সকল মেনু

বোল্টের প্রেরণায় ম্যাকলিওডের ইতিহাস

জ্যামাইকা এখন স্প্রিন্টের খনি। সেই খনি থেকে এবার বের হলেন ওমর ম্যাকলিওড নামের নতুন হিরে। ১১০ মিটার হার্ডলসে সবাইকে চমকে দিয়ে সোনা জিতেছেন ২২ বছরের এই তরুণ। সেটা আবার উসাইন বোল্টের প্রেরণাতেই। ১৩.০৫ সেকেন্ড সময় নিয়ে অলিম্পিক স্টেডিয়ামে দু-হাত দুদিকে মেলে পাখির মতো উড়ছিলেন ম্যাকলিওড। বোল্টের মতো শূন্যে তীর ছোড়ার ভঙ্গি না করলেও ট্র্যাকে তাঁর মতো আমুদেই থাকতে চান তিনি, ‘কোটি তরুণের মতো উসাইন বোল্ট আমার প্রেরণা। বোল্ট কিংবা প্রাইস এককথায় অসাধারণ। তাঁদের দেখেছেন আপনারা, সারাক্ষণ মজা করেন আর নিজেদের মেলে ধরে সোনা জেতেন দেশের হয়ে। আমি শুধু তাঁদের মতোই হতে চেয়েছি।’

১০০ ও ২০০ স্প্রিন্টের রাজত্বটা উসাইন বোল্টের। তাঁর আগে ১০০ মিটারের তারকা ছিলেন আসাফা পাওয়েল। ইয়োহান ব্লেকও অসাধারণ স্প্রিন্টার। আর মেয়েদের ১০০ মিটারে রাজত্বটা শেলি-অ্যান ফ্রেজার প্রাইস, এলেইন থমসনদের। ২০০৪ ও ২০০৮ অলিম্পিকের ২০০ মিটারে সোনা জিতেছিলেন জ্যামাইকারই ভেরোনিকা ক্যাম্পবেল ব্রাউন। সেই জ্যামাইকার কেউ কিনা ১১০ মিটার হার্ডলসে সোনা জেতেননি এত দিন? আক্ষেপটা মেটালেন ওমর ম্যাকলিওড। তাই গর্বিত এই তরুণ, ‘প্রথম জ্যামাইকান হিসেবে ১১০ মিটার হার্ডলসের সোনা জিতে গর্বিত আমি। মাথার ভেতর কি ঘুরপাক খাচ্ছে বুঝতে পারছি না। আমি অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন, এটা অনুধাবন করতে সময় লাগবে আরো।’

ম্যাকলিওডের চেয়ে ০.১২ সেকেন্ড বেশি সময় নিয়ে রুপা জিতেছেন কিউবায় জন্ম নেওয়া স্প্যানিয়ার্ড ওরলান্দো ওরতেগা। আর ব্রোঞ্জ পেয়েছেন ফরাসি দিমিত্রি বাসকিউ। ১৯৯৬ সালের পর এই ইভেন্টে এটাই প্রথম পদক ফ্রান্সের। তাঁর গায়ে গায়ে থেকে চতুর্থ হয়েছেন আরেক ফরাসি পাসকেল মারতিনত লাগারতে। এবারই প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের কোনো অ্যাথলেট সোনা, রুপা বা ব্রোঞ্জ পেলেন না ১১০ মিটার হার্ডলসে। ১৯৮০ সালে অলিম্পিক বয়কট করা আসরটি বাদ দিলে এই ইভেন্টে কোনো একটা পদক নিশ্চিতই থাকত মার্কিনিদের জন্য।

২২ বছর বয়সী ওমর ম্যাকলিওডের ১১০ মিটার হার্ডলসে সেরা টাইমিং ১২.৯৭ সেকেন্ড। অলিম্পিক ফাইনালে ১৩.০৫ সেকেন্ডেই অবশ্য জিতলেন ঐতিহাসিক সোনা। রিওতে আসার আগে তাঁকে নিয়ে জ্যামাইকাতে উচ্ছ্বাস ছিল না খুব বেশি। কেননা গত মাসে মোনাকো ডায়মন্ড লিগে পড়ে গিয়েছিলেন হার্ডলসে পা লেগে। এই বছর আরো একবার ঘটেছিল এ ধরনের দুর্ঘটনা। সেই ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে সাফল্য পেয়েছেন রিওতে। এখন তাঁর লক্ষ্য এরিস মেরিটের ১২.৮০ সেকেন্ডের বিশ্ব রেকর্ড ভাঙা, ‘হার্ডলসে পা লেগে ট্র্যাকে পড়ে যাওয়াটা সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা এই ইভেন্টে। অথচ এ বছর দুইবার এমনটা হয়েছে আমার সঙ্গে। তাই ঝুঁকি না নিয়ে খেলেছি রিওতে। এগিয়েও ছিলাম শুরু থেকে। আমার বিশ্বাস ভয় না পেয়ে নিজের সেরা গতিতে যদি দৌড়াতে পারি তাহলে ভাঙতে পারব মেরিটের বিশ্ব রেকর্ড।’

এদিকে সেমিফাইনালে প্রথম হার্ডলসে পা লেগেই পড়ে গিয়েছিলেন হাইতির জেফরি জুলমি। রিওতে দর্শকরা যেভাবে আথলেটদের দুয়ো দিয়ে এসেছেন তাতে হয়তো উপহাসেরই শঙ্কা করছিলেন জুলমি। কিন্তু উঠে দাঁড়িয়ে রেসটা শেষ করায় পুরো গ্যালারি সম্মান জানায় তাঁকে। এমন অভিবাদনে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি জুলমি। একইদিনে দর্শকদের দুয়ো শুনেই কেঁদেছেন ফ্রেঞ্চ পোল ভোল্টার ল্যাভিলিন। আগেরদিন ব্রাজিলিয়ান থিয়াগো ব্রাজ দ্য সিলভার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বীতার সময়ই তাঁকে দুয়ো দেয় স্বাগতিক দর্শকরা। পরশু রুপার পদক নিতে যখন তিনি পোডিয়ামে উঠেন তখনও দর্শকদের সেই প্রতিক্রিয়া। যাতে সত্যিই মন ভেঙে গেছে ল্যাভিলিনের। আইওসি সভাপতি টমাস বাখও ব্রাজিলিয়ানদের এমন আচরণের সমালোচনা

 

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top