সকল মেনু

নারীর ক্ষমতায়নের সঙ্গে অর্থে অভিগম্যতা বাড়েনি

43নিজস্ব প্রতিবেদক, হটনিউজ২৪বিডি.কম ৩০ মে :  বিস্ময়করভাবে নারীর ক্ষমতায়ন বেড়েছে। গত এক দশকে বাংলাদেশের এ উত্থান সারা দুনিয়ার মানুষের নজরে এসেছে। তবে অর্থনৈতিক দিক দিয়ে নারীর অভিগম্যতা সেভাবে বাড়েনি। যা প্রকৃতপক্ষে টেকসই নারী ক্ষমতায়ন।

নারীর আর্থিক নিরাপত্তা কতটা বেড়েছে, তা নিয়ে এখনও যথেষ্ট প্রশ্ন আছে। স্বাধীনভাবে নারী সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার কতটা পাচ্ছে তাও ভাবার বিষয়।

কর্মক্ষেত্রে আর্থিক ব্যবস্থাপনায় নারী কতটা দায়িত্ব পালনের সুযোগ পাচ্ছে, রাজনীতিতে ও প্রশাসনে ক্ষমতায়ন কতটা বেড়েছে তা হিসেব মিলিয়ে দেখার সময় এসেছে। প্রশাসনের উঁচু পদে নারীর সংখ্যা কত, আর নিচ পদে নারীর সংখ্যা কত, তাও আজ ভাবতে হবে।

নারীর ক্ষমতায়ন হতে হলে পরিবার থেকে কর্মক্ষেত্র, তৃণমূল থেকে প্রশাসন পর্যন্ত অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীকে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জায়গায় পৌঁছুতে হবে। রাষ্ট্র ও সমাজের প্রতিটি স্তরে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীকে টেকসই অবস্থানে যেতে হবে।

রাজনীতি ও প্রশাসনসহ সবখানে সক্ষমতা দেখাতে পারলেই বলা যাবে নারীর ক্ষমতায়ন হয়েছে। যদিও টেকসই অবস্থানে পৌঁছুতে হবে নারীকেই।
কথায় কথায় বলা হয়, নারীকে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা দিতে হবে। আসলে নারী তখনই সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা পাবে, যখন সে সক্ষমতা অর্জন করবে এবং তা আদায় করে নেওয়ার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করবে। স্বাভাবিকভাবে একজন পুরুষ যত সহজেই নিজেকে প্রস্তুত করতে পারে একজন নারীর পক্ষে তা সম্ভব হয় না, পারিবারিক ও সামাজিক বাধার কারণে।

অবশ্যই এ লড়াই নারীর একার নয়, পুরুষকেও এ লড়াইয়ে শামিল হতে হবে এ লড়াইয়ে পরিবারকে পাশে থাকতে হবে। রাজনীতি, প্রশাসন বা কর্মক্ষেত্র নারীর অংশগ্রহণই নারী ক্ষমতায়ন নয়। এ ক্ষেত্রে নারী কতটা সফলভাবে তার ভূমিকা পালন করতে পারছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারছে, সেটাই আসল কথা। একজন নারী নিজে আর্থিকভাবে কতটা সমলম্বী তা নারী ক্ষমতায়নের মূল বিষয়।

‘ক্ষমতা নারীর, আর অর্থ পুরুষের’ তবে তাকে নারী ক্ষমতায়ন বলা যাবে না। অর্থে নারীর অভিগম্যতা থাকতে হবে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীর স্বাধীন মতামতের মূল্য থাকতে হবে। তাহলেই বলা যাবে নারীর ক্ষমতায়ন হয়েছে।

অর্থে অভিগম্যতা কীভাবে নারীর স্বাধীন মতামত প্রতিষ্ঠা করতে পারে তার উদাহরণ দেশে আছে। আবার কর্মজীবী নারীর আর্থিক ক্ষমতা পরিবার বা সমাজে টেকসই হচ্ছে না তারও উদাহরণ আছে।

একজন নারীর অর্থে অভিগম্যতা নিয়ে কুসংস্কার থাকলেও ধর্মে এর বাধা নেই। পবিত্র কুরআন শরিফে স্পষ্ট বলা হয়েছে, পুরুষ যা অর্জন করে সেটা পুরুষের এবং নারী যা অর্জন করে সেটা নারীর। আয় পুরুষের। (সূরা ৪ : ৩২)। শুধু তাই নয়, ইসলাম নারীকে মত প্রকাশেরও স্বাধীনতা দিয়েছে।

বাংলাদেশের সংবিধানের ২৯নং অনুচ্ছেদ বলা হয়েছে- ; ‘রাষ্ট্রের কর্মে নিয়োগ লাভের ব্যাপারে সব নাগরিকের সমান সুযোগ থাকবে এবং কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী-পুরুষ ভেদ বা জন্মস্থানের কারণে কোনো নাগরিক রাষ্ট্রের কর্মে নিয়োগ বা কর্ম লাভের অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন না অথবা তার প্রতি বৈষম্য প্রদর্শন করা যাবে না।’

তাহলে কোন কারণে রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশ গ্রহণে বিরূপ অবস্থার সৃষ্টি হয়? আসলে জেন্ডার বৈষম্যই মূল বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। নারীদের পুরুষের স্বার্থে ব্যবহারের আত্মঘাতী চিন্তা এ অবস্থার সৃষ্টি করছে।
হটনিউজ২৪বিডি.কম/এআর

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top