সকল মেনু

ভারতে গো-রক্ষকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থার নির্দেশ

cow-india_26730আন্তর্জাতিক ॥ হটনিউজ২৪বিডি.কম : গরু রক্ষার নাম করে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে গত প্রায় দেড় বছর ধরে মারধর, এমন কি হত্যা পর্যন্ত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এতদিন পরে ওই স্বঘোষিত গোরক্ষকদের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন। আর তার পরেই গোরক্ষার নাম করে যারা আইন নিজেদের হাতে তুলে নিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছে মোদীর সরকার। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রতিটি রাজ্যের মুখ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব আর পুলিশ মহানির্দেশকদের কাছে যে নির্দেশ পাঠিয়েছে মঙ্গলবার; তাতে লেখা হয়েছে, যেসব রাজ্যে গরু জবাই নিষিদ্ধ, সেখানে ওই আইন ভাঙ্গার খবর কেউ দিতেই পারে পুলিশকে তবে নিজের হাতে আইন তুলে নেয়ার অধিকার কারও নেই। এটা যারা করছে তাদের বিরুদ্ধে খুব দ্রুততার সঙ্গে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে বলেও জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।

গত এক দেড় বছরে যেসব রাজ্যে গো রক্ষার নামে মারধর আর হেনস্থা এমনকি হত্যা পর্যন্ত হয়েছে, তার মধ্যে শীর্ষে রয়েছে উত্তর প্রদেশ। তবে এধরণের ঘটনা ঘটেছে বি জে পি শাসিত মধ্য প্রদেশেও। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই নির্দেশ এখনও হাতে পান নি মধ্যপ্রদেশের পুলিশ মহানির্দেশক ঋষি কুমার শুক্লা। তবুও তিনি বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, আমাদের পুলিশ কখনই এধরনের নজরদার বাহিনী বা দলের কার্যকলাপ বরদাস্ত করে না। এ ধরণের গোষ্ঠীগুলি নিজেদের ইচ্ছামতো ঘুরে বেড়াবে, যা খুশি করবে, সেটা চলতে দেওয়া হয় না এখানে। যদিও এর মধ্যেও কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। তবে আমরা এধরণের গো-রক্ষা নজরদারদের বিরুদ্ধে খুব দ্রুততার সঙ্গেই ব্যবস্থা নিয়েছি।

আরেকটি বি জপি শাসিত রাজ্য হরিয়ানায় আবার গোরক্ষার বিষয়টিকে সরকার নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছে। তৈরি হয়েছে গো সেবা কমিশন। গরু পাচার আর জবাই রুখতে তৈরি হয়েছে বিশেষ পুলিশ বাহিনী। গো সেবা কমিশনের চেয়ারম্যান ভানি রাম মঙ্গলা বিবিসি বাংলাকে জানান, গরু রক্ষার কাজে যাতে কোনও ব্যক্তি বিশেষ বা কোনও গোষ্ঠী নিজেদের মতো কাজ না করতে পারে, তার জন্য একটি সংগঠনকেই দায়িত্ব দেয়া হয়েছে স্বেচ্ছাসেবক যোগাড় করতে। তাদের নিয়োগ করার আগে পুলিশ ভেরিফিকেশন হবে পরিচয়পত্র থাকবে এবং প্রশিক্ষণও দেয়া হবে। তাদের দায়িত্ব থাকবে শুধু নজর রাখা আর পুলিশ অথবা গো রক্ষার জন্য তৈরি বিশেষ বাহিনীর কাছে আইন ভঙ্গকারীদের ব্যাপারে খবর পৌঁছন। তারা কোনওমতেই আইন নিজের হাতে তুলে নেবে না।

কয়েক দিন আগেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গোরক্ষার নাম করে নজরদার বাহিনীগুলির বিরুদ্ধে মুখ খোলেন। তিনি এক ভাষণে বলেছিলেন গোরক্ষার নাম করে যারা বিভিন্ন ঘটনা ঘটাচ্ছে, তাদের ৮০ ভাগই সমাজবিরোধী। বিভিন্ন রাজ্যে গোরক্ষার নাম করে যারা নজরদারি চালাচ্ছে, তারা আবার হিন্দু পুনরুত্থানবাদী রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ বা আর এস এস এবং মি. মোদীর দল বি জে পির-ই অনুগত। ওই মন্তব্যের পরে স্বঘোষিত গোরক্ষকরা মি. মোদীর ওপরে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন।
কিন্তু তা-ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দিয়ে সব রাজ্যে গোরক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়া যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। তবে যেদিন এই নির্দেশ দেয়া হচ্ছে, সেদিনই অন্ধ্র প্রদেশ রাজ্যে এরকমই শ খানেক স্বঘোষিত গোরক্ষক দুই দলিত যুবককে গাছে বেঁধে প্রচ- মেরেছে। ওই ২ দলিত যুবককে এক ব্যক্তি তার বিদ্যুতায়িত হয়ে মৃত গরুর চামড়া ছাড়ানোর জন্যে ডেকে এনেছিলেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top