সকল মেনু

ইউএনও’র ওপর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে : নৌমন্ত্রী

৪৭নিজস্ব প্রতিবেদক, হটনিউজ২৪বিডি .কম ৭ মে : পরশুরামে ইউএনও’র উপর হামলা প্রসঙ্গে নৌ পরিবহন মন্ত্রী মো. শাহজাহান খান বলেছেন, এটা একটা অনাকাঙ্খিত ঘটনা। এজন্য আমি ব্যাক্তিগতভাবে এবং আমরা মর্মাহত এবং দুঃখিত। এটা কোন ক্রমে আমরা সমর্থন করতে পারি না। আমরা বলেছি যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে আইনগতভাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য।

শুক্রবার বিকালে ফেনীর হাসপাতালে ইউএনও এএইচএম রাকিব হায়দারকে দেখতে গিয়ে একথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, তিনি (ইউএনও) প্রটোকলে ডিউটি করছেন। ডিউটি অবস্থায় এধরনের ঘটনা খুবই দুঃখ জনক। আমরা এটাকে সমর্থন করি না। আমরা এটাকে নিন্দা করি এবং দুঃখ প্রকাশ করছি।

শুক্রবার দুপুরে ফেনীর পরশুরাম উপজেলার চিতলীয়া ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুলের সামনে এ ঘটনা ঘটে। উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে পরে তাকে ফেনী ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় জেলা ও উপজেলা প্রশসনের কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

পরে শুক্রবার বিকেলে নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাহজাহান খান, ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী, ফেনী-১ আসনের সংসদ সদস্য শিরিন আখতার, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য জাহান আরা বেগম সুরমা, ফেনী জেলা প্রশাসক মো. আমিন উল আহসান, পুলিশ সুপার মো. রেজাউল হক, ফেনী পৌরসভার মেয়র আলা উদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুর রহমান বিকম সহ অন্যান্য সরকারি কর্মকমর্তা ও রাজনৈতিক দলের নের্তৃবৃন্দ হাসপাতালে পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এএইচএম রাকিব হায়দারকে দেখতে যান।

এর আেেগ দুপুর ইউএনওকে মো. ফারুক নামে একজন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা এগিয়ে গিয়ে খায়রুল বাশার মজুমদার ওরফে তপনকে নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে চাইলে তিনি (ইউএনও) বিষয়টি একটু এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে ইউএনও রকিব হায়দারের সাথে আওয়ামী লীগ নেতা খায়রুল বাশার মজুমদার ওরফে তপনের কথা কাটাকাটি হয়। এ সময় ৭-৮জন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারও হামলা ও মারধর করেন। মাথায় আঘাত পেয়ে তিনি (ইউএনও) মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সুত্র জানায়, গত ২৫ এপ্রিল  ইউএনও রকিব হায়দার পরশুরাম উপজেলায় যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকে নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে এডিপি, বিশেষ বরাদ্দ , টিআর, কাবিখা সহ বিভিন্ন  বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের সাথে মত বিরোধ দেখা দেয়।

তবে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খায়রুল বাশার মজুমদার তপন তাঁর বিরুদ্ধে করা অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি জানান, আওয়ামী লীগের কোন নেতাকর্মী এ হামলা ও মারধরের সাথে জড়িত ছিল না।

পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সের ইউএইচ এন্ড এফপিও ডা. মো. হাবিবুল করিম জানান, রাকিব হায়দার মাথায় আঘাত নিয়ে হাসপাতালে আসন। তাকে চিকিৎসা দেয়া হয়। মাথার ব্যাথা না কমায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ফেনী ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।

ফেনীর জেলা প্রশাসক মো. আমিন উল আহসান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। তিনি বিষয়টি নৌ পরিবহন মন্ত্রী মো. শাহজাহান খান, ফেনী-১ আসনের সংসদ সদস্য শিরিন আখতার অন্যান্যদের অবহিত করেছেন।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা তপন ও তার সহযোগীরা পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ওপর হামলা ও মারধর করেছেন। এ ঘটনায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

ফেনী ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. ছারওয়ার জাহান বলেন, রোগীকে আমরা সিটি স্ক্যান করার জন্য পরামর্শ দিয়েছি। তা করার পর দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ফেনী পুলিশ সুপার মো. রেজাউল হক জানান, নির্বাহী অফিসারকে মারধরের ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ তিনজনকে আটক করেছে। তারা হলেন, পরশুরাম পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও উপজেলা শ্রমিক লীগের আহাবায়ক আবদুল মান্নান, স্থানীয় যুবলীগ নেতা মোঃ পারভেজ ও ছাত্রলীগ কর্মী রাশেদুল হাসান রাশু।

ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী বলেন, আমরা কোন ভাবেই এ ধরনের অনাকাঙ্খিত ঘটনা সমর্থন করি না। যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তদন্তের মাধ্যমে কঠিন বিচার হবে।

হটনিউজ২৪বিডি.কম/এআর

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top