সকল মেনু

সাবেক সাংসদ এম আব্দুর রহিম গুরুতর অসুস্থ্য

index দিনাজপুর থেকে মো. নুরুন্নবী বাবু: জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর, স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সদস্য, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও মুক্তিযুদ্ধ কালিন মুজিব নগর সরকারের পশ্চিমাঞ্চলীয় জোনের চেয়ারম্যান সাবেক সাংসদ এ্যাড. এম. আব্দুর রহিমকে গুরুতর অসুস্থ্য অবস্থায় দিনাজপুর জিয়া হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল এন্ড রিসার্চ ইন্সটিটিউটে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত মধ্য রাতে তিনি অসুস্থ্য হলে প্রথমে তাকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে সেখান থেকে আজ বুধবার সকালে দিনাজপুর জিয়া হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল এন্ড রিসার্চ ইন্সটিটিউটে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তাকে সিসিইউ বিভাগে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে।
এদিকে তার অসুস্থ্যতার সংবাদ পেয়ে আজ বুধবার সকালে তার পুত্র সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এম. এনায়েতুর রহিম এবং অপর পুত্র জাতীয় সংসদের হুইপ এম. ইকবালুর রহিম এমপি স্বপরিবারে ঢাকা থেকে দিনাজপুরে এসে পৌছেছেন।
প্রবীন রাজনীতিক ও সাবেক সাংসদ এম. আব্দুর রহিম সিওপিডি, ডায়াবেটিক, হাইপারটেনশন ও এ্যাকুইট হার্ট এ্যাটর্ক রোগে ভুগছেন। প্রবীন এই রাজনীতিকের শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষনের জন্য জিয়া হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালের চীফ কনসালটেন্ট হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. কেএম সোহাইলকে প্রধান করে ৬ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। এই মেডিকেল বোর্ডের তত্বাবধানে তার চিকিৎসা চলছে। বোর্ডের অন্যান্যরা হলেন- দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শাহরিয়ার কবির, বক্ষব্যাধী বিশেষজ্ঞ ডা. বিকে বোস, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. নুরুজ্জামান, ডা. তিমির বরন বসাক ও ডা. মোঃ শাকি আল জাকি।
এম আব্দুর রহিম ছাত্রাবস্থায় রাজশাহী কলেজে ভাষা আন্দোলনের কর্মসূচীতে সংযুক্ত ছিলেন। মুসলিলীগ সরকারের হক-ভাসানী-সোহরাওয়ার্দীর যুক্তফ্রন্টের একজন কর্মি হিসেবে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সঙ্গে ১৯৫৪ সালের নির্বাচনি প্রচারাভিযানে অংশ নেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত ঐতিহাসিক আগরতলা মামলার তিনি। লিগ্যাল এইড কমিটির একজন সদস্য ছিলেন। আওয়ামীলীগের প্রার্থী হিসেবে ১৯৭০ সালে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়ে ১৯৭১ এর মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বৃহত্তর দিনাজপুর আঞ্চলের মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে অক্লান্ত পরিশ্রম করেন। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠন হলে গোটা দেশকে যুদ্ধ পরিচালনার জন্য যে ১১টি বেসামরিক জোনে ভাগ করা হয় এম. আব্দুর রহিম ছিলেন পশ্চিম জোনের জোনাল চেয়ারম্যান। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি ১৯৭১ সালের ১৮ ডিসেম্বর দিনাজপুর গোর-এ-শহীদ বড় ময়দানে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন।
১৯৭২ সালের ১১ এপ্রিল স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধান প্রনয়নের জন্য গঠিত কমিটির ৩৪ জন সদস্যের মধ্যে একজন সদস্য ছিলেন এম. আব্দুর রহিম। তিনি ১৯৯১ সালে দিনাজপুর সদর আসন থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য পুনরায় নির্বাচিত হন। তিনি দীর্ঘদিন দিনাজপুর জেলা আওয়ামীলীগ ও দিনাজপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
তাঁর অসুস্থতার জন্য দিনাজপুরের রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ, ব্যবসায়ী মহলসহ সকল সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে তার রোগমুক্তি কামনা করে দোয়া খায়ের করেছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top