সকল মেনু

অবশেষে ময়মনসিংহে ‘ঐক্যবদ্ধ’ আওয়ামী লীগ

৬.নিজস্ব প্রতিবেদক, হটনিউজ২৪বিডি.কম ১১ এপ্রিল : ২০১৪ সালের ০৮ নভেম্বর। ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের ১২টি শূন্য পদে কো-অপ্টকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে গুলি বিনিময় ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সেই থেকেই শুরু তিক্ততার।

পরের বছরের সেই নভেম্বরেই অভ্যন্তরীণ কোন্দল পায় নতুন মাত্রা। ২০১৫ সালের ২১ নভেম্বর জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সভা আহবান করা হয়। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন সরকার দাবি করেন, তার স্বাক্ষর জাল করে ডাকা হয়েছে ওই সভা। এমন অভিযোগে তারা সভাও বর্জন করেন।

মতিন সরকার অনুপস্থিত থাকায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রিন্সিপাল মতিউর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় দু’নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমেদ খানকে দেয়া হয় ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব। চারদিন পর ২৫ নভেম্বর দলীয় রাজনীতিতে বিদ্যমান জটিলতা নিরসনে স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে বিবৃতি পাঠান মতিন সরকার।

ময়মনসিংহে ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতিতে নাটকীয় ঘটনাপ্রবাহের শেষ নয় এখানেই। ২৭ নভেম্বর কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি কেন্দ্র থেকে করে দেয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।

এরপর আবারো গত ২৪ জানুয়ারি জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা ডাকেন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমেদ খান। সেদিনের সভায় শহর আওয়ামী লীগসহ আওয়ামী লীগের ৩ ইউনিটের সম্মেলন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত হয়। যদিও সে সিদ্ধান্ত মোতাবেক সময় পার হয়ে গেলেও এক ইউনিটেরও সম্মেলন হয়নি।

একপক্ষের সভার ঠিক সাতদিন পর অপর পরে নেতা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন সরকার স্থানীয় একটি কমিউনিটি সেন্টারে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী পরিষদের এক সভায় শহর আওয়ামী লীগের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করেন ৬ ফেব্রুয়ারি।

ওইদিন এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ময়মনসিংহ পৌরসভার মেয়র ইকরামুল হক টিটুসহ ১৭টি শূন্য পদে ১৭ জনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ভিন্ন কারণে সপ্তাহখানেক পর জেলা আওয়ামী লীগের দু’পক্ষই শহর আওয়ামী লীগের পাল্টাপাল্টি সম্মেলন স্থগিত করে।

প্রায় ১৭ মাস ধরে ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের দু’পক্ষের  মাঝে গ্রুপিং-কোন্দলে পাল্টাপাল্টি সভা আহবান ও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের টুকরো টুকরো চিত্র এসব। কিন্তু কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের এক সিদ্ধান্তে নিমিষেই উবে গেছে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব-কোন্দল। এরই মধ্য দিয়ে মান-অভিমানের পালাও শেষ হয়েছে দু’পক্ষের নেতাদের।

আগামী ৩০ এপ্রিল ময়মনসিংহ জেলা আওযামী লীগ ও মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনের দিনক্ষণ নির্ধারিত হওয়ায় অবশেষে গত শনিবার (০৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় নগরীর শিববাড়ি রোডের জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় হয়ে উঠলো জমজমাট।

এক কাতারে বসে সভা করলেন, কথা বললেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রিন্সিপাল মতিউর রহমান, জ্যেষ্ঠ সহ সভাপতি অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকা, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন সরকারসহ দলটির শীর্ষ নেতারা। বিভাজনের রাজনীতির বৃত্ত থেকে দলের শীর্ষ নেতারা বেরিয়ে আসায় আনন্দ উদ্দীপ্ত হয়ে উঠেছেন দলটির তৃণমূলের নেতাকর্মীরাও।

জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে ছড়িয়ে পড়া ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগের এ ছবি রাজনৈতিক পরিমণ্ডলেও সাড়া ফেলেছে। দীর্ঘদিন পর জেলার নীতিনির্ধারক নেতাদের একসঙ্গে বসার বিষয়টিকে দলীয় রাজনীতির জন্য ইতিবাচক বলেই মন্তব্য করেন জেলা আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক হোসাইন জাহাঙ্গীর বাবু।

তিনি বলেন, ‘কাল সবাই একসঙ্গে বসেছেন, কথা বলেছেন। এটা জেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতির জন্য শুভ বার্তা’।

‘আগামী ৩০ এপ্রিলের জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে ঘিরে ১৬ এপ্রিল ডাকা হয়েছে বর্ধিত সভা। ওইদিন বিকেলে দলের কার্যকরী কমিটির সভাও অনুষ্ঠিত হবে নগরীর শিববাড়ি রোডের জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে’- জানান হোসাইন বাবু।

এসব বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন সরকারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

হটনিউজ২৪বিডি.কম/এআর

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top