সকল মেনু

ভারতীয় সীমান্তবর্তী কয়েকটি গ্রাম পাবিত

image_1325_164217হটনিউজ ঠাকুরগাঁও অফিস ও হুমায়ুন কবীর বালিয়াডাঙ্গী (ঠাকুরগাঁও) থেকে: উজান থেকে নেমে আসা পানি ও টানা চারদিনের বৃষ্টিপাতর ফলে বন্যার কবলে পড়েছে ঠাকুরগাঁও জেলা। এতে করে সোমবার সন্ধা থেকে রাত পর্যন্ত পানিতে ডুবে, বজ্রপাতে ও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আজ মঙ্গলবারও মুষলধারে বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে।

গত শনিবার থেকে মুষলধারে বৃষ্টিপাতের ফলে এবং উত্তরে ভারতের বাঁধ খুলে দেয়ায় ঠাকুরগাঁও জেলা আকষ্মিক বন্যার কবলে পড়েছে। রোববার রাত থেকেই ঠাকুরগাঁও শহরের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হওয়া টাঙ্গন নদীর পানি বাড়তে থাকে ও শহর রক্ষাবাধ উপচে শহরের মহলায় পানি ঢুকে পড়ে। এতে করে পৌর শহরের টিকিয়া পাড়া, ডিসি বসতি, হঠাৎ পাড়া, খালপাড়া. মুন্সিপাড়ার প্রায় সব বাড়িঘরই তলিয়ে গেছে। লোকজন বাড়িঘর ছেড়ে শহরের শিল্পকলা একাডেমি, সিএম স্কুল সহ বিভিন্নস্থানে আশ্রয় নিয়েছে। সোমবার রাতে টাঙ্গন নদীর পানিতে ডুবে আজাহার আলী (৪৫) ও রফিকুল ইসলাম (৩২) নামে এক ব্যক্তি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছে বলে জানান জেলা প্রশাসক মুকেশ কুমার বিশ্বাস। তিনি আরো জানান, সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নের একটি গুচ্ছগ্রামের সব ঘরবাড়ি বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। সেখানকার লোকজনকে উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের কয়েকটি মহলার প্রায় ২ শতাধিক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বসবাসরত লোকজন বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ শহরের বিভিন্ন স্কুল, কলেজ সহ শিল্পকলা একাডেমিতে আশ্রয় নিয়েছেন।

এদিকে বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে বালিয়াডাঙ্গী, হরিপুর ও রানীশংকৈল উপজেলার ভারতীয় সীমান্তবর্তী কয়েকটি গ্রাম। রানীশংকৈল উপজেলার ধর্মগড় ইউপি চেয়ারম্যান লোকমান আলী জানান, সীমান্তঘেঁষা নাগর নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে নদী সংলগ্ন বাঁধ উপচিয়ে জগদল. আটঘড়িয়া গ্রামের কয়েকশত বাড়িঘর ডুবে গেছে। মানুষজন বাড়িঘর ফেলে বিভিন্ন উচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। বালিয়াডাঙ্গী থানার অফিসার ইনচার্জ আসাদুজ্জামান আসাদ সহ স্থানীয় ব্যক্তি হুমায়ুন কবীর, সাদেকুল ইসলাম সহ কয়েকজন জানান, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত তীরনই নদীর পানি বৃদ্বির ফলে উপজেলা ও হাসপাতালের সংযোগ সড়ক ও ব্রীজ ভাঙনের কবলে পড়লে স্থানীয় লোকজন বালুর বস্তা, ইট খোয়া দিয়ে কোনরকমে রাস্তা ও ব্রীজটিকে ঠেকিয়ে রেখেছে। তবে উপজেলার ৮ টি ব্রীজ ভেঙে গেছে। সোমবার রাতে উপজেলার সানজুপাড়ায় তীরনই নদীতে ডুবে মারা গেছে আঃ খালেক এর ছেলে রহমান মিয়া (১২), এছাড়াও মহাজন বসতির অমিত কুমারের ছেলে দিনকাটু রায় (৪৫) বজ্রপাতে মারা যান।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে জেলার ৫ টি উপজেলার হাজার হাজার হেক্টর আমন ধানের ক্ষেত সহ বীজতলা পানিতে তলিয়ে গেছে। রানীশংকৈল উপজেলার হোসেনগাঁও ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মাহাবুব আলম জানান, এলাকার মানুষজন আমন ধান রোপনের কাজ কেবলই শুরু করেছিলেন। আকষ্মিক বন্যার ফলে রোপনকৃত আমন ধান নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়াও অধিকাংশ বীজতলা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বন্যা পরবর্তী সময়ে আমন চারার সংকট দেখা দিতে পারে।

ঠাকুরগাঁও-২ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব দবিরুল ইসলাম জানান, বন্যা কবলিত এলাকাগুলোর লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে আনা হয়েছে। জেলা প্রশাসক মুকেশ কুমার বিশ্বাস জানান, আমরা সারা জেলার বন্যা পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজ খবর রাখছি। কবলিত এলাকার মানুষজনকে নিরাপদে রাখা ছাড়াও যেখানে যা প্রয়োজন তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top