সকল মেনু

বাজেটে শিক্ষা খাতে ২৭ হাজার টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব

edu-baby_13415হটনিউজ২৪বিডি.কম : আসন্ন ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরের বাজেটে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য সর্বমোট ২৬ হাজার ৮৫৭ কোটি ৭৪ লাখ টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। এবারের প্রস্তাবিত বরাদ্দের ২০ হাজার ৬৯১ কোটি ৫ লাখ টাকা অনুন্নয়ন ও ৬ হাজার ১৬৬ কোটি ৬৯ লাখ টাকা উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ বরাদ্দ গত অর্থবছরের (২০১৫-১৬) সংশোধিত বাজেট ২০ হাজার ২৬৬ কোটি ৯৭ লাখ ৪৫ হাজার টাকার চেয়ে ৫ হাজার ৫৯০ কোটি ৭৬ লাখ ৫৫ হাজার টাকা বেশি। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জাতীয় সংসদে উপস্থাপিত জাতীয় বাজেটে এ প্রস্তাব করেন।

বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, শিক্ষার সুযোগ বাড়াতে ও মানসম্পন্ন শিক্ষার প্রসারে চলতি অর্থবছরেও সরকার বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ, উপবৃত্তি সৃজনশীল মেধা অন্বেষণসহ নানা কার্যক্রম অবাহত রেখেছে। বিদ্যালয়বিহীন ১ হাজার ১২৫টি গ্রামে নতুন প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। সকল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম চালু করে কারিকুলাম প্রণয়ন, বই মূদ্রণ ও শিক্ষক নিয়োগের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ উদ্দেশে নিয়োগ করা হয়েছে ৩৪ হাজার ৮৯৫ জন শিক্ষক।
মাধ্যমিক পর্যায়ে ৫ হাজার ১৭টি বিদ্যালয় পূণঃনির্মাণ ও মেরামতের ফলে বিদ্যালয় ও শিক্ষার্থীর অনুপাত হ্রাস পেয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষায় উপবৃত্তিরভোগীর সংখ্যা ১ কোটি ৩০ লাখে উন্নীত হয়েছে। অন্যদিকে চলতি অর্থবছরে ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে ¯œাতক পর্যন্ত ৩৮ লাখ ১৬ হাজার শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তি প্রদান করা হয়েছে, যার ৭৫ শতাংশই ছাত্রী। কারিগরি ও বৃত্তিমূলক প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ইতোমধ্যে ৭ হাজান ৫শ’তে উন্নীত হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, মানসম্মত শিক্ষার প্রসার ও শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল করে গড়ে তুলতে অভ্যাহত রাখতে চাই সৃজনশীল প্রশ্নভিত্তিক পরীক্ষা পদ্ধতি। এর পাশাপাশি অব্যাহত থাকবে উপজেলা আইসিটি ট্রেনিং, রিসোর্স সেন্টার ও মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্তাপনের মতো চলমান কার্যক্রমসমূহ। বিদ্যালয় নির্মাণে ব্যক্তি উদ্যোগ বাঞ্ছনীয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, সব রকমের বিদ্যালয়ের নির্মাণ কাজ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বর্তমানে ৬৩ হাজার শ্রেণীকক্ষ নির্মাণ প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে সামর্থের ঘাটতি থাকায় আমাদের কার্যক্রম সীমিত। তাই বিদ্যালয় নির্মানে ব্যক্তিখাতে উদ্যোগ বাঞ্ছনীয়।
জরাজীর্ণ বিদ্যালয় সংস্কারের কথা উল্লেখ করে মুহিত বলেন, প্রাথমিক থেকে সব পর্যায়ের অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। শিক্ষার প্রসারের সার্থে অনেক স্তানে কুঁেড়ঘরেও বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। এসব জরাজীর্ণ বিদ্যালয় সংস্কারের জন্য ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বাজেটে ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। এ জন্য একটি নীতিমালা শিগগিরই প্রণয়ন করা হবে।

অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতায় বলেন, শিক্ষাক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করতে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট ফান্ড থেকে গরীব মেধাবী শিক্ষার্থী ও দুস্থ শিক্ষকদের এককালীন অনুদান প্রদান অব্যাহত থাকবে। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য অটিস্টিক একাডেমি গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এছাড়া শিক্ষার অবকাঠামো ডিজাইনে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের বিষয়ে যথাযত গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। উচ্চশিক্ষার প্রসারের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ইতোমধ্যে কয়েকটি বিশেষায়িত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। প্রক্রিয়াধীন রয়েছে আরো কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের কাজ।

শিক্ষা সহায়তার প্রসঙ্গ এনে অর্থমন্ত্রী বলেন, আগামী বাজেটে বেসরকারি শিক্ষকদের কল্যণে ‘বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অবসর সুবিধা বোর্ড’ এর অনুকূলে ৫০০ কোটির টাকার এনডাওমেন্ট ফান্ড এবং ১০০ কোটি টাকার এককালীর অনুদান প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের কল্যাণ ট্রাস্টের অনুকূলে এককালীন ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।
এদিকে আসন্ন নতুন অর্থবছরের জন্য ৩ লাখ ৪০ হাজার ৬০৫ কোটি টাকার নতুন বাজেট উপস্থাপন করছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যয় বিদায়ী ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরের মূল বাজেটের চেয়ে সাড়ে ১৫ শতাংশ এবং সংশোধিত বাজেটের চেয়ে ২৯ শতাংশ বেশি। এবারের বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি- এডিপিতে বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে ১ লাখ ১০ হাজার ২৬৪ কোটি টাকা। এতে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে- ২ লাখ ৪৩ হাজার কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা ৭.২ শতাংশ।

এবারের বাজেটে সর্বোচ্চ বরাদ্দ প্রদানের প্রস্তাব করা হয়েছে যোগাযোগ অবকাঠামো খাতে, যার পরিমান ২৮ হাজার ৫৫৪ কোটি টাকা। অবশ্য এবার নতুন ভ্যাট আইন পুরোপুরি কার্যকর হচ্ছে না। স্টেক হোল্ডারদের তীব্র আন্দোলনের মুখে বহাল থাকছে প্যাকেজ ভ্যাট। এছাড়া এবারের বাজেটে করমুক্ত আয়সীমা ২ লাখ ২০ হাজারই রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। অর্থমন্ত্রী সংসদে যে বাজেট প্রস্তাব তুলে ধরেছেন, তাতে আয় ও ব্যয়ের হিসাবে সামগ্রিক ঘাটতি থাকছে ৯৭ হাজার ৮৫৩ কোটি টাকা। অবশ্য ঘাটতির এ পরিমাণও মোট জিডিপির ৫ শতাংশের মধ্যেই থাকছে, যা অর্থনীতির বিবেচনায় সহনীয় বলে ধরা হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top