সকল মেনু

১৪২ তলা ভবন নির্মাণে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন

building-290x181হটনিউজ২৪বিডি.কম : রাজধানী ঢাকার অদূরে পূর্বাচলে প্রস্তাবিত দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বোচ্চ ১৪২ তলা ‘আইকনিক টাওয়ার’ নির্মাণের প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুমোদন দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

মঙ্গলবার বিকেলে সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী এ কথা জানান। ১৪২ তলা এই টাওয়ারের নকশা এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যাতে এই ভবনের দিকে তাকালে মুক্তিযুদ্ধের কথা মনে পড়বে। এটি নির্মাণ সম্পন্ন হলে দুইপাশ থেকেই ’৭১ লেখা ফুটে উঠবে।

ভবনটি নির্মাণের জন্য ইতোমধ্যে পূর্বাচলের ১৯ নম্বর সেক্টরে সেন্ট্রাল বিজনেস ডিস্ট্রিক্ট বা সিবিডি অংশে ৬০ একর জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। এখানে একর প্রতি জমির ভিত্তিমূল্য ধরা হয়েছে ২০ কোটি টাকা। ৬০ একর জায়গায় সুউচ্চ ভবনটি ছাড়াও এটিকে ঘিরে আরও কিছু ছোট-বড় ভবন ও অন্যান্য স্থাপনা থাকবে। এটি নির্মাণে প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা।

অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী এরই মধ্যে আইকনিক ভবন নির্মাণের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছেন। এইমাত্র প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি দেওয়া সংক্রান্ত নথিপত্র পেলাম। তবে তিনি কয়েকটি বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন। সেসব বিষয়ে আলোচনা শেষে খুব শিগগির যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক নির্মাতাপ্রতিষ্ঠান কেপিসি প্রুপের সঙ্গে চুক্তি হবে।

গত ১২ মে কেপিসি গ্রুপের সঙ্গে এ বিষযে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিং সম্পন্ন না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত ওই দিন চুক্তি স্বাক্ষর হয়নি। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে আইন মন্ত্রণালয়ের ভিটিং সম্পন্ন হয়েছে। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনও পাওয়া গেছে। বহুতল বিশিষ্ট ভবনটি নির্মাণের জন্য কেপিসি গ্রুপের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর এখন যেকোনো দিন হতে পারে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।
গত দুই বছর ধরে বাংলাদেশে একটি বহুতল ভবন নির্মাণসহ একটি পরিপূর্ণ উপশহর নির্মাণের জন্য বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কালী প্রদীপ চৌধুরীর অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে একাধিক বৈঠকও হয়েছে। প্রথমে বুড়িগঙ্গা নদীর অপরপাড়ে কেরানীগঞ্জে ভবনটি নির্মাণের কথা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভূমির অবস্থা বিচারে তা বাতিল করা হয়।

দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বোচ্চ উচ্চতার এই টাওয়ার নির্মাণের জায়গা এরইমধ্যে ঠিক করেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ- রাজউক। নকশা তৈরির কাজও এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে (পিপিপি) দুই হাজার ফুটের বেশি উচ্চতার এই ভবন ২০১৮ সালের মধ্যে নির্মাণ শেষ হতে পারে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘আমাদের সিলেটের ছেলে কালী প্রদীপ চৌধুরী বিশ্বখ্যাত নির্মাতা প্রতিষ্ঠান কেপিসি গ্রুপ গড়ে তুলেছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তার প্রতিষ্ঠান বড় বড় ভবন নির্মাণ করে খ্যাতি অর্জন করেছে। বাংলাদেশে কিছু করার জন্যই তিনি আমার কাছে এই প্রকল্পের জন্য আগ্রহ দেখিয়েছেন। আমরা তার এই সদিচ্ছাকে ইতিবাচক হিসেবে নিয়েই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে চাই।’

অর্থমন্ত্রী-২ জুন জাতীয় সংসদে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের যে বাজেট পেশ করেছেন, তাতে তিনি এই প্রকল্প সম্পর্কে বলেছেন, ‘আমি আমার একটি স্বপ্নের কথা বলতে চাই। আমার এ স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রবৃদ্ধি সঞ্চালক ও জনবান্ধব একটি প্রকল্প সম্পর্কে সবাইকে বলব।’

‘আপনারা জানেন, পূর্বাচল ও এর নিকটস্থ এলাকা নিয়ে একটি স্বতন্ত্র মহানগর গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ মহানগরে পিপিপির আদলে একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করছি। এর মাধ্যমে একটি আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টার, একটি আধুনিক স্পোর্টস কমপ্লেক্স এবং ১৪২ তলা বিশিষ্ট আইকনিক টাওয়ার স্থাপন করা হবে।’

সে সময় মুহিত জানান, কনভেনশন সেন্টারের মূল মিলনায়তনে পাঁচ হাজার লোকের বসার ব্যবস্থা থাকবে। স্পোর্টস কমপ্লেক্সের মূল স্টেডিয়ামের ধারণ ক্ষমতা হবে ৫০ হাজার।

অর্থমন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অদূর ভবিষ্যতে যাতে কোনো ধরনের জটিলতা দেখা না দেয়, সেই জন্য এরই মধ্যে এই টাওয়ার নির্মাণের জন্য রাজউক আন্তর্জাতিক নিলাম আহ্বান করেছে। আগামী ২৮ জুন এ নিলাম হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top