সকল মেনু

১৭ বিমা কোম্পানির ব্যয় অনুসন্ধানে দুদক

img-290x163হটনিউজ২৪বিডি.কম : গত ৭ বছরে ১ হাজার ৭৮১ কোটি টাকা অবৈধভাবে ব্যয় করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে দেশের সরকারি-বেসরকারি পুরনো ১৭টি লাইফ বিমা কোম্পানির বিরুদ্ধে। এইসব অবৈধ ব্যয়ের মধ্যে ৯০ শতাংশই গ্রাহকের টাকা বলে ওই অভিযোগে বলা আছে। সম্প্রতি উঠা এসব অভিযোগ আমলে নিয়ে অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

মঙ্গলবার (২১ জুন) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে বিমা খাতের এই বিপুল পরিমাণ দুর্নীতি অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন। এজন্য দুদকের উপপরিচালক জালাল উদ্দিন ও সহকারী পরিচালক আনোয়ার হোসেনের সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সংস্থাটি। টিমটির তদারকির জন্য পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

দুদকে আসা অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত সময়ে দেশের সরকারি-বেসরকারি পুরনো ১৭টি লাইফ বিমা কোম্পানি অবৈধভাবে ব্যয় করেছে ১ হাজার ৯৭৮ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। যার মধ্যে ৯০ শতাংশ বা ১ হাজার ৭৮০ কোটি ৫৯ লাখ টাকাই গ্রাহকদের।

বিমা নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ-এর তথ্যের বরাত দিয়ে অভিযোগে বলা আছে, সরকারি-বেসরকারি পুরনো ১৮টি লাইফ বিমা কোম্পানির মধ্যে অবৈধ ব্যয়ের শীর্ষে রয়েছে ৭টি কোম্পানি। এই ৭ কোম্পানির মোট অবৈধ ব্যয় ১ হাজার ৩৯৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা। যা মোট অবৈধ ব্যয়ের ৭০.৬ শতাংশ। এর মধ্যে গ্রাহকের রয়েছে ১ হাজার ২৫৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা।

এসব অবৈধ ব্যয়ের শীর্ষ কোম্পানির মধ্যে পপুলার লাইফ ২৯৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা, জীবন বিমা করপোরেশন ২৭৬ কোটি ৭৬ লাখ টাকা, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ২০০ কোটি ৫১ লাখ টাকা, পদ্মা ইসলামী লাইফ ১৬৬ কোটি ৮৩ লাখ, গোল্ডেন লাইফ ১৬৫ কোটি ২৫ লাখ, সন্ধানী লাইফ ১৫৫ কোটি ৫৯ লাখ এবং প্রগতি লাইফ ১৪৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকা অবৈধভাবে ব্যয় করেছে।

এছাড়া অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে- সানফ্লাওয়ার লাইফ ৯১ কোটি ২৭ লাখ টাকা, সানলাইফ ৯০ কোটি ৭০ লাখ, প্রাইম ইসলামী লাইফ ৭৪ কোটি ৪১ লাখ, মেঘনা লাইফ ৬৯ কোটি ৫২ লাখ, ডেল্টা লাইফ ৫৫ কোটি ৩২ লাখ, রুপালী লাইফ ৫০ কোটি ২৩ লাখ, হোমল্যান্ড লাইফ ৪৮ কোটি ৮ লাখ, প্রোগ্রেসিভ লাইফ ৪২ কোটি ৬৩ লাখ এবং বায়রা লাইফ ৩৮ কোটি ৬২ লাখ টাকা ব্যয় করেছে।

তবে পুরনো এসব কোম্পানির মধ্যে বিদেশি মালিকানার মেটলাইফ আলিকোর বাংলাদেশ শাখা কোনো অবৈধ ব্যয় করেনি। মেটলাইফের এ বাংলাদেশ শাখা অনুমোদিত ব্যয়ের চেয়ে ১৫৯ কোটি টাকা কম ব্যয় করেছে।

অন্যদিকে বেসরকারি লাইফ বিমা কোম্পানিগুলোর মধ্যে অবৈধ ব্যয় সবচেয়ে কম করেছে ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স। কোম্পানিটি গত ৭ বছরে অবৈধ ব্যয় করেছে ২১ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। যা মোট প্রিমিয়াম আয়ের ১.৪৯ শতাংশ। গত ৭ বছরে মোট প্রিমিয়াম আয় করে ৪ হাজার ৬৯৭ কোটি ৬৩ লাখ।

বিমা খাতের এই নিয়ন্ত্রক সংস্থার মতে, অবৈধ ব্যয়ের কারণেই অনেক কোম্পানি চরম আর্থিক সঙ্কটে পড়েছে। সময় মতো গ্রাহকদের দাবি পরিশোধ করতে পারছে না। ফলে গ্রাহকদের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে চরম অনাস্থা। গ্রাম-গঞ্জের গ্রাহকরা দাবির টাকা না পাওয়ায় বিমা নিয়েই তাদের মধ্যে বিরূপ ধারণার সৃষ্টি হচ্ছে। আর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে গোটা বিমা খাতের উপর।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top