সকল মেনু

অনলাইন গণমাধ্যম ও কিছু কথা

 10858100_10203174852277712_6492886182846950828_nসমীরণ রায়: অনলাইন গণমাধ্যম নিয়ে আমার লেখার কোনো আগ্রহ ছিল না। তার পরেও আমার অগ্রজ আছাদুজ্জামান ভাই বলেছেন, না লিখে কোনো উপায় নেই। তাঁর হটনিউজ২৪বিডিডটকম নামে একটি অনলাইন নিউজপোর্টাল রয়েছে। যদিও অন্য পাঁচটা অনলাইনের মতো সাধারণ পাঠকদের নজর কাড়তে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। তবে সাংবাদিক সমাজে নিউজ পোর্টালটির শুনাম রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির গত ৪র্থ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতেও আমার সরব উপস্থিতি ছিল। আগামী ১ জুন প্রতিষ্ঠানটির ৫ম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী। আছাদ ভাই আমাকে অনেক আগে থেকেই বলে রেখেছেন, তার প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে থাকতে হবে। আমার বিবেক নাড়া দেয়। তাই না থেকে কোনো উপায় নেই। এই সংবাদপত্র জগতে অনেকের সঙ্গেই পরিচয় ঘটেছে আছাদ ভাইয়ের হাত ধরে। তাছাড়াও সাংবাদিকদের অধিকার ও রুটি-রুজির আন্দোলনে এক সঙ্গে আছি। তিনি সাংবাদিকদের সুখে-দুঃখে পাশে থাকার এক অগ্রনী সৈনিক।
সম্প্রতি অনলাইন গণমাধমের ছোয়া লেগেছে দেশ জুড়ে। বাংলাদেশে যে কত হাজার অনলাইন রয়েছে তার কোনো ইয়াত্তা নেই। কিন্তু এই ভিরে আছাদ ভাইয়ের প্রতিষ্ঠানটি টিকিয়ে রাখাটা কতটা কষ্টের তা সবার অনুমেয়। হটনিউজ২৪বিডিডটকম-এর সঙ্গে আমার একটা নিবীর সম্পর্ক রয়েছে। সে কথা বলতে গেলে অনেক কথা এসে যাবে। সে দিকে যেতে চাই না। অনলাইন গণমাধ্যমে আমার কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে। তবে দু’একটি অনলাইন ছাড়া আর সবকয়টির ক্ষেত্রেই দেখা যায় ভিন্নচিত্র। নতুন গজিয়ে উঠা কিছু কিছু অনালাইন গণমাধ্যম অযথাই হয়রানি করে সংবাদকর্মীদের। তারা খবরটি আগে কিভাবে ছাপানো যায়, সে দিকে নজর রাখে। কিন্তু সংবাদটি কতটুক সত্য ও বস্তু নিষ্ঠ তা বিবেচনা করে খুব কম ক্ষেত্রে। অহেতুক কিছু কিছু সংবাদ প্রকাশ করে সংবাদকর্মীদের বিব্রত করা হয়। তাছাড়া যে কোনো সংবাদই কারো না কারো পক্ষে বা বিপক্ষে যায়। এ সংবাদের সঙ্গে যারাই জড়িত থাকেন তারাও বিব্রত হন। এগুলো বেশিরভাগ অনলাইনের ক্ষেত্রেই হয়। এছাড়াও নিয়মিত বেতন-ভাতা পরিষোদ না করা, যখন তখন চাকরিচ্যুত করা তো আছেই। তাদের উদ্দেশ্য কতগুলো লাইক, শেয়ার হলো। এই লাইক, শেয়ারের কারণে একটি দেশ, প্রতিষ্ঠান বা কোনো ব্যক্তির চরম ক্ষতি হয়ে যেতে পারে তা বিবেচনা করা হয় না। আমার গণমাধ্যম জীবনে ৯ বছরের মধ্যে প্রায় আড়াই বছর অনলাইন গণমাধ্যমে কেটেছে। তাই অনলাইন
সম্পর্কে আমার অভিজ্ঞতা কিছুটা আছে।
বর্তমান সরকারে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি। কিন্তু এই সরকারকে বিব্রত করার জন্য একটি গোষ্ঠি এমন কোনো কাজ নেই যা করছে না। এমন কোনো অপ-প্রচার নেই যা চালানো হয় না। কিন্তু এ ক্ষেত্রে গণমাধ্যমকর্মীদের ভূমিকা কতটুকু তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে অনেকেরই। কেউ কেউ মিথ্যা খবর ছাপিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দেবার চেষ্টা করেছে বলে বিভিন্ন সময় অভিযোগ উঠেছে। তারা সত্য সংবাদটিকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করেছেন। কিন্তু অনেকে মনেই করেন না ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর গণমাধ্যম স্বাধীনতা ভোগ করছে। বেরেছে তথ্য ও প্রযুক্তির অবাধ প্রবাহ। যা ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অঙ্গিকার ছিলো ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার’। তারই ধারাবাহিকতায় আজ বিশ্বের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশে হাজার হাজার অনলাইন গণমাধ্যম রয়েছে। তাই সবারই চোখ কান খোলা রাখতে হবে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যে গোষ্ঠী অপ-প্রচার চালায়, তাদের বিরুদ্ধে গণমাধ্যম ও গণমাধ্যমকর্মীদের সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। এর ব্যত্তয় ঘটলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি টিকে থাকা আদৌ সম্ভব হবে কি না তা ভেবে দেখা খুবই জরুরি।
এদিকে, অনলাইন গণমাধ্যমের জন্য নীতিমালা প্রণয়নে সরকার উদ্যোগ নিয়েছে। এ জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। তবে আমার যতটুকু মনে পড়ে মাননীয় তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছিলেন, অনলাইনের নীতিমালা চূড়ান্ত হয়ে গেছে। খুব শিগগিরই এর খসড়া প্রকাশ করা হবে। কিন্তু তথ্যমন্ত্রী এখনও তা পারেননি। এই নীতিমালাটি চূড়ান্ত হলে সংবাদকর্মীরাও যেমন সুবিধা পেতেন। প্রতিষ্ঠানের মালিকরাও সুবিধা পাবেন। অনলাইন নিবন্ধন প্রক্রিয়া হাতে নিয়েছেন তিনি। তাও কেন যেন স্থিতিশীল হয়ে পড়েছে। নাকি এখানে অন্য কোনো ষড়যন্ত্র রয়েছে। এ নিয়ে সাংবদিক সমাজে প্রশ্ন উঠেছে। যাক মাননীয় তথ্যমন্ত্রী আপনাকে সবিনয়ে বলতে চাই, মূখে বড় বড় বুলি না আউড়িয়ে সংবাদকর্মীদের নিয়ে ভাবুন। আপনার বক্তৃতা বিবৃতিতে যতটুকু মনে হয়, আপনি ব্যস্ত মন্ত্রীত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য। সাংবাদিকদের নিয়ে আপনার ভাববার সময় কোথায়! তাই বলি সাংবাদিকদের কথা ভাবুন। তাহলেই মন্ত্রীত্ব থাকবে। আজকে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি। সরকারি চাকরি জীবীদের বেতন-ভাতা বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। কিন্তু সাংবাদিকদের এক টাকাও বাড়েনি। তাছাড়াও কোনো কোনো গণমাধ্যম বেতন-ভাতা ঠিক মত দেয় কি না তার খোজ রাখেন? আমার মনে হয়, রাখেন না! আর
যদি রাখতেন, মুখে বড় বড় কথা না বলে সাংবাদিকদের জন্য কাজ করতেন। আজকে সংবাদপত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নবম ওয়েজ বোর্ড রোয়েদাদের দাবি তুলেছেন। তাই সরকার ও মালিক পক্ষের সঙ্গে কথা বলুন। নবম ওয়েজ বোর্ড দেয়ার ব্যবস্থা করুন। তাহলেও আপনার মন্ত্রীত্ব সফল ও স্বার্থক হবে। তা না হলে জেনে রাখবেন ‘এক মাঘে শীত যা না।’
হটনিউজ২৪বিডিডটকম-এর ৫ম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে শুভেচ্ছা। পাশাপাশি আশা করি হটনিউজ২৪বিডিডটকম-গণমাধ্যমের নীতি নৈতিকতার বিরুদ্ধে যাবে না। দেশবিরোধী কোনো ষড়যন্ত্রের সঙ্গে আতাত করবে না। একটি অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলা গড়ার প্রত্বয়ে এগিয়ে যাবে দূড়ন্ত গতিতে। জয়তু হটনিউজ২৪বিডিডটকম….।
লেখক: সাংবাদিক,

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top