সকল মেনু

অলিম্পিকের খবর টুকছে রোবট সাংবাদিক

robot_26424খেলা ॥ হটনিউজ২৪বিডি.কম : পঠিত সংবাদটি মানুষের, না রোবটের তৈরি, কিছুদিন পর হয়তো তা পাঠককেই ঠিক করে নিতে হবে। রোবট সাংবাদিকের উত্থান ঘটে গেছে যে! এই তো, অলিম্পিকের আসরেই ওয়াশিংটন পোস্টের হয়ে কাজ করছে এক রোবট সাংবাদিক। নাম হেলিওগ্রাফ। কলকারখানায় অনেক আগে থেকেই রোবট ব্যবহার করা হচ্ছে। এখন তো দুর্যোগে উদ্ধার তৎপরতা থেকে হোটেলে খাবার পরিবেশনের কাজ পর্যন্ত রোবট চালাচ্ছে। সাংবাদিকতাইবা বাদ থাকবে কেন?

ব্রাজিলে চলমান অলিম্পিক গেমসে রোবট প্রতিবেদক ব্যবহার করছে দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট। এই রোবট সাংবাদিক নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে প্রযুক্তি ও ব্যবসা-বিষয়ক ওয়েবসাইট বিজনেস ইনসাইডার।

অলিম্পিক মানুষের সক্ষমতার ওপর প্রকৃতিপ্রদত্ত সীমাবদ্ধতা জয়ের আসর। সেই আসরেই যন্ত্রের ওপর আরও বেশি নির্ভরশীল হলো ওয়াশিংটন পোস্ট। হেলিওগ্রাফ কিন্তু ক্রীড়া প্রতিবেদকদের মতো প্রেসবক্সে ল্যাপটপ হাতে নিয়ে বসে থাকে না। এটি মূলত একধরনের গাণিতিক পরিভাষা। স্টেটস ডটকম নামের ওয়েবসাইট থেকে এটি খেলা সম্পর্কিত সব ধরনের তথ্য সংগ্রহ করে। এরপর সেটিকে বিশ্লেষণ করে কয়েক বাক্যের ছোট পোস্ট তৈরি করতে পারে। সেই পোস্টগুলো সরাসরি চলে যায় ওয়াশিংটন পোস্টের লাইভ ব্লগ ও টুইটার অ্যাকাউন্টে। এমনকি অন্যান্য সংবাদের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত অন্যান্য নিউ মিডিয়া, যেমন ফেসবুক মেসেঞ্জারেও এই পোস্ট চলে যেতে পারে। এ ছাড়া অ্যামাজন ইকোতে এটি অডিও আপডেটও দিতে পারে।

এ ব্যাপারে দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের ‘কৌশলগত উদ্যোগ’ বিভাগের পরিচালক জেরেমি গিলবার্ট বলেন, ‘এর আগের অলিম্পিকের আসরে, বিশেষ করে ২০১২ সালে লন্ডনে আমাদের নিজস্ব সম্পাদক, প্রতিবেদক ও প্রযোজক ছিলেন। তাঁদের দিনে ১২ ঘণ্টা করে অলিম্পিকের ইভেন্টগুলো দেখতে হতো এবং খেলার ফলাফল লিখে রাখতে হতো। এতে করে আমরা ইভেন্টগুলো শেষ হওয়া পর্যন্ত লাইভ ব্লগ চালাতে পারতাম। অলিম্পিকে মোট ৩৩০টি মেডেলের ইভেন্ট আছে। আগে যখন অলিম্পিকে এত খেলার জন্য পুরস্কার দেওয়া হতো না, তখন কিন্তু তথ্যের পরিমাণ কম ছিল। কিন্তু এখন এত বেশি তথ্য থাকে যে তা বিশ্লেষণ করতে কর্মীদের অনেক সময়ের প্রয়োজন হয়।’
এমন রোবট ব্যবহার করার পর স্বাভাবিকভাবেই নড়েচড়ে বসেছে ওয়াশিংটন পোস্টের ক্রীড়া বিভাগ। বিভাগটির পক্ষ থেকে গিলবার্টের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা হয়। বিভাগটি বলছে, এই প্রযুক্তি ব্যবহার করার অর্থ শুধু দ্রুততম সময়ে পাঠকের কাছে অলিম্পিকের সংবাদ পৌঁছে দেওয়াই নয়; বরং রিও ডি জেনিরোতে কাজ করা ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিকদের কষ্ট যেন বৃথা না যায়, সেই দিকটিও বিবেচনা করতে হবে।

এ ব্যাপারে জেরেমি গিলবার্ট বলেন, ‘প্রকৃত প্রতিবেদকদের কাজকে নিখুঁত ও সম্পূর্ণ করতেই এটি করা হচ্ছে। অলিম্পিকে রিওতে আমাদের এক ডজনেরও বেশি সাংবাদিক কাজ করছেন। এ ছাড়া মূল অফিসের নিউজরুমে কাজ করছেন আরও অনেকে। তাঁরা যে গল্পটি বলার চেষ্টা করেন, সেটি শুধু একজন মানুষই করতে পারে।’

তবে সংবাদ তৈরিতে রোবটের ব্যবহার ভবিষ্যতে আরও বহুমাত্রিক হবে বলেই মনে করেন গিলবার্ট। তিনি বলেন, ‘প্রকৃতিগত দিক থেকে সংবাদ এখন পরিবর্তন হচ্ছে। আমি জানি না রোবটের তৈরি সংবাদ পুলিৎজার পুরস্কার পাবে কি না, তবে এটি যে আপনার জন্য সংবাদ তৈরিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে, তা নিশ্চিত। ওয়াশিংটন পোস্ট এরই মধ্যে এমন কিছু কাজও করেছে।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top