্সিলর, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সাধারণ মেম্বার ও সংরক্ষিত আসনের মহিলা মেম্বাররা জেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটার হবেন। তবে আইন সংশোধন হলে উপজেলা পরিষদের সাধারণ ভাইস চেয়ারম্যান ও সংরক্ষিত আসনের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানরাও ভোটার হতে পারেন।
সে হিসেবে চাঁদপুর জেলার ৮টি উপজেলা, ৭টি পৌরসভা ও ৮৯টি ইউনিয়ন মিলিয়ে মোট ভোটার হবে ১২৬৪জন। উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও সংরক্ষিত আসনের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানরা আইন সংশোধনের মাধ্যমে ভোটার তালিকায় সংযুক্ত হলে জেলায় মোট ভোটার হবেন ১২৮০জন। এদের বাইরে জেলার যে কোনো সাধারণ ভোটার জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন।
চেয়ারম্যান পদে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের যেসব নেতার নাম শোনা যাচ্ছে তাদের মধ্যে রয়েছেন, চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ¦ আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল, চাঁদপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডার যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা এম এ ওয়াদুদ, আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য বাবু সুজিত রায় নন্দী, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি আলহাজ¦ ওচমান গনি পাটওয়ারী ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপির ভাই ডা. জে আর ওয়াদুদ টিপু। তবে চাঁদপুর জেলা পরিষদের বর্তমান প্রশাসক লে. কর্নেল (অব.) আবু ওসমান চৌধুরী শাররীক অসুস্থতার কারণে নির্বাচন না করার সম্ভবনাই বেশী রয়েছে বলে জানাযায়।
জেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও সংরক্ষিত আসনের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদ থাকা-না থাকার বিষয়টি চূড়ান্ত না হওয়ায় এখনো এই পদে সম্ভাব্য প্রার্থীদের কোনো তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। তবে জেলা পরিষদের সদস্য পদে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক সরকার দলীয় নেতা-কর্মী প্রার্থী হতে আগ্রহী। তারা এখন স্থানীয় এমপি এবং উপজেলা, জেলা ও কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দের কাছে ধর্ণা দেয়া শুরু করেছেন।
জেলা পরিষদ নির্বাচনের ব্যাপারে চাঁদপুর জেলা বিএনপির একাধিক নেতার সাথে কথা বললে তারা কেউ আনুষ্ঠানিক বক্তব্য প্রদানে রাজি হননি। এদের কয়েকজন বলেন, নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নেবেন চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। তবে আমাদের ধারণা, এই নির্বাচনে বিএনপি বা শরীক দলগুলো অংশগ্রহণ করবে না। অংশ নেয়ার যৌক্তিকতাও নেই। কারণ, জেলা পরিষদ নির্বাচনে যারা ভোটার তাদের সিংহভাগ একতরফা ও ভোটডাকাতির নির্বাচনে বিজয়ী। এখানে জনগণ তথা বিএনপির কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই বললেই চলে। এই নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিয়ে কোনো লাভ হবে না। বরং নির্বাচনকে বৈধতা দেয়া হবে।
চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল বলেন, জেলা পরিষদ নির্বাচনের জন্য ব্যক্তিগত ও দলীয়ভাবে আমাদের প্রস্তুতি চলছে। দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা যে সিদ্ধান্ত দেবেন চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিটি নেতা-কর্মী তা মেনে চলবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা নির্বাচনে জয়ী হবেন এবং জেলার ব্যাপক উন্নয়ন করতে সক্ষম হবেন।
চাঁদপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ আতাউর রহমান বলেন, জেলা পরিষদ নির্বাচনের ব্যাপারে জেলা নির্বাচন অফিসকে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো কিছু জানানো হয়নি। তবে সম্ভাব্য নির্বাচনের ব্যাপারে আমরা খোঁজ-খবর নিচ্ছি। আমাদের প্রস্তুতিও রয়েছে। তিনি জানান, চাঁদপুর জেলার বাসিন্দা ও জেলার সাধারণ ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে এমন যে কোনো ব্যক্তি জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন।
চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান জানান, জেলা পরিষদ নির্বাচনের জন্য সাধারণ সদস্যদের জন্য ১৫টি সাধারণ ওয়ার্ড ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের ৫টি ওয়ার্ডের সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে।
চাঁদপুর জেলা প্রশাসক মোঃ আব্দুস সবুর মন্ডল জানান, জেলা পরিষদ নির্বাচনের জন্য সদস্যদের ওয়ার্ডের সীমা নির্ধারণ করে গত ১৮ আগস্ট গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। ওয়ার্ড বিভক্তিকরণে কোনো আপত্তি কিংবা পরামর্শ থাকলে তা গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে জেলা প্রশাসক ও সীমা নির্ধারণ কর্মকর্তা, চাঁদপুর বরাবর লিখিতভাবে দাখিল করতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top