সকল মেনু

চলে গেলেন বর্ষীয়াণ বলিউড অভিনেতা প্রাণ

pranbg20130712231421বিনোদন ডেস্ক ,হটনিউজটোয়েন্টিফোরবিডি.কম:বলিউড অভিনেতা প্রাণ,না ফেরার দেশে চলে গেলেন বলিউডের কিংবদন্তী অভিনেতা প্রাণ। দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর ১২ জুন সন্ধ্যায় মুম্বাইয়ের লীলাবতী হাসপাতালে ৯৩ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন বর্ষীয়াণ এই অভিনেতা। শনিবার দুপুর ১২টা নাগাদ মুম্বাইয়ের শিবাজী পার্কে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে।

অভিনেতা প্রাণ ১৯২০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি ভারতের দিল্লিতে জন্মগ্রহণ করেন। পুরো নাম প্রাণ কিষান সিকন্দ। টানা ৬ দশকের দীর্ঘ অভিনয়জীবনে চারশতাধিক ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। ‘জিঞ্জির’, ‘ডন’, ‘অমর আকবর অ্যান্টনি’, ‘উপকার’, ‘পরিচয়’, ‘শরাবি’র মতো ছবিতে অভিনয় করে দর্শকদের মন জয় করেছিলেন তিনি। ২০০১ সালে পদ্মভূষণ পান তিনি। ২০১৩ সালে পান ভারতীয় চলচ্চিত্রের সর্বোচ্চ পুরস্কার দাদা সাহেব ফালকে। স্ত্রী শুক্লা আহলুয়ালিয়া, দুই ছেলে অরবিন্দ ও সুনীল, ও মেয়ে পিঙ্কিকে রেখে গেলেন তিনি।

ছোটবেলা থেকেই অভিনয়ের প্রতি আকর্ষণ ছিল তাঁর। ভাগ্যক্রমেই অবিভক্ত ভারতে লাহোরে দেখা হয়ে যায় লেখক মুহাম্মদ ওয়ালির সঙ্গে। দলসুখ পাঞ্চোলির ‘ইয়ামলা জাট’ ছবিতে ভিলেনের চরিত্রে তিনিই তাকে প্রথম সুযোগ করে দেন অভিনয়ের। স্বাধীনতার আগে ৪ বছরে মোট ১৮টি ছবি মুক্তি পায় প্রাণের। কিন্তু দেশভাগের সময় নতুন রাষ্ট্র পাকিস্তান ছেড়ে ভারতে চলে যেতে হয় তাঁকে।

এরপরই বলিউডের ছবিতে যাত্রা শুরু প্রাণের। ‘আজাদ’, ‘মধুমতী’, ‘দেবদাস’, ‘আদমি’, ‘জিদ্দি’, ‘জিস দেশ মে গঙ্গা বেহতি হ্যায়’ ও ‘আহ’ ছবিতে নেগেটিভ চরিত্রে অভিনয় করে বলিউডে নিজের জায়গা তৈরি করেন প্রাণ। পঞ্চাশের দশকে ‘হলাকু’ ও ‘সিন্দবাদ দ্য সেলর’ ছবিতে মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেন প্রাণ। ‘হাফ টিকিট’ ও ‘বেওয়াকুফ’ ছবিতে কৌতুক চরিত্রে অভিনয় করে নিজের ভার্সাটাইলিটির পরিচয় দিয়েছিলেন তিনি।

এরপরই নিজের ভাবমূর্তি বদলাতে ষাটের দশকের শেষের দিকে পজেটিভ চরিত্রে অভিনয় শুরু করেন ভারতীয় চলচ্চিত্রের এই ব্যাডম্যান। সত্তরের দশকে তিনিই ছিলেন বলিউডের সবচেয়ে দামী অভিনেতা। অমিতাভ বচ্চন, বিনোদ খান্না কেউই তখন প্রাণের পারিশ্রমিকের কাছাকাছি পৌঁছতে পারেননি। জিঞ্জির ছবিতে পাঠান শের খানের চরিত্র তাঁকে কালজয়ী করে রেখেছে। চারশতাধিক ছবিতে অভিনয় করে তিনিই হয়ে উঠেছিলেন ভিলেন অফ দ্য মিলেনিয়াম। তবে ব্যক্তিগত জীবনে কোনোদিনই কোনও বিতর্ক স্পর্শ করেনি তাকে।

‘উপকার’, ‘আঁসু বান গয়ে ফুল’ ও ‘বেইমান’ ছবির জন্য সেরা সহঅভিনেতার ফিল্মফেয়ার পুরস্কার জয়ী হন প্রাণ। ১৯৯৭ সালে পান ফিল্মফেয়ার লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড। ২০০০ সালে জি সিনে অ্যাওয়ার্ডস ও স্টার স্ক্রিন অ্যাওয়ার্ডসও তাঁকে ভূষিত করে লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ডে। ২০০১ সালে পান পদ্মভূষণ। আর সর্বশেষ ২০১৩ সালের ৩ মে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার লাভ করেন তিনি।

সবকিছুকে পেছনে ফেলে প্রাণের জীবনে সবচেয়ে বড় অর্জন হচ্ছে দর্শকদের বিপুল ভালোবাসা ও সহকর্মীদের শ্রদ্ধা। তিনি চলে গেছেন না ফেরার দেশে, তবে সবার ভালবাসায়, স্মৃতিতে থেকে যাবেন ভিলেন অফ দ্য মিলেনিয়াম— শের খান।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top