সকল মেনু

ছাতকে প্রথম স্ত্রী অনুমতি ছাড়াই লন্ডনীদের বহু বিয়ে

unnamed চান মিয়া, ছাতক,সুনামগঞ্জ: সুনামগঞ্জের ছাতকে একের অধিক বিয়ে করতে প্রথম স্ত্রীর লিখিত অনুমতির বিষয়টি তোয়াক্কা না করে একের পর এক বিয়ে করে যাচ্ছে লন্ডন প্রবাসীরা। একটি পেশাদার দালালচক্রের মাধ্যমে স্বপ্নের দেশ লন্ডন নেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে এসব বিয়ে বাণিজ্য চলছে। ছাতক থানায় গত ২৫জুলাই কালারুকা ইউপির হাসনাবাদ গ্রামের খালেদ মিয়ার লিখিত অভিযোগে জানা যায়, উপজেলার দোলারবাজার ইউনিয়নের কুর্শী গ্রামের মৃত আলতাব আলীর পুত্র আবু আছাদ চৌধুরী মাহবুব ওরফে সমশেদ আলী বিভিন্ন নামে নিজের পরিচিতি দিয়ে সরকারি আইনের তোয়াক্কা না করে কাবিননামার মাধ্যমে একের পর এক বিয়ে করে যাচ্ছেন। সে প্রথম স্ত্রীর লিখিত অনুমতি ছাড়াই প্রতারক আব্দুল্লার মাধ্যমে এসব বিয়ে করে এবং তার মাধ্যমেই এদেরকে ডিভোর্স দেয়। আব্দুল্লা লন্ডন প্রবাসীদের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত কুর্শী মদিনাগঞ্জ মাদরাসার সূপার বলে জানা গেছে। তার পিতা আলতাব লন্ডনী খেলুয়া নাও, ষাঁড়, ঘোড়াও বহু বিয়ে নিয়েই ব্যস্থ সময় কাটাতেন। আব্দুল্লার মাধ্যমে একটি পেশাদার দালালচক্র মাহবুবকে কাবিননামায় বিয়ের ব্যবস্থা করে এবং ডিভোর্সের সময় তারা মোটা অংকের আর্থিক সুবিধা নেয়। বিয়ের ৫/৬মাসের মধ্যে নতুন স্ত্রীর উপর কৌশলে অনৈতিক কর্মকান্ডের অভিযোগ এনে ডিভোর্স দেয়া হয়। ডিভোর্স ধর্মীয় দৃষ্টিতে গুরুতর অপরাধ হলেও আব্দুল্লা নিজেকে আলেম দাবি করে মাহবুবের অধিকাংশ স্ত্রীকে ডিভোর্স দিয়ে যাচ্ছে। জানা গেছে, মাহবুব-আব্দুল্লার অপকর্মে সহযোগিতা না করায় ৬মাসের আগের লিখিত ডিভোর্সী মঈনপুর গ্রামের শুকুর আলীর মেয়ে শাপলা বেগমকে স্ত্রী পরিচয়ে ছাতক থানার মামলা (নং- ২০,তাং- ২১.০৬.২০১৬ইং) দিয়ে তার ভগ্নিপতি হাসনাবাদ গ্রামের নোয়াব আলীর পুত্র খালেদ মিয়াকে আসামী করেছে। জানা গেছে, মাহবুবের ১ম স্ত্রী জাহানারা বেগম ৬সন্তানসহ লন্ডনে রয়েছে। সে লন্ডনে যাবার পর আব্দুল্লা নতুন স্ত্রীদের ভরন-পোষন করতে গিয়ে অনৈতিক প্রস্তাব দেয়। এ অভিযোগে আব্দুল্লার বিরুদ্ধে মাছুমা বেগম সিলেট বিমানবন্দর থানায় সাধারণ ডাইরী নং-১০৭, তাং-৩.৩.২০১৬ইং করেন। সে দক্ষিণ সুনামগঞ্জের হাসকুড়ি-শিবপুর গ্রামের তেরাব আলীর পুত্র। গত ২০১৫সালের ১২নভেম্বর একই সাথে চার স্ত্রীর নামে ছাতক পৌরসভা মেয়র বরাবরে ডিভোর্স লেটার দেয়া হয়। এর মধ্যে মাছুমা, আসমা আক্তার লিমা, সেলিনা বেগমও ফাতিমা বেগমমের ডিভোর্স লেটারে স্বামীর স্থলে স্বাক্ষর দেয় প্রতারক আব্দুল্লা। তার ২য় বিয়ে দক্ষিণ কুর্শী গ্রামের সুন্দর আলীর মেয়ে শিল্পা বেগম, ৩য় বিয়ে চরমহল্লা ইউনিয়নের কামরাঙ্গি গ্রামের মাহমুদ আলীর মেয়ে ১সন্তানের জননী মাছুমা বেগম, ৪র্থ বিয়ে ছাতক পৌরসভার বৌলা গ্রামের আজাদ মিয়ার মেয়ে আসমা আক্তার লিমা, ৫ম বিয়ে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার খালপার গ্রামের মকবুল আলীর মেয়ে ফাতেমা বেগম, ৬ষ্ট বিয়ে জালালাবাদ থানার রাজারগাঁও গ্রামের মৃত সমর আলীর মেয়ে সেলিনা বেগম, ৭ম বিয়ে মঈনপুর গ্রামের শুকুর আলীর মেয়ে শাপলা বেগম, ৮ম বিয়ে হবিগঞ্জের বানিয়াচঙ্গ থানার মাজের মহল্লা গ্রামের আরজু মিয়ার মেয়ে সিপন বেগম। এছাড়া সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারসহ বিভিন্ন জেলায় হালিমা বেগম, সাহানা বেগম, আকলিমা আক্তার, মরিয়ম বেগম, জোসনা বেগম, লিবিয়া আক্তার, মিনা আক্তার, লাইলী আক্তারসহ প্রায় অর্ধশতাধিক বিয়ে রয়েছে। জানা গেছে, মাহবুব নতুন বিয়ের কয়েকমাসের মধ্যেই সংসার ভেঙ্গে সরকারি আইন না মেনেই লিখিত কাবিন নামায় আবারো বিয়ের পিড়িতে বসেন। আগের স্ত্রী মামলা করলে কিছু টাকা দিয়ে মামলা নিষ্পত্তিসহ তাকে ডিভোর্স দেয়া হয়। কিন্তু ডিভোর্সের অভিযোগে এসব মেয়েদের বছরের পর বছর গেলেও বিয়ে না হওয়ায় পরিবারের লোকজনকে তার ঘানি টানতে হচ্ছে। প্রথম স্ত্রীর লিখিত অনুমতি না নিয়ে লিখিত কাবিননামায় একের পর এক সরকারি আইন লঙ্ঘন করে বিয়ে করায় মাহবুব-আব্দুল্লার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়ার দাবি এলাকাবাসীর।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top