সকল মেনু

জলাবদ্ধতার কবলে পড়ে যশোরে ১৬৮ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান ব্যাহত

unnamedযশোর প্রতিনিধি: টানা বর্ষণের কারণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় যশোরের অন্তত ১৬৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠ ও শ্রেণিকক্ষে পানি প্রবেশ করায় পাঠদানের উপযোগী পরিবেশ নেই।
শিক্ষকরা বলছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি প্রবেশ করায় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ক্লাসে যেতে নিরুৎসাহিত করছেন অভিভাবকরা। এজন্য ক্লাসে ছেলেমেয়েদের উপস্থিতি কম। তবুও সমাপনী ও এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খোলা রাখা হয়েছে।
শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, যশোরের মণিরামপুর, কেশবপুর ও অভয়নগর উপজেলার ১৬৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকেছে। এর মধ্যে কেশবপুর উপজেলার প্রাথমিক পর্যায়ের ৫৭টি ও মাধ্যমিক পর্যায়ের ১৬টি স্কুল-কলেজ ও মণিরামপুরে প্রাথমিক পর্যায়ের ২৯টি মাধ্যমিক পর্যায়ের ৪৪টি স্কুল ও মাদ্রাসা এবং অভয়নগর উপজেলার প্রাথমিক পর্যায়ের ১৪টি ও মাধ্যমিক পর্যায়ের ৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মাঠে ও শ্রেণিকক্ষে পানি থাকায় পাঠদানের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি প্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকা জেলা শিক্ষা অফিস থেকে জেলা প্রশাসক, শিক্ষা অধিদফতর ও মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মকর্তারা।

unnamed
অভয়নগর উপজেলার সিংগাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এসএম ফরিদ উদ্দিন আহমেদ জানান, তার গ্রামে বুইকার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। টানা বর্ষণের ফলে মাঠে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ছেলেমেয়েরা ক্লাসে আসতে পারে না।
কেশবপুর উপজেলার হাবাসপোল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কার্তিক চন্দ্র সাহা বলেন, স্কুল মাঠে হাটুজল। ছেলেমেয়েরা স্কুলে আসতে পারছে না। অভিভাবকরাও ছেলেমেয়েদের স্কুলে আসতে নিরুৎসাহিত করছেন। পাঠদানের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে স্কুল। তারপরও পঞ্চম শ্রেণির সমাপনীর প্রস্তুতির ক্লাস নেওয়া হচ্ছে নিয়মিত।
কেশবপুরের মূলগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক তাপস রায় বলেন, স্কুল মাঠে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। জলাবদ্ধ পরিবারের ছেলেমেয়েরা নিয়মিত স্কুলে আসছে না। এলাকার জলাবদ্ধ ৫/৭টি পরিবার স্কুল ঘরে আশ্রয় নিয়েছে। এতে স্কুলের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

unnamed
মণিরামপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আকরাম হোসেন খান বলেন, যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষে পানি উঠেছে সেখানে ক্লাস হচ্ছে না। ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক তারা সাময়িক ক্লাস বন্ধ করে দিয়েছে। পানি নেমে গেলেই সেখানে ক্লাস শুরু হবে।

যশোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার তাপস কুমার অধিকারী বলেন, জলাবদ্ধতার কারণে অনেক প্রতিষ্ঠানে পাঠাদানের উপযোগী পরিবেশ নেই। সেই প্রতিষ্ঠানগুলোতে পাঠদান হচ্ছে না। তবে দাপ্তরিক কার্যক্রম চলছে।  জলাবদ্ধতার কারণে এখনও কোনো প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়নি।
তিনি আরো বলেন, জলাবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ উল্লেখ করে অধিদফতরে তালিকা পাঠিয়েছি।
যশোরের জেলা শিক্ষা অফিসার আমিনুল ইসলাম টুকু বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়নি। তবে জলাবদ্ধতার কারণে স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, পানিবন্দি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকা করা হয়েছে। সেই তালিকা জেলা প্রশাসক, জনপ্রশাসন মন্ত্রী ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top