সকল মেনু

চাপাইল ব্রিজ, এখন শুধুই উদ্বোধনের অপেক্ষা

৯নিজস্ব প্রতিবেদক, হটনিউজ২৪বিডি.কম ৩০ এপ্রিল : ব্রিজটার দিকে তাকালেই বুকডা আনন্দে ফুইল্লা ওডে। শেখের বেটিরে (বঙ্গবন্ধুকন্যা) দোয়া ওরি, হে যেন আরো অনেক দিন বাঁইচ্যা থাহে। আর বারবার যেন ক্ষমতায় আইতে পারে। তাইলে দেশের অনেক উন্নতি হইব। সারা জীবন অনেক কষ্ট করণ লাগছে খেয়াঘটে। অনেক সময় নির্যাতনও ভোগ করন লাগছে ইজারাদারদের লোকদের কাছ থেইক্যা। একবার ওপারে যাইতে ৭ টেহা আর ফিরে আবারো ৭ ট্যাহা মোট ১৪ ট্যাহা দিওন লাগতো। আবার নৌকা না ভরলে বসে থাইক্যা লাগতো। এখন আর কারো জন্য বইসে থাওন লাগবে না।

প্রতিবেদকের কাছে এসব কথা বলে প্রধানমন্ত্রীকে বার বার দোয়া করছিলেন নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার চাপাইল ব্রিজের পশ্চিম পাড়ের চাপাইল গ্রামের ৬৫ বছরের বৃদ্ধ আব্দুল হামিদ খান।

শনিবার গোপালগঞ্জের মধুমতি নদীর ওপর নির্মিত সবচেয়ে বড় দৃষ্টিনন্দন চাপাইল ব্রিজ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ব্রিজ উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের গোপালগঞ্জ, নড়াইল, খুলনা ও বাগেরহাট জেলার কয়েক লাখ মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হবে। সেই সঙ্গে তৈরি হবে সেতুবন্ধন। এসব জেলার মানুষ খুব সহজে গোপালগঞ্জ জেলা সদরে এসে লেখাপড়া, ব্যবসা-বাণিজ্য, চিকিৎসা সেবাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিতে পারবেন।

ব্রিজটি উদ্বোধনের দিন-তারিখ ঠিক হওয়ায় দুই পাড়ের মানুষের মধ্যে চলছে উৎসাহ-উদ্দীপনা। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ প্রতিদিনই ব্রিজটি দেখতে ভিড় করছেন আর অপেক্ষার প্রহর গুণছেন কখন প্রধানমন্ত্রী ব্রীজটি উদ্বোধন করবেন।

জেলা এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালের ১৭ এপ্রিল ব্রিজটির নির্মাণকাজ শুরু করা হয়। কয়েক দফা সময় বাড়ানোর পর ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে ব্রিজটির নির্মাণকাজ শেষ হয়। নির্মাণ করতে ব্যয় হয় ৫৭ কোটি ৬০ লাখ ৯৫ হাজার ২৫০ টাকা। এ ছাড়া ব্রিজের দুই পাড়ে সংযোগ সড়ক, ব্রিজের সৌন্দর্যবর্ধনসহ অন্যান্য কাজে আরো ব্যয় হয় ৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা। ঢাকার গুলশান এলাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তানতিয়া ওটিবিল জেভি ব্রিজটি নির্মাণ করে।

একই উপজেলার চাপাইল গ্রামের ব্যবসায়ী শুকুর ভূঁইয়া (৫০), মুলশ্রী গ্রামের আবু তালেব (৫৫) ও যোগানিয়া গ্রামের প্রভাষ মিত্র (৪৫) বলেন, এ ব্রিজটির নির্মাণের ফলে বাগেরহাট, নড়াইল ও খুলনা জেলার শতাধিক গ্রামের কয়েক লাখ মানুষ সারাসরি উপকৃত হবেন। এসব গ্রামের মানুষ চিকিৎসা, শিক্ষা, কেনাকাটাসহ নানাবিধ কাজে গোপালগঞ্জের ওপর নির্ভরশীল। আর তাদের চাপাইল খেয়াঘাট পার হয়ে গোপালগঞ্জ আসতে হতো। এতে তাদের সময় অপচয়সহ নানাবিধ সমস্যা সম্মুখীন হতে হতো।

এসব গ্রামের শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ গোপালগঞ্জ শহরের বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে। তাদেরও নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হতো। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর নড়াইল জেলাবাসী মধুমতি নদীর ওপর চাপাইল ঘাটে ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানান।

গোপালগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফজলুল হক জানিয়েছেন, সম্পূর্ণ সরকারি টাকায় এ দৃষ্টিনন্দন ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়েছে। ব্রিজটি নির্মাণের ফলে খুলনা, বাগেরহাট ও নড়াইল জেলাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হয়েছে। ফলে এ এলাকার মানুষের অর্থনৈতিক, শিক্ষা ও বাণিজ্যিক উন্নয়নেও বিশেষ ভূমিকা রাখবে।
হটনিউজ২৪বিডি.কম/এআর

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top