অনুপম বড়ুয়া টিপু, ফ্রান্স থেকে: শিল্প সংস্কৃতি, সভ্যতার প্রাণ কেন্দ্র ফ্রান্সে গত ২০ জুলাই  বুধবার  বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় তিথি শুভ আষাড়ী পূর্ণিমা উদযাপিত হয়েছে।

এ উপলক্ষে  সকাল থেকে ফ্রান্সে বৌদ্ধ বিহার গুলোতে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সিদ্ধার্থ গৌতমের তুষিত স্বর্গ হতে রাণী মহামায়ার গর্ভে প্রতিসন্ধি গ্রহণ, ২৯ বছর বয়সে রাজকুমার সিদ্ধার্থের রাজপ্রসাদ ও সংসার ত্যাগ, পঞ্চবর্গীয় শিষ্যের নিকট বুদ্ধের ধর্মচক্র প্রবর্তন, শ্রাবস্তীতে যমক ঋদ্ধিপ্রতিহার্য প্রদর্শন, মাতৃদেবীকে মুক্তিদানের অভিপ্রায়ে তাবতিংস স্বর্গে আরোহণ, একই দিনে এই অনন্য ঘটনা সমৃদ্ধ তাৎপর্যময় দিনটি পালনে গতকাল ভোর থেকে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের বৌদ্ধ বিহারগুলোতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে বিশ্ব বৌদ্ধ সম্প্রদায়। সকাল থেকে বিহারের ধর্মীয় বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেয় বিপুল সংখ্যক পূন্যাথী। আর তাতে বৌদ্ধ বিহারগুলো রূপ নেয়, বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মিলন মেলায়। তবে গত কয়েক দিন থেকে অতিরিক্ত তাপদহের কারণে পূণ্যাথীদের কিছুটা ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

ভোরে জাতীয় ও ধর্মীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে শুরুর পর সূত্র পাঠ, সকালে বুদ্ধপূজা, ভিক্ষুসংঘকে পিন্ডদান, অষ্টশীল ও পঞ্চশীল গ্রহণ, দুপুরে ধর্মালোচনা ও আষাঢ়ী পূর্ণিমার তাৎপর্য শীর্ষক আলোচনা ছাড়াও সন্ধ্যায় প্রদীপ পূজা ও বিশ্ব শান্তি কামনায় সমবেত প্রার্থনার মাধ্যমে কর্মসূচির সমাপ্তি ঘটবে।  আষাঢ়ী পূর্ণিমা তিথি উদযাপনের মাধ্যমে গতকাল থেকে শুরু হলো বৌদ্ধ বিহারগুলোতে ভিক্ষুদের তিনমাসব্যাপী বর্ষাবাস ব্রত। যা আশ্বিনী পূর্ণিমা বা প্রবারণা পূর্ণিমার মাধ্যমে শেষ হবে। আর প্রবারণা পূর্ণিমার পর দিন থেকে বৌদ্ধ বিহারগুলোতে শুরু হবে কঠিন চীবর দানোৎসব। যা চলবে মাসব্যাপী।

বুদ্ধগয়া প্রজ্ঞা বিহার ধ্যান কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা, আন্তজাতিক খ্যাতি সম্পন্ন বৌদ্ধ পন্ডিত, বহু জনহিতকর প্রতিষ্ঠানের জনঙ্ক বহু গ্রন্থ প্রণেতা ভদন্ত প্রজ্ঞাবংশ মহাথের মহোদয় বলেন,
আমরা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী, বৌদ্ধ ধর্মে অনন্য ঘটনা সমৃদ্ধ দিনের মধ্যে আষাড়ী পূর্ণিমা হচ্ছে প্রথম ধাপ। মূলত আষাঢ়ী পূর্ণিমা থেকে আশ্বিনী পূর্ণিমা পর্যন্ত তিন মাস বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ধর্মপ্রাণ মানুষেরা মন্দির গুলোতে অবস্থান নিয়ে বর্ষাবাস পালন করে থাকেন।

এদিকে ফ্রান্সে বাংলাদেশী বুদ্ধগয়া প্রজ্ঞা বিহার ধ্যান কেন্দ্র, কুসলায়ন বৌদ্ধ ভাবনা কেন্দ্র, সার্বজনীন বৌদ্ধ বিহার, অনুরূপ এ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়।
এছাড়া বাংলাদেশী এসব বৌদ্ধ বিহারগুলোতে তিনমাস ব্যাপী পঞ্চশীল, অষ্টশীল গ্রহণ,ভাবনা, পিণ্ডদান ও ধর্মীয় দেশনার আয়োজন করা হয়েছে।