সকল মেনু

মেঘের গর্জনেই ভোলায় বিদ্যুৎ থাকেনা !

edced667-5c51-4771-ad16-52b15aa23f41 এম. শরীফ হোসাইন, ভোলা : ভোলায় বিদ্যুৎ চলে যায় মেঘের গর্জন শুনলেই। বিদ্যুতের উৎপাদন কেন্দ্র ভোলায় সম্প্রতি বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে জেলার গ্রাহকরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। জেলার ৭ উপজেলায়ই বিদ্যুৎ বিভ্রাট এখন চরম আকার ধারণ করেছে। এখানে বিদ্যুৎ আসে আর যায়। মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার দুপুরে বেশ কয়েকবার বিদ্যুৎ বিভ্রাটে দেখা দিয়েছে।
হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে ভোলা সদর উপজেলার খেয়াঘাট এলাকায় গ্যাস ভিত্তিক ৩৪ দশমিক ৫ মেগাওয়াট রেন্টাল বিদ্যুৎ প্লান্ট স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া বোরহানউদ্দিন উপজেলার কুতুবা ইউনিয়নের গ্যাস ভিত্তিক ২শ’ ২৫ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ প্রায় আড়াই শত মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপন করার পরও জেলায় বিদ্যুৎ বিভ্রাটে কারণে সাধারণ গ্রাহকদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
ভোলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ কর্তৃপক্ষ ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ওজোপাডিকো) বিদ্যুৎ লাইনটি জরাজীর্ণ হওয়ায় সামান্য বৃষ্টি ও বাতাসের অজুহাতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া হয়। অপরদিকে বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্র থেকে সরবরাহ বন্ধ করে দেয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র কর্তৃপক্ষও উৎপাদন বন্ধ রাখে।
ভোলা শহরের কালিবাড়ি রোড এলাকার বাসিন্দা বাহাউদ্দিন ও মশিউর রহমান পিংকু বলেন, “একটু মেঘ ও বাতাস দেখা দিলে ভোলার বিদ্যুৎ বন্ধ হয়ে যায়।” গত মঙ্গলবার রাত প্রায় ৯টার দিকে আকাশে সামান্য মেঘের গর্জনের সাথে সাথে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় এক ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিদ্যুৎ আসে। একইভাবে বুধবার ২য় রোজার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে মেঘের গর্জনের হলে ফের বিদ্যুৎ বন্ধ হয়, বিদ্যুৎ আসে দুপুর ১টায়।
এ ব্যাপারে বিয়ে বাজারের মালিক মোঃ মনিরুল ইসলাম বলেন, “ভোলায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট মেনে নেয়া যায় না।” এখন রোজার মাস, সামনে রোজার ঈদ এভাবে ঘন ঘন বিদ্যুৎ চলে গেলে আমাদের ব্যবসায় বারটা বাজবে। কর্মচারীদের বেতন, নিজের খরচ উঠাবো কি করে। যদি বিদ্যুৎ না থাকে তাহলে ব্যবসা করবো কি করে। ঈদকে সামনে রেখে এখন বাজারে ক্রেতাদের আনাগনা বারতে থাকবে। সামনে জাতে বিদ্যুৎ বিভ্রাট না হয়। সে জন্য বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিদ্যুৎ সচল রাখার জন্য ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানান।
শহরের আলীনগরের ব্যবসায়ী রাছেল বলেন, একটু বৃষ্টি হলেই বিদ্যুৎ চলে যায়। যদি একবার বিদ্যুৎ নিতে পারে, তাহলে ২/১ ঘন্টার মধ্যেও আসে না। কারণ সামনে ঈদ; এভাবে যদি চলতে থাকে তাহলে আমাদের ব্যবসার অনেক ক্ষতি হবে।
এ ব্যাপারে বিদ্যুৎ বিতরণ কেন্দ্র ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো) ভোলার নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী বলেন, “বাতাসের কারণে বিভিন্ন স্থানে গাছ পড়ে বৈদ্যুতের তার ছিড়ে যায়। ফলে বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দেয়।” ভোলার বিদ্যুৎ সংযোগ লাইনটি জরাজীর্ণ থাকার কথা স্বীকার করে তিনি আরো বলেন, “বিদ্যুৎ লাইনটি আন্ডারলাইন হলে এ সমস্যা থাকবে না।” ভোলায় বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ১০ থেকে ১২ মেগাওয়াট।
এ বিষয়ে ভোলার গ্যাসভিত্তিক ৩৪ দশমিক ৫ মেগাওয়াট রেন্টাল বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক হাফিজুর রহমান বলেন, “রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি সচল রয়েছে। তবে, ঝড়-বৃষ্টির কারণে বিদ্যুৎ বিতরণ কেন্দ্র ওজোপাডিকোর বিদ্যুৎ লাইনটি জরাজীর্ণ হওয়ায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দেয়।’ অতিদ্রুত এ সমস্যা সমাধান করা হবেও জানান তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top