সকল মেনু

পার্বতীপুরে বাঙ্গালী-আদিবাসী সংর্ঘষে ১১ জন আহত

56c95b59-162b-4700-88b4-b9c99e44b48b রাইসুল ইসলাম,পার্বতীপুর,দিনাজপুর: দিনাজপুরের পার্বতীপুরে সমতলের আদিবাসী (সাঁওতাল) ও বাঙ্গালী জনগোষ্ঠীর মধ্যে উভয়পক্ষের সংঘর্ষে নারীপুরুষসহ ১১ জন আহত হয়েছে। সীমানা প্রাচীর নির্মানকে কেন্দ্র করে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে পার্বতীপুর উপজেলার মোমিনপুর ইউনিয়নের মোমিনপুর কাউহা টোলা গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে আহত একরামুল হক তীরবিদ্ধ (৫৫), মানিক (২৪), রেজিয়া বেওয়া (৪৫), জাহাঙ্গীর আলম (২৬), আনজুয়ারা (৪৫), শাহেরা বেগম (৬৬), শোবেদা বেগম (৭০) হোপনা মুর্মু (৪৮), সরলা হেমরন (৫৪), লক্ষ্মী রাম হাসদা (৪৫) মালতি হাসদাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এঘটনায় একরামুল হক বাদী হয়ে পার্বতীপুর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। অন্যদিকে, একই ঘটনার প্রতিবাদে জাতীয় আদিবাসী পরিষদ শুক্রবার দুপুরে পার্বতীপুরে মানববন্ধন করে।
একরামুল হকের মামলা সূত্রে জানা যায়, মোমিনপুর মৌজার ৬৯২ দাগে ক্রয়সূত্রে ২১ শতক জমিতে গুদাম ঘর ও বসতবাড়ী নির্মাণ করে দীর্ঘদিন বসবাস করে আসছেন একরামুল হক। চলতি ভূমি জরিপ চলাকালে ২১ শতক জমি তার নামে রের্কডভূক্ত হয়। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে একরামুল হকের লোকজন বাড়ীর সীমানা প্রাচীর নির্মানের সময় একই গ্রামের আদিবাসী (সাঁওতাল) হোপনা মুর্মূ ও তার আত্মীয় স্বজন তীর-ধনুক ও লাঠি সোটা নিয়ে তাদের উপর হামলা চালায়। এতে একরামুল হক তীরবিদ্ধ হন। এছাড়াও একরামুল হকের স্ত্রী, মা, শাশুড়ী, বোন, শ্যালকসহ ৭জন আহত হন। একই ঘটনায় হোপনা মুর্মূ (৪৮), তার বৌদি সরলা মুর্মূ (৬০), ভাতিজী বৌ মালতি বাসকে (৪০) ও তার ভাই লক্ষী রাম হাসদা (৪৫) আহত হন বলে এসব আদিবাসীর পরিবার দাবী করেন।
আজ শুক্রবার বিকেলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্স হাসপাতালে দেখা করতে গেলে, হোপনা মুর্মূ স্বীকার করেন, তার নামে ওই জমির মালিকানার কোন কাগজপত্র নেই। দেশবিভাগের (ভারত-পাকিস্তান) সময় এই জমির মালিক চার ভাই উমাপদ চাকী, কালীপদ চাকী, শরৎচন্দ্র চাকী ও দ্বারকানাথ চাকী ভারতে চলে যাওয়ার সময় ওই জমিতে তাদেরকে বসবাসের অনুমতি দিয়ে যান। সেই সময় থেকে তারা সেখানে বসবাস করছেন বলে দাবী করেন।
অন্যদিকে, একরামুল হক বলেন, কালীপদ চাকী ও তার ভাইয়েরা দেশ ছেড়ে চলে গেলেও তার অংশীদাররা এখনও ওই গ্রামে বসবাস করছেন। তারা জমিটি বিক্রি করায় তিন দফা হাত বদল হয়েছে। বর্তমানে জমির খারিজ, খাজনা ও রের্কড আমার নামে রয়েছে। এখানে আদিবাসীদের কোন স্বত্ব নেই। তারা যা করছে, সব গায়ের জোরে।
বাঙ্গালী-আদিবাসী বিরোধের ব্যাপারে মোমিনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাব মন্ডল বলেন, একরামুল হকের নামে জমির মালিকানার বৈধ দলিলপত্র রয়েছে। অন্যদিকে, আদিবাসীদের জমির মালিকানা সংক্রান্ত কোন কাগজপত্র নেই। তারপরও আদিবাসীরাই ওই জমি নিয়ে বার বার জটিলতা সৃষ্টি করে আসছেন।
পার্বতীপুর মডেল থানার পরির্দশক (তদন্ত) বেলাল হোসেন বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় গত দুই দিনে উভয় পক্ষ থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছেন। তবে ঘটনাস্থলের পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ রয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে সংঘর্ষে ব্যবহৃত ৬টি তীর ও ধনুক জব্দ করা হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top