সকল মেনু

যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকে বাধাগ্রস্থ করতেই এসব ঘটানো হচ্ছে

pm-office1_10975

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশে সব ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দৃঢ় অঙ্গীকার পুনব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সাম্প্রতিক গুপ্তহত্যায় জড়িতদের বিচারের মুখোমুখি করা হবে। তিনি বলেন, বিছিন্ন যে ঘটনাগুলো ঘটেছে সেগুলো পরিকল্পিত। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচালের ষড়যন্ত্রেই এসব ঘটানো হচ্ছে। কিন্তুু, যারা এ ধরনের কর্মকান্ড ঘটিয়েছে তাদের এরই মধ্যে আমরা গ্রেফতার করতে শুরু করেছি। তাদের অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি করা হবে। বৃহস্পতিবার রাতে বুলগেরিয়ার রাজধানী সোফিয়ায় হোটেল মারিনেলায় বুলগেরিয়ায় বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীদের প্রতিনিধিরা সাথে সাক্ষাতের সময় তিনি এসব কথা বলেন। এসময় অন্যান্যের মধ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকী উপস্থিত ছিলেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর উপপ্রেস সচিব নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

২০১৩ এবং ২০১৪ সালে এবং গতবছরের প্রথম ৩মাস সারাদেশে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস, নৈরাজ্যের চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অশুভ চক্র সারা দেশে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করে,মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ এবং ৫ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচন পন্ড করার ষড়যন্ত্র করেছিল। কিন্তুু, বর্তমান সরকার শক্ত হাতে এই ঘৃণ্য অপরাধ দমন করতে সমর্থ হয়। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীকে প্রবাসী বাংলাদেশীদের ধন্যবাদ জ্ঞাপনের জবাবে তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই প্রথম ১৯৭৩ সালে দেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করেছিলেন।

বঙ্গবন্ধু হত্যাসহ-পরবর্তী বাংলাদেশের পরিস্থিতিতে দু:খ প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যা করার পর অবৈধভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলকারীরা সেই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়। শুধু তাই নয়, সেই পরবর্তী সরকারগুলো কারাগারে থাকা যুদ্ধাপরাধীদের মুক্ত করে দিয়ে তাদের রাজনৈতিকভাবে পুনর্বাসিত কর। তাদের মধ্য থেকে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রীও বানায়। দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার আবার সেই বিচার প্রক্রিয়া শুরু করে। যদিও অনেকেই এই বিচার নিয়ে সন্দিহান ছিলেন।

সংসদ নেতা বলেন, আমরা ইতোমধ্যেই আদালতের রায়ে যাদের ফাঁসি হয়েছে তাদের শাস্তি নিশ্চিত করেছি। যারা পালিয়ে বেড়াচ্ছে তাদের আমরা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। তিনি বলেন, এদের বিচারে আমরা বিশেষ কোনো বিশেষ ট্রাইব্যুনাল করিনি। স্বাভাবিক বিচার ব্যবস্থায় বিচার করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের দীর্ঘ ইতিহাস প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পঁচাত্তর-পরবর্তী সরকারগুলো ইতিহাস বিকৃতির ষড়যন্ত্র করে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের মহান আত্মত্যাগ এবং সংগ্রামের ইতিহাসকে ধূলিস্যাৎ করার ষড়যন্ত্র করে। তিনি বলেন, তারা দীর্ঘদিন নতুন প্রজন্মকেও স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস জানতে না দিয়ে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা করেছিল। তিনি বলেন, নতুন প্রজন্ম যেন স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারে সেজন্য তাঁর সরকার প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে ।

আওয়ামী লীগ প্রধান বৈঠকে সোফিয়াতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীদের নানা সমস্যার কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং শীঘ্রই বুলগেরিয়াতে তারা যাতে কনস্যুলার সার্ভিস সুবিধা পান- সংশ্লিষ্টদের সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করেন। এ সময় বাংলাদেশের বুলগেরিয়াস্থ রাষ্ট্রদূত আল্লামা সিদ্দিকী আসছে জুনের মধ্যে বুলগেরিয়ায় প্রবাসীদের ভিসাসহ অন্যান্য সমস্যা সমাধান কনস্যুলার টিম প্রেরণ করে কনস্যুলার সার্ভিস চালুর আশ্বাস দেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বুলগেরিয়ার সর্বাত্মক সহযোগিতার কথাও স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। বুলগেরিয়া বিশ্বে চতুর্থ দেশ হিসেবে স্বাধীনতার পর বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করেছিল।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top