সকল মেনু

‘পাখি’কে নিয়ে ভুয়া খবর, জয়া ও সাবার প্রতিক্রিয়া

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় টিভি অভিনেত্রী মধুমিতা চক্রবর্তী। ‘বোঝে না সে বোঝে না’ ধারাবাহিকের ‘পাখি’ চরিত্রে অভিনয় করেই ভারত ও বাংলাদেশে জনপ্রিয়তা পান তিনি। সম্প্রতি তিনি অভিযোগ করেছেন, বাংলাদেশের কয়েকটি অনলাইন পোর্টাল তাঁকে নিয়ে ভুয়া খবর ও তাঁর বিকৃত ছবি প্রকাশ করেছে।

এ নিয়ে গত শুক্রবার, কলকাতার লালবাজারে কলকাতা পুলিশের প্রধান কার্যালয়ে গিয়ে বাংলাদেশের তিনটি অনলাইন পত্রিকার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগও করেছেন মধুমিতা। তবে সাংবাদিকদের সামনে অনলাইন পত্রিকা তিনটির নাম প্রকাশ করেননি তিনি।

মধুমিতার দাবি, গত সপ্তাহে কয়েকটি বাংলাদেশি ওয়েবসাইট তাঁর সম্পর্কে ভুয়া দেহব্যবসার খবর প্রকাশ করে। খবরের সঙ্গে ওয়েবসাইটগুলোতে তাঁর ছবি বিকৃত করে প্রকাশ করা হয়েছে বলে জানান মধুমিতা। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়াও ব্যক্ত করেছেন তিনি।

অনলাইনে এ রকম ভুয়া খবর ও বিকৃত ছবি প্রকাশের প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশের দুই জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান ও সোহানা সাবা। তাঁরা দুজনই বেশকিছু ভারতীয় চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। কাজের সূত্রে প্রায়ই কলকাতায় যাওয়া আসা করতে হয় জয়া আহসান ও সোহানা সাবাকে। ভারতীয় দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়ার সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন তাঁরা।

মধুমিতা চক্রবর্তীর অভিযোগ সম্পর্কে টাইমস অব ইন্ডিয়াকে জয়া বলেন, ‘এটা খুবই দুঃখজনক। নারীরা সবসময়ই এ ধরনের হেনস্তার শিকার হন। নারীদের নিয়ে এমন সব মন্তব্য করা হয় মাঝে মাঝে যেটা শালীনতার সীমা ছাড়িয়ে যায়।’

জয়া নিজেও অনলাইনে এ ধরনের হেনস্তার স্বীকার হয়েছেন দাবি করে বলেন, “যখন আমার ‘রাজকাহিনী’ ছবিটি মুক্তি পেল তখন আমাকে নিয়েও নানা ধরনের কথা বলা হয়েছে। ছবিতে আমি একজন যৌনকর্মীর ভূমিকায় অভিনয় করেছি। আমি ছবিটির চিত্রনাট্য লিখিনি বা পরিচালনাও করিনি। আমি শুধু আমার অংশের দৃশ্যগুলোতে পরিচালকের নিদের্শনা অনুযায়ী অভিনয় করেছি। তারপরও আমাকে নানারকম বাজে মন্তব্য শুনতে হয়েছে। যারা এ ধরনের মন্তব্য করেন তাঁরা বুঝতে পারেন না যাকে নিয়ে বলা হচ্ছে তার ওপর সেটা কতটা বাজেভাবে প্রভাব ফেলে।”

টাইমস অব ইন্ডিয়াকে জয়া আরো বলেন, ‘অভিনেত্রীদের জন্য এ ধরনের পরিস্থিতি সামাল দেওয়া আরো কঠিন হয়ে পড়ে। আমার মনে আছে, একবার আমার সম্পর্কে বলা হয়েছিল আমি একজনের সঙ্গে লিভ-টুগেদার করছি। যেটা ছিল পুরোপুরি মিথ্যা।’

জয়া জানান, এ ধরনের ভুয়া খবরের বিরুদ্ধে তিনি নিশ্চুপ থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, “এ ধরনের ভুয়া খবর যেসব নিউজ পোর্টাল ছড়ায়, সেগুলো খুবই ছোট ওয়েবসাইট এবং ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা। নিজের বাসায় বসেই অনেকে এ রকম ওয়েবসাইট চালায়। এসব সাইটের মূল উদ্দেশ্যেই থাকে হিট বাড়ানো। ‘পাখি’ চরিত্রটি বাংলাদেশের দর্শকদের কাছে খুবই জনপ্রিয়। আর সে কারণেই মধুমিতাকে নিয়ে এসব খবর বানানো হয়েছে।”

জয়া জানান, তিনি চান মধুমিতা যেন ন্যায়বিচার পান এবং অপসাংবাদিকতার বিরুদ্ধে এই লড়াইয়ে তিনি মধুমিতার পাশে আছেন।

আরেক বাংলাদেশি অভিনেত্রী সোহানা সাবাও মুখ খুলেছেন এ বিষয়ে। টাইমস অব ইন্ডিয়াকে তিনি বলেন, ‘প্রতিবাদ করতে শেখাটা গুরুত্বপূর্ণ। মধুমিতা প্রতিবাদ করে ঠিক কাজটি করেছেন। আমার মনে হয় এখনই সময়, আমাদের সবারই এ ধরনের ভুয়া খবরের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা উচিত।’

এ ধরনের মিথ্যা ও মানহানিকর খবর প্রকাশ করা অনুচিত দাবি করে সোহানা সাবা আরো বলেন, ‘কোনো দেশের লোকেরা এ ধরনের খবর প্রকাশ করেছে সেটা বিষয় নয়। এটা একদম অসত্য একটি খবর যেখানে একজন জনপ্রিয় অভিনেত্রীকে যৌনকর্মী বলা হচ্ছে। এটা অনেক বড় একটা অপরাধ। পোর্টালের হিট বাড়ানোর জন্য এ ধরনের খবর ছাপানো হয়।’

সাবা জানান, তিনি ব্যক্তিগতভাবে মধুমিতাকে চেনেন না। তিনি বলেন, ‘আমি এখন পর্যন্ত খবরগুলো পড়িনি। কিন্তু আমি বুঝতে পারছি এ ধরনের মানহানিকর ও মিথ্যা খবর একজন অভিনেত্রীর জন্য কতটা অসম্মানের হতে পারে। এমনকি তিনি যদি তারকা না হয়ে একজন সাধারণ মানুষও হতেন সেটাও তার এবং তার পরিবারের জন্য মানহানিকর হতো। এ ধরনের পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সত্যিই খুব কঠিন।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top