সকল মেনু

পার্বতীপুরে মুক্তিযোদ্ধার সন্মানী ভাতা বন্ধ

index রাইসুল ইসলাম, পার্বতীপুর (দিনাজপুরে): দিনাজপুরের পার্বতীপুরে একজন মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুতে গোটা পরিবারে নেমে এসেছে ঘোর অমানিশা। আর মুক্তিযোদ্ধা সন্মানী ভাতা বন্ধ হওয়ায় মানববেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে এই পরিবারটিকে।
জানা যায়, উপাজেলার ৮নং হাবড়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত উত্তর রসুলপুর গ্রামের মৃত্য মফিজ উদ্দিন শেখের পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ হাফিজুর রহমানের মৃত্যু হয়েছে ২০১৫ সালের ১ আগষ্ট। মুক্তিযোদ্ধা হাফিজুর রহমানের স্ত্রী জাহানারা বেগম বলেন, ২০১৫ সালের অক্টোবর মাস থেকে তার স্বামীর মুক্তিযোদ্ধা সন্মানী ভাতা বন্ধ করা হয়েছে। এর আগে তিনি মুক্তিযোদ্ধা সন্মানী ভাতা প্রথম থেকে পেয়ে এসেছেন। সর্বশেষ তিনি ২০১৫সালের সেপ্টেম্বর মাসে ১৫০০ টাকা সন্মানী ভাতা উত্তেলন করেন। তিনি আরও বলেন, তার তিন ছেলে ও তিন মেয়ের মধ্যে হাছিনা খাতুন (৩৫), জামিল শেখ (৩০), জালাল শেখ (২৮), নাসিমা খাতুন (২৬) ও জামাল শেখের (২৪) বিয়ে হয়েছে অনেক আগে। গত এক বছর আগে তার সর্বকনিষ্ঠ মেয়ে দৃষ্টি নাসরিনের (২১) বিয়ে হয়েছে। এর মধ্যে পুত্র জালাল শেখ একজন পঙ্গু মানুষ। তা সত্বেও জীবিকার তাগিদে সে ঢাকায় গিয়ে রিক্সা চালায়। জামিল শেখ বাড়ীতে থেকে রাজ মিস্ত্রীর কাজ করেন। সবার ছোট জামাল শেখ দিন মজুরি করে তার সংসার নির্বাহ করেন। জাহানারা বেগমের দাবি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র থাকা সত্বেও তার স্বামীর ভাতা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা হাফিজুর রহমানের প্রতিবেশীনি রুবীনা বেগম (৫০), হামিদা বেওয়া (৬০) ও রুজিনা বেগম (৪৫) বলেন, এমনিতে পরিবারটি অত্যন্ত গরীব। দিন এনে দিন খাওয়া এ লোকগুলোর মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু নেই। এর উপর মুক্তিযোদ্ধা সন্মানী ভাতা বন্ধ হওয়ায় পরিবারটি চরম দুরবস্থার মধ্যে পড়েছে। তারা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সদয় দৃষ্টি আর্কষন করেছেন এব্যাপারে। উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা মোঃ যোবেদ আলী, মুক্তিযোদ্ধা নূরে আলম মাষ্টার, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী, মজিবর রহমান মন্টু ও মোঃ তোফাজ্জল হোসেন মুক্তিযোদ্ধা হাফিজুর রহমানের মুক্তিযোদ্ধা সন্মানী ভাতা অবিলম্বে চালু করার জন্য মন্ত্রণালয়ের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন। এব্যাপারে পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তরফদার মাহমুদুর রহমানের সাথে কথা বললে জানান, কি কারনে ভাতা বন্ধ রয়েছে সে বিষয়টি দেখে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এদিকে, উপজেলার আরেক মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আব্দুল কাইয়ুম (অবসরপ্রাপ্ত রেল কর্মচারী) তার দুই পুত্র মোঃ আরিফুল জামান (৩২) ও মোঃ সোহেল রানা (২৯) মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকুরী না হওয়ায় চরম দুঃ শ্চিন্তার মধ্যে রয়েছেন। আব্দুল কাইয়ুম এর পিতা শহীদ আজগর আলী, গ্রাম বাশুপাড়া, উপজেলা পার্বতীপুর। তার গেজেট নং- ২৬৪৭, ভারতের গেজেট নং- ৮৭১৬, মুক্তিবার্তা নং- ০৩০৮০৮০০৩২, মন্ত্রণালয়ের সনদ নং- ম=৩৯১৭৮, প্রাধানমন্ত্রী স্বাক্ষরিত সনদ নং-১৭০০৭ ও জাতীয় পরিচয়পত্র নং- ০৬০১০৮০৪৪২। আব্দুল কাইয়ুম জানান, তার উভয় পুত্র রেলের খালাসী পদে আবেদন করেছেন। পরিবার পরিকল্পনা ও খাদ্য মন্ত্রণালয়েও আবেদন করেছেন। ইতিমধ্যে পুত্র আরিফুল জামানের মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকুরীর বয়সসীমা অতিক্রম করেছে। অপরদিকে, দ্বিতীয় পুত্র সোহেল রানার বয়সসীমা অতিক্রমের শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top