সকল মেনু

গুরুত্ব, ক্ষমতা, সৌন্দর্য নিয়েই সব সময় আচ্ছন্ন সেলফি

image_16011হটনিউজ২৪বিডি.কম : যেকোনো সামাজিক অনুষ্ঠান, বিয়েবাড়ি, বন্ধুদের জমায়েত বা সুন্দর কোনো জায়গার সামনে দাঁড়িয়ে একা বা কয়েকজন মিলে মোবাইল ফোন আর ডিজিটাল ক্যামেরায় নিজেরাই তুলে ফেলছি নিজেদের ছবি যাকে বলে সেলফি! কবে কখন প্রথম এই সেলফির প্রচলন হলো তা নিয়ে গবেষণা হয়েছে প্রচুর। মার্কিন আলোকচিত্রী রবার্ট কর্নেলিয়াস ১৮৩৯ সালে নিজের ছবি নিজে তুলে পৃথিবীর প্রথম সেলফি তৈরি করেন। কিন্তু এ যুগে সেলফি বলতে যা বোঝায় সেই সেলফি শব্দটি অস্ট্রেলিয়ার একটি অনলাইন ফোরাম সর্বপ্রথম ব্যবহার করে ২০০২ সালে। এরপর থেকে বিষয়টির জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে—স্থান পায় অক্সফোর্ড অভিধানে এবং ২০১৩ সালে বর্ষসেরা শব্দের খেতাবও অর্জন করে ‘সেলফি’।
সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে রাষ্ট্রপ্রধান, তারকা, রাজনীতিবিদ, খেলোয়াড়, পর্যটক, মহাশূন্যচারী, শিশু-যুবক-বৃদ্ধ—কে নেই সেলফি তোলার তালিকায়! কেন মানুষ সেলফি তোলে? কেনই বা সেগুলো ছেড়ে দেয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে? জানতে চেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। বিশ্লেষণ করেছেন সেলফির মনস্তত্ত্ব।
নিজেকে সুন্দর করে অন্যের সামনে তুলে ধরার প্রবণতা মানুষের জন্মগত। মানুষের চাহিদার সোপানতত্ত্ব ব্যাখা করতে গিয়ে আব্রাহাম মাসলো দেখিয়েছেন জৈবিক চাহিদা ও অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানের মতো মৌলিক চাহিদা পূরণের পর মানুষ চায় অপরের কাছে নিজের স্বীকৃতি-ভালোবাসা। তুলে ধরতে চায় নিজেকে যতদূর সম্ভব পরিশীলিত করে। এই প্রবণতা স্বাভাবিক এবং মানবিকও বটে। সেই চাহিদা থেকেই সেলফি।
সেলফি তুলে ফেসবুকে আপলোড করতে সকলেই ভালবাসে। কিন্তু সেলফি সম্পর্কে এমন অনেক তথ্য আছে যা অনেকেরই অজানা।

১। ২০১৩ সালের নভেম্বর মাসে ংবষভরব শব্দটিকে বছরের সেরা শব্দ বলে স্বীকৃতি দেয় অক্সফোর্ড ইংলিশ ডিকশনারি।

২। কীভাবে ভাল সেলফি তোলা যায় সেটা জানাতে প্রচুর মানুষ প্রতিদিন অনলাইনে খোঁজ করেন।

৩। সমীক্ষা বলছে, ১৯৮০ সালের পরে যাঁদের জন্ম তাঁরা গোটা জীবনে ২৫ হাজার সেলফি তুলবেন।

৪। বহু মানুষ বছরে ৫৪ ঘণ্টা অর্থাৎ দু’দিনেরও বেশি সময় সেলফি তুলে খরচ করেন।

৫। সেলফি শুধুই শখের নয়, ব্রিটেনের একটি ক্যান্সার রিসার্চ সংস্থা ২০১৪ সালে মেক-আপ ছাড়া সেলফি তোলার প্রচারাভিযান চালায়।

৬। মনে করা হয়, প্রথম সেলফি তোলা হয় ১৯২০ সালের ডিসেম্বর মাসে নিউ ইয়র্ক সিটির একটি বাড়ির ছাদে।
৭। বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও অভিযানের অঙ্গ হিসেবে ২০১৫ সালে ভারতীয় পুরুষদের মেয়ের সঙ্গে সেলফি তুলে টুইটারে পোস্ট করার ডাক দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

৮। ২০১৪ সালের একটি সমীক্ষায় দেখা যায় প্রতিদিন বিশ্বে ১০ লাখ সেলফি তোলা হয়।

৯। সব থেকে বেশি সেলফি পোস্ট করা হয় সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট ফেসবুকে।

১০। অধিকাংশ মানুষই সেলফি পোস্ট করার আগে সেটি এডিট করে নেন।

সেলফির কিছু শিষ্টাচার :
আপনার সেলফিতে অন্যের মুখাবয়ব চলে এলে তার অনুমতি নিন।
সামাজিক রীতি ও প্রচলিত আইন মেনে ছবি তুলুন।
নিজের ও অপরের নিরাপত্তার দিকে মনোযোগ দিয়ে ছবি তুলুন ও পোস্ট করুন, অযথা ঝুঁকি নেবেন না।

অপরের প্রতি সম্মান দেখান, হাস্যরসের নামে অশালীনতা যেন না প্রকাশ পায়।

অন্যের সেলফিতে কটু ও ব্যাঙ্গাত্মক মন্তব্য করবেন না।

সেলফি তোলার সময় আশপাশের মানুষ যেন বিরক্ত না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখুন।

দলবেঁধে সেলফি তোলার সময় অপরের চলার পথ বন্ধ করবেন না।
ভাবগম্ভীর অনুষ্ঠানে সেলফি তোলা থেকে বিরত থাকুন।

সেলফির কারণে অপরের সঙ্গে বিবাদে জড়াবেন না।

সেলফি তোলা, পোস্ট করা ইত্যাদি আপনার কাজ, পড়ালেখা, চাকরি ও প্রিয়জনের সঙ্গে সময় কাটানোকে বিঘ্নিত করছে কি না, সেদিকে খেয়াল রাখুন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top