সকল মেনু

অধ্যাপক রেজাউল হত্যায় চার জেএমবি: আরএমপি

৮নিজস্ব প্রতিবেদক, হটনিউজ২৪বিডি.কম ১৮ মে : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. এ এফ এম রেজাউল করিম সিদ্দিকী মুকুল হত্যায় ‘জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) জড়িত। এই হত্যার মিশনে অংশ নেয়া চার কিলারের মধ্যে তিনজন সরাসরি অংশ নিয়েছে। অপর একজন মোটরসাইকেল নিয়ে অপেক্ষা করছিল। সরাসরি অংশ নেয়া তিনজনের একজন মাসকাওয়াদ হাসান সাকিব ওরফে আবদুল্লাহকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি তিনজনসহ হত্যার পরিকল্পপনাকারীদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় রাজশাহী মেট্টোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) সদর দফতরের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আরএমপি কমিশনার মো. শামসুদ্দিন এসব তথ্য জানান।

আরএমপি কমিশনার আরো জানান, অধ্যাপক রেজাউল করিম হত্যায় সরাসরি অংশ নেয়া জেএমবি ক্যাডার আব্দুল্লাহর দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার দিবাগত রাতে রাজশাহী থেকে অধ্যাপক রেজাউল করিমের হত্যাকারীদের তিনজন সহযোগীকে নগরী থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারাও জেএমবি সক্রিয় সদস্য। অধ্যাপক রেজাউল হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তারা সহায়তা ও আশ্রয়দানকারী। তদন্তের স্বার্থে গ্রেফতারকৃত তিনজনের নাম-পরিচয় প্রকাশ করা যাচ্ছে না। এছাড়া হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামিদের বাড়ি থেকে ১টি চাপাতি ও ১টি ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে।

তবে আসামি আবদুল্লাহর দাবি, উদ্ধার হওয়া চাপাতি ও ছুরি অধ্যাপক রেজাউল করিম হত্যায় ব্যবহৃত হয়নি। তার হত্যাকাণ্ডে অন্য চাপাতি ব্যবহার করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরএমপি কমিশনার বলেন, আমরা মূল জায়গায় হাত দিয়েছি। অধ্যাপক রেজাউল করিম হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশগ্রহণকারী জেএমবি ক্যাডার মাসকাওয়াত হাসান সাকিব ওরফে আবদুল্লাহকে ১৫ মে দিবাগত রাতে গাইবান্ধা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরদিন ১৬ মে বিকেলে তাকে রাজশাহীর মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দ্বিতীয় আদালতে হাজির করা হয়। এসময় আসামি আব্দুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দ্বিতীয় আদালতের বিচারক খালেদ হোসেন খান জবানবন্দি রেকর্ড শেষে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

কে এই আব্দুল্লাহ?

জেএমবি’র সক্রিয় সদস্য মাসকাওয়াত হাসান ওরফে সাকিব ওরফে আব্দুল্লাহ ওরফে মাসুদের বাড়ি বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার সাজুরিয়া গ্রামে। তার পিতার নাম আব্দুল ওয়াহেদ। তিনি রংপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ছাত্র। তাকে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থেকে ১৫ মে গ্রেফতার করা হয় বলে আরএমপি কমিশনার মো. শামসুদ্দিন জানান।

১৬ মে বিকেলে রাজশাহীর মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রদত্ত স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে মাসকাওয়াত বলেছেন, অধ্যাপক হত্যাকাণ্ডে তিনি সরাসরি জড়িত ছিলেন। তার সঙ্গে আরো দুইজন অংশ নিয়েছিলেন। তবে ওই দুইজনকে তিনি চেনেন না। জেএমবির হাই কমান্ডের নির্দেশে তিনি এই হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েছিল বলে জানায়।

ইতোপূর্বে যারা গ্রেফতার

এর আগে অধ্যাপক রেজাউল করিম হত্যা মামলায় তিনজনকে গ্রেফতার ও রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। এরা হলেন- বাগমারায় অধ্যাপক রেজাউল করিমের নিজ গ্রাম দরগামাড়িয়ার মাদ্রাসার শিক্ষক ও মসজিদের ইমাম রায়হানুল হক, নগরীর ১৯ নং ওয়ার্ড ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি ও রাবির লোকপ্রশসন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী হাফিজুর রহমান ও শিবির কর্মী খায়রুল ইসলাম।

রাবি ক্যাম্পাসে চারমন্ত্রী
অধ্যাপক রেজাউল হত্যার পর থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অব্যাহত আন্দোলনের মুখে গত শনিবার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আসেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমসহ পুলিশের মহাপরিদর্শক একেএম শহিদুল ইসলাম। এরপরদিন রাবি ক্যাম্পাসে আসেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম। তারা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে সূধী সমাবেশে ঘোষণা দেন অধ্যাপক রেজাউল হত্যার সঙ্গে জড়িত আসামিদের শিগগিরিই আদালতে হাজির করা হবে। এই ঘোষণার একদিন পরই সোমবার বিকেলে মাসকাওয়াত হাসান সাকিব ওরফে আব্দুল্লাহ নামে এক জেএমবি সদস্যকে আদালতে হাজির করা হয়। তিনি আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেছে।

প্রসঙ্গত, গত ২৩ এপ্রিল সকাল সাড়ে ৭টার দিকে নগরীর শালবাগান এলাকার নিজবাসার অদূরে অধ্যাপক রেজাউল করিমকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় তার ছেলে রিয়াসাত ইমতিয়াজ সৌরভ অজ্ঞাত দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন।
হটনিউজ২৪বিডি.কম/এআর

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top