সকল মেনু

দেশে দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে কাজ করছে ওয়ালটন

index নিজস্ব প্রতিবেদক,হটনিউজ২৪বিডি.কম: দেশের ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক্যাল পণ্য খাতে অভিজ্ঞ ও দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে কাজ করছে ওয়ালটন গ্রুপ।  আইএসও সনদপ্রাপ্ত ওয়ালটন সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম কর্তৃপক্ষ প্রতিবছর বিপুল সংখ্যক কর্মীকে প্রশিক্ষন দিচ্ছে। উচ্চমানের কারিগরি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বেকার ও অদক্ষরা পরিণত হচ্ছেন দক্ষ মানবসম্পদে। প্রশিক্ষণ নিয়ে যাদের অনেকই দেশীয় প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বিদেশেও কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন।
ওয়ালটন সূত্রমতে, দেশের সম্ভাবনাময় এবং দ্রুত অগ্রসরমান ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক্যাল হোম এ্যাপ্লায়েন্স শিল্পে বিপুল সংখ্যক দক্ষ, অভিজ্ঞ প্রকৌশলী ও টেকনিশিয়ান প্রয়োজন। কিন্তু সেভাবে দক্ষ জনবল তৈরি হচ্ছে না। ফলে ওয়ালটন স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে হাতে কলমে দক্ষ জনবল তৈরি করছে।
জানা গেছে, প্রশিক্ষনের কাজটি হচ্ছে প্রধাণত চার ভাবে। একদিকে বিএসসি প্রকৌশলীদের স্বল্পমেয়াদী প্রশিক্ষনের মাধ্যমে সরাসরি নিয়োগ। দ্বিতীয়ত ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের প্রশিক্ষণ এবং নিয়োগ। তৃতীয়ত ইন্টার্নশিপের মাধ্যমে প্রকৌশলীদের ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ। অন্যটি হচ্ছে অদক্ষ বা বেকার যুবকদের প্রশিক্ষনের মাধ্যমে দক্ষ টেকনিশিয়ানে পরিণত করা।
২০০০ সালে ওয়ালটন সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম যাত্রা শুরু করে। তখন থেকেই ওয়ালটনের এই প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের প্রশিক্ষন দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। এই প্রকৌশলীরা মূলত ইন্ডাস্ট্রিয়াল এ্যাটাচমেন্ট কোর্সের আওতায় ওয়ালটন সার্ভিস সেন্টারে তিন মাস মেয়াদি ইন্টার্নশীপ প্রোগামে অংশ নেন। এছাড়া বিভিন্ন ভোকেশনাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট এবং ইউসেপের মতো কারিগরী প্রতিষ্ঠান থেকেও শিক্ষার্থীরা ইন্টার্নশিপ বা প্রশিক্ষনের জন্য ওয়ালটনে আসেন।
প্রতিবছর আগস্ট থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রামের মাধ্যমে শতাধিক ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের উচ্চমানের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। প্রশিক্ষণকালীন তারা প্রাতিষ্ঠানিক কাজেরও অভিজ্ঞতা লাভ করেন। সফলভাবে ইন্টার্নশিপ শেষ করার পর অভিজ্ঞতা সনদ দেয়া হয়। দেশী-বিদেশী প্রতিষ্ঠানে চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে যা সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
সূত্রমতে, ওয়ালটন সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম থেকে ২০১৪ সালে ১১০ জন ও  ২০১৫ সালে ১৯৪ জন ডিপ্লোমা প্রকৌশলী ইন্টার্নশিপ করেন। চলতি বছর ইন্টার্নশিপের জন্য ৫ শতাধিক প্রকৌশলী আবেদন করেছেন। যাদের মধ্যে ৩২০ জনকে ইন্টার্নশিপের সুযোগ দেয়া হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টদের মতে, আইএসও সনদপ্রাপ্ত সার্ভিস সেন্টারের আওতায় উচ্চ মান সম্পন্ন প্রশিক্ষণ দেয়ায় ওয়ালটনে ইন্টার্নশিপ করতে আগ্রহীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। তারা দাবি করেন, এসব প্রশিক্ষণের সুযোগ দিয়ে ওয়ালটন গ্রুপ দেশের কারিগরি শিক্ষার উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে।
প্রশিক্ষণ প্রদানের আরেকটি ধাপ পরিচালিত হয় মূলত বিভিন্ন কারনে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের পর শিক্ষাজীবন থেকে ঝরে পড়া  বেকার ও কারিগরি শিক্ষায় অদক্ষদের নিয়ে। তাদের ছয় মাস মেয়াদি প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। আধুনিক যন্ত্রপাতি এবং মেশিনারিজের সাহায্যে প্রশিক্ষনের মাধ্যমে তারা দক্ষ টেকনিশিয়ানে পরিণত হচ্ছেন।
ফলে একদিকে তাদের জন্য যেমন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে, অন্যদিকে দেশের সম্ভাবনাময় ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক্যাল শিল্প খাতে তৈরি হচ্ছে দক্ষ ও অভিজ্ঞ টেকনিশিয়ান। অদক্ষ জনবলকে প্রশিক্ষণের পাশাপাশি তাদের সম্মানজনক দৈনিক ভাতাও দিচ্ছে ওয়ালটন। প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের উল্লেখযোগ্য অংশ আবার ওয়ালটন সার্ভিস সেন্টারেই নিয়োগ পাচ্ছেন।
ওয়ালটন থেকে আইটি (তথ্য প্রযুক্তি) বিষয়েও প্রশিক্ষন দেয়া হচ্ছে। আইটিতে যারা দক্ষ তাদেরকে প্রণোদনা হিসেবে প্রতিমাসে বেতনের সঙ্গে বিশেষ ভাতা বা ইনসেনটিভ দেয়া হচ্ছে। সংশ্লিষ্টদের মতে, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়া তথা ভবিষ্যতের আইটি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ওয়ালটনের এই উদ্যোগ দৃষ্টান্ত হিসেবে কাজ করবে।
গত বছর ৪ শতাধিক অদক্ষদের ৬ মাস মেয়াদি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ কর্মীতে পরিণত করা হয়েছে। যাদের মধ্যে প্রায় ৩০০ জনকেই ওয়ালটন সার্ভিস সেন্টারে টেকনিশিয়ান হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
ওয়ালটন সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এর প্রধান নিয়ামুল হক বলেন, বাংলাদেশে ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক্যাল পণ্য খাতের ভবিষ্যত খুবই উজ্জ্বল। প্রতিবছরই ফ্রিজ, এলইডি টিভি, এসি, মোবইলফোন ও হোম এ্যাপ্লায়েন্সের চাহিদা এবং বিক্রি বাড়ছে। কিন্তু, এ খাতে দক্ষ, অভিজ্ঞ টেকনিশিয়ান ও প্রকৌশলীর যথেষ্ট অভাব থাকায় দেশী-বিদেশী অনেক ব্র্যান্ডের বিক্রয়োত্তর সেবায় ঘাটতি রয়ে যাচ্ছে। এতে করে, ক্রেতারা বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পণ্য কিনে কাঙ্খিত বিক্রয়োত্তর সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। দ্রুত অগ্রসরমান এ খাতে পর্যাপ্ত দক্ষ কর্মী তৈরির লক্ষ্যে ওয়ালটন বিশ্বমানের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে।
ডব্লিউএসএমএস এর এইচআরএম ও এডমিন বিভাগের প্রধান এসএম নাসির উদ্দিন বলেন, সাধারণত সার্ভিস সেন্টারে দক্ষ ও অভিজ্ঞ লোকবল নিয়োগ হয়। এক্ষেত্রে, ওয়ালটন ব্যতিক্রম। অনভিজ্ঞ ও অদক্ষদের সঠিক প্রশিক্ষণ প্রদান করে দক্ষ কর্মী হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। যাদের বেশিরভাগকেই আবার ওয়ালটন সার্ভিস সেন্টারে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। বাকিরা দেশ-বিদেশের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সার্ভিস সেন্টারে নিয়োগ পাচ্ছেন। অনেকে আবার বিদেশ গিয়ে আয় করছেন প্রচুর পরিমান বৈদেশিক মুদ্রা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top