সকল মেনু

এবার আশিয়ান সিটি প্রকল্পের সকল কার্যক্রম স্থগিতের আদেশ

4107_hc হটনিউজ ডেস্ক:  এবার আশিয়ান সিটি প্রকল্পের বৈধতা দিয়ে হাইকোর্টের রায় স্থগিত করে ঢাকার বেরাইদ, বরুয়া উত্তরখান ও দক্ষিণখান এবং বাথুয়ায় অবস্থিত আশিয়ান সিটি প্রকল্পের সকল কার্যক্রমের উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ। এর ফলে আশিয়ান সিটির এ প্রকল্পের জমি ভরাট, প্লট বিক্রি, বিজ্ঞাপন প্রদান এবং অর্থ লেনদেন বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

এক আবেদনের শুনানি করে সোমবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালতে আজ রিটকারীদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ফিদা এম কামাল এবং সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।এবং মুরাদ রেজা। আশিয়ান সিটির পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির নির্বাহী পরিচালক ও রিটকারী আইনজীবী রিজওয়ানা হাসান সাংবাদিকদের বলেন, আশিয়ান সিটি প্রকল্পের বৈধতা দিয়ে হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে আশিয়ান সিটি প্রকল্পের সকল কার্যক্রমের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আপিল বিভাগ। এর অর্থ হলো আশিয়ান সিটি প্রকল্পের উন্নয়ন কার্যক্রম চলতে পারবে না, মাটি ভরাট করতে পারবে না, পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে পারবে না, টাকা-পয়সা গ্রহণ করতে পারবে না।

হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে গত ১৭ আগাস্ট চেম্বার আদালতে আবেদন করে রিটকারী ও রাষ্ট্রপক্ষ। আবেদনের একদিন পর গত ১৮ আগস্ট চেম্বার বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার আবেদন শুনানির জন্য ২২ আগস্ট দিন নির্ধারণ করে পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। আজ ওই দুই আবেদনের শুনানি নিয়ে আদেশ দিলেন আপিল বিভাগ।

গত ১৬ আগস্ট আশিয়ান সিটির রিভিউ আবেদন গ্রহণ করে বিচারপতি সৈয়দ এ বি মাহমুদুল হক, বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী রেজা-উল হকের হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ আশিয়ান সিটি আবাসিক প্রকল্প অবৈধ ঘোষণার রায় বাতিল করেন।

২০১৪ সালের ১৬ জানুয়ারি আশিয়ান সিটি প্রকল্প অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছিলেন হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ। বিচারপতি সৈয়দ এ বি মাহমুদুল হক, বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি এ বি এম আলতাফ হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে ওই রায় দিয়েছিলেন।

সে রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ২০১৫ সালে আশিয়ান সিটি প্রকল্পের ব্যবস্থাপনা পরিচালক একটি আবেদন করেন। এ আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট ওই রায় ঘোষণা করে।

মামলার নথি সূত্রে জানা যায়, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই ২০০৬ সালে উত্তরার উত্তরখান ও দক্ষিণখান এলাকায় আশিয়ান সিটি প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। প্রকল্পের জন্য যে পরিমাণ জায়গা প্রয়োজন, তার চেয়ে বেশি জমি নিয়ে কার্যক্রম শুরু করা ও অনুমোদন না নেওয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে জনস্বার্থে আইন ও সালিশ কেন্দ্র অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন, ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেক্ট বাংলাদেশ, নিজেরা করি ও পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন ২০১২ সালের ২২ ডিসেম্বর রিট করে।

রিট আবেদনে বলা হয়, আশিয়ান সিটি ৪৩ দশমিক ১১ একর জমির জন্য অনুমোদন নিয়েছে। কিন্তু ২৩০ দশমিক ৪৬ একর জমিতে কাজ করছে। যে জমি ভরাট করছে, তা প্লাবনভূমি।

প্রাথমিক শুনানির পর হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ আশিয়ান সিটি আবাসন প্রকল্পের মাটি ভরাট, বিজ্ঞাপন প্রচার ও প্লট বিক্রি বন্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে রাজউকসহ বিবাদীদের নির্দেশ দেন।

পরিবেশ অধিদফতরের দেওয়া আশিয়ান সিটির অবস্থানগত ছাড়পত্র, এর নবায়ন, রাজউকের অনুমোদন এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের ৫০ লাখ টাকা জরিমানা হ্রাস করে পাঁচ লাখ টাকা করা নিয়ে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের দেওয়া আদেশ স্থগিত করা হয়। রুলে ওই প্রকল্পকে পরিবেশ অধিদফতরের দেওয়া অবস্থানগত ছাড়পত্র ও এর নবায়ন, মন্ত্রণালয় থেকে জরিমানা হ্রাস এবং রাজউকের দেওয়া অনুমোদন কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top