সকল মেনু

সোনাগাজীতে রোয়ানু, পানিতে ঢুবে এক যুবকের মৃত্যু

3নিজস্ব প্রতিবেদক, হটনিউজ২৪বিডি.কম ২২ মে : ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার উপকুলীয় চরচান্দিয়া এলাকায় ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর প্রভাবে জোয়ারের পানিতে ডুবে নুরুল আলম (৩৫) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এসময় পানির তোড়ে অজ্ঞাত ২ ব্যাক্তি নিখোঁজ হলেও পরে তাদের পাওয়া যায়। জোয়ারের পানিতে সোনাগাজী উপজেলার উপকুলীয় এলাকার ৫টি গ্রামসহ নিচু এলাকা গুলো প্লাবিত হয়েছে। প্রায় ২ হাজার লোক আশ্রয় কেন্দ্র গুলোতে আশ্রয় নিয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের জন্য শুকনো খাবার ও ওষুধের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
জানা যায়, শনিবার দুপুরে ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর প্রভাবে সোনাগাজী উপজেলার উপকুলীয় এলাকায় বাতাসের গতিবেগ বৃদ্ধি পেয়ে জোয়ারের সঙ্গে ৪ থেকে ৫ ফুট উচ্চতায় পানি উঠে পড়ে। সোনাগাজীর উপকুলীয় চরচান্দিয়া এলাকার নুরুল আলম (৩৫) নামে এক যুবক শনিবার দুপুরে মহিষ আনতে মাঠে যায়। এসময় জোয়ারের পানির তীব্র স্রোতে পড়ে তার মৃত্যু হয়। এ সময় পানির তোড়ে অজ্ঞাত ২ ব্যাক্তি নিখোঁজ হয়। কয়েক ঘন্টা পর তাদের খুঁজে পাওয়া যায়।
জোয়ারের পানিতে চর খোন্দকার, জেলে পাড়া, দক্ষণ চর চান্দিয়া, বেড়িবাঁধের বাইরের অংশ ও চর আবদুল্লাহ, চর এলেন, চর বাহির, চর রাম নারায়ণ, চর নাসরিন ও নতুন চর এলাকাসহ নিচু এলাকা গুলো প্লাবিত হয়।
রেড ক্রিসেন্ট, সিপিপি আনসার সদস্য ও জনপ্রতিনিধিরা প্লাবিত এলাকার লোকজন ও গবাদি পশুকে উদ্ধার করে পূর্ব চর চান্দিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ অন্যান্য আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যায়।
এদিকে প্লাবিত এলাকার বাড়ি-ঘরে জোয়ারের পানি প্রবেশের পাশাপাশি কৃষি জমি ও মাছের ঘের তলিয়ে গেছে। ভেঙে পড়েছে রাস্তা গাছপালা।
স্থানীয় রমা রাণী দাস ও দীপা রাণী দাস বলেন, ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর থেকে নিরাপদে আশ্রয়ে আসার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করে জানানো হলেও ঘর বাড়ীর মায়া ছেড়ে আসতে মন চায় না। হঠাৎ করে পানি বেড়ে ঘরবাড়ী ডুবে যাওয়ায় না এসে পারলাম না।
আবু তাহের জানান, ঘূর্ণিঝড় ও জলচ্ছাস দেখতে দেখতে আমরা অভ্যস্ত। ভয় পাই না, তাই আশ্রয় কেন্দ্রেও যাই না। যা হবার তা বাড়ীতেই হবে।
দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট, সিপিপি, আনসার ও অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রায় সাড়ে ১৪শ সেচ্ছাসেবক উদ্ধার কাজে নিয়োজিত আছে। তারা নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার জন্য মাইকিং করে জনগণকে সতর্ক করছে।
সিপিপি ১৪ নং গ্রুপ লিডার মোঃ নুর আহম্মদ জানান, ঘূর্ণিঝড় রোয়ানু আসছে ঘোষণা করে মাইকিং করে সতর্ক করলেও কেউ আশ্রয় কেন্দ্রে আসতে চান না। হঠাৎ জোয়ারে পানি ৪/৫ ফুট উঠে গেলে লোকজন আসতে শুরু করে।
ফেনীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোঃ আবুল হাশেম জানান, ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর প্রভাবে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তবে ঝড়ে কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা এখনো জানা যায়নি।
ফেনী জেলা প্রশাসক মোঃ আমিন উল আহসান জানান, ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর প্রভাবে পানি উঠে যারা সাইক্লোন সেন্টার গুলোতে আশ্রয় নিয়েছে তাদের জন্য শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। উপকূলীয় এলাকার লোকজন বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধদেরকে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদেরকে নির্দেশনা হয়েছিল সে মোতাবেক কাজ করেছে। দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট, সিপিপি, আনসার ও জনপ্রতিনিধি ছাড়াও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবক দল কাজ করছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল কাজ মনিটরিং করা হচ্ছে।

হটনিউজ২৪বিডি.কম/এআর

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top