সকল মেনু

বঙ্গবন্ধুর আদর্শে সংগঠন ও নিজেকে গড়তে হবে: নেতাকর্মীদের হাসিনা

hasina-10-290x181হটনিউজ২৪বিডি.কম : বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ব্যক্তিজীবন ও সংগঠন গড়ে তুলতে দলের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগের ৬৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনায় তিনি বলেন, “প্রত্যেকটা নেতা-কর্মীকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে সততার সাথে সংগঠনকে যেভাবে গড়ে তুলতে হবে, নিজের জীবনকেও সেভাবে গড়ে তুলতে হবে।

“সততাই হল সব থেকে বড় শক্তি। যা উঁচু গলায় কথা বলার সাহস যোগায় সেটা একমাত্র সততা।”

আওয়ামী লীগের প্রতিটি নেতা-কর্মী ‘নিজের সব কিছু ত্যাগ করে’ দেশ ও জাতির কল্যাণে নিবেদিত প্রাণ হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন বঙ্গবন্ধু কন্যা।

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বৃহস্পতিবার বিকালে এই আলোচনা সভায় শেখ হাসিনা বক্তব্যের শুরুতেই ‘শুভ শুভ, শুভ দিন, আওয়ামী লীগের জন্মদিন’, ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দিলে উপস্থিত সবাই তার সঙ্গে গলা মিলান।

নেতা-কর্মীদের ব্যক্তিস্বার্থের ঊর্ধ্বে ওঠে দলের জন্য কাজ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “একজন রাজনৈতিক নেতা যখন ব্যক্তিস্বার্থটাকে বড় করে দেখে, তখন সে নিজে অনেক কিছু পায়। কিন্তু দেশকে কিছু দিতে পারে না।”

আওয়ামী লীগের ইতিহাস তুলে ধরে তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ সব সময় নীতি আদর্শ নিয়ে চলেছে। আওয়ামী লীগের বিজয় কেউ ঠেকাতে পারে নাই।”

১৯৪৯ সালের ২৩ জুন পুরান ঢাকার কে এম দাস লেনের রোজ গার্ডেনে আত্মপ্রকাশ ঘটে আওয়ামী লীগের। প্রায় দুই দশক পর এই দলটির নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীন হয় বাংলাদেশ।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে রাজনৈতিক সংগ্রাম, যুক্তফ্রন্ট গঠন ও ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে বিজয়সহ বিভিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে ৫০ এর দশকেই আওয়ামী লীগ হয়ে ওঠে পূর্ব পাকিস্তানের প্রধান রাজনৈতিক শক্তি।

এরপর ১৯৬২ সালের সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন এবং ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেয় আওয়ামী লীগ।

শেখ হাসিনা বলেন, “বাঙালির যা প্রাপ্তি, তা আওয়ামী লীগের হাত ধরেই।

“যে দলের নেতা (বঙ্গবন্ধু) সংগঠনের জন্য মন্ত্রিত্ব ত্যাগ করে, সে দলের শিকড় কতো গভীরে?”
দলের তৃণমূল নেতা-কর্মীদের প্রশংসা করে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, “তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা ক্রান্তিকালে সঠিক সিদ্ধান্ত নেন। উপরের নেতারা হয়তো কখনো ভুল করেছেন, কিন্তু তৃণমূলের নেতারা কখনো ভুল সিদ্ধান্ত নেন নাই।

“যে পার্টির প্রেসিডেন্ট পার্টি ত্যাগ করে চলে যান, সে পার্টি ধরে রাখা কঠিন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু তা পেরেছিলেন।”

মুসলিম লীগের প্রগতিশীল একটি অংশের উদ্যোগে বাঙালি জাতির মুক্তির লক্ষ্যে গঠিত হয়েছিল ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ’।

প্রতিষ্ঠাকালে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী দলটির সভাপতি, শামসুল হক সাধারণ সম্পাদক এবং কারাবন্দি শেখ মুজিবুর রহমান যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হন।

আওয়ামী মুসলিম লীগ নামে যাত্রা শুরু করলেও অসাম্প্রদায়িক চেতনায় ১৯৫৫ সালের কাউন্সিলে ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দেওয়া হয়। নতুন নাম হয়-‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ’। স্বাধীনতার পর ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ’ নাম নেয় দলটি।

পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ে মতপার্থক্যের কারণে ১৯৫৭ সালে দলে ভাঙন দেখা দেয়। ওই বছরের ৭ ও ৮ ফেব্রুয়ারি কাগমারি সম্মেলনে দলে বিভক্তির ঘটনা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এ অবস্থায় মাওলানা ভাসানী ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) নামে একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেন।

এরপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘসময় এই দলটি সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন করে জনগণের মধ্যে আস্থার স্থান তৈরি করে। ১৯৬৬ সালে ছয় দফা দেন বঙ্গবন্ধু, যাকে বাঙালির মুক্তির সনদ নামে অভিহিত করা হয়। ছয় দফার ভিত্তিতেই ৭০ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জয়লাভ করে।

আলোচনা সভায় বক্তব্যে শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, “আমার তো মাঝে মাঝে মনে হয়, শেখ হাসিনা তার সাহস ও প্রজ্ঞায় বঙ্গবন্ধুকে ছাড়িয়ে গেছেন।”

সভায় অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু ও তোফায়েল আহমদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য অনুপম সেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল-আলম হানিফ ও জাহাঙ্গীর কবীর নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহম্মদ হোসেন এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি (উত্তর) এ কে এম রহমতুল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক (দক্ষিন) শাহে আলম মুরাদ বক্তব্য দেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top