সকল মেনু

পরাজয় হয়েছে স্বৈরশাষনের-অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম

Untitled-12সম্প্রতি জিসিসি নির্বাচন সম্পর্কে আপনার মতামত কি?
উত্তর: দেখুন সারা বাংলাদেশের চিত্র একই রকম। সারা দেশের জনগন এখন সরকার’র উপর থেকে আস্থা হারিয়ে নির্বাচনের মাধ্যমে অনাস্থা জ্ঞাপন করেছে।
কারন-০১: প্রথমত ২০০৮ সালের নির্বাচনের সময় আওয়ামীলীগ ও মহাজোটের পক্ষ্য থেকে নির্বাচনি ইশতেহারে যে সমস্ত ওয়াদা করা হয়েছিল সেটা পূরনে ব্যর্থতা প্রশাসন আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনিসহ সর্বত্র নগ্ন দলীয় করনের কারনে জনগন সু-বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
কারন-০২: আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনি দিয়ে বিএনপিসহ বিরোধী দলের মিটিং,মিছিলের উপর হামলা ও বেপরয়া গুলি বর্ষণ করে মিটিং,মিছিল বন্ধ করে দেওয়া,নেতাকর্মিদের হতাহত করা,বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যলয় তছনছ করা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ও স্ট্যান্ডিং কমিটির সম্মানিত সদস্যবৃন্দসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের হাজার হাজার নেতাকর্মির বিরূদ্বে মিথ্যা সাজানো মামলা দিয়ে অন্যায় ভাবে জেলে পুরে রাখা এক কথায় বিএনপিসহ বিরোধীদলকে নির্মূল করার উদ্দেশ্যে স্বৈরাচারি কায়দায় যে দমন নিতি চালান হয় তাতে সারা দেশের জনগণ বর্তমান সরকারকে নির্যাতনকারি স্বৈরাচার হিসেবে চিহ্নিত করেছে।যেহেতু তারা সু-শাষণ দিতে ব্যর্থ হয়েছে তাই জনগন যখনই সুযোগ পাচ্ছে তখনই সরকারি দলের প্রর্থীদের বিরূদ্দে ভোট দিয়ে অনাস্থা জ্ঞাপন করেছে।
কারন-০৩: নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম কমানোর কথা বলে ব্যবসায়ি সিন্ডিকেটের সাথে আতাত করে মূল্য কমানোর পরিবর্তে মূল্যবৃদ্দি পাওয়ায় জনগন সরকারের উপর থেকে আস্থা হারিয়ে ফেলেছে।দুর্নীতির মাধ্যমে কুইক রেন্টাল পাওয়ার স্টেশনের ব্যবস্থার সাথে সরকার’র লোক জড়িত হয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার কারনে বর্তমান সরকারের সময় বিদ্যুতের মূল্য ৬/৭ বার বৃদ্ধি করেও জনগনের উপর বার্তি চাপ দিয়েছে।
কারন-০৪: পদ্মা সেতু,হলমার্ক,ডেসটিনি,ইউনিপে-টু,শেয়ার মার্কেট কেলেংকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বেপরোয়া লুটপাট এবং ঘুষ ও দুর্নীতির কারনে সরকারের সততা ও স্বচ্ছতা বিরাট প্রশ্নবিদ্ব হয়ে দাঁড়িয়েছে।জিসিসি নির্বাচনে বিপুল সংখ্যক গার্মেন্টস শ্রমিক ভোটার তাদের কাছে রানা প্লাজার ধ্বংসযজ্ঞ ও তাজরিন গার্মেন্টস’র অগ্নিকান্ডে নিহত,আহত এবং নিখোঁজ শ্রমিক ও তাদের পরিবারকে উপযুক্ত আর্থিক ক্ষতিদানে চরম ব্যর্থতা,শতশতো শ্রমিক এখনও পর্যন্ত নিখোঁজ।তাদেরকে উদ্বার করা কিংবা তাদের সম্পর্কে সঠিক তথ্য প্রদান,এবং নিখোঁজ শ্রমিক পরিবারদের কে আর্থিক সহয়তা প্রদান না করা সহ সার্বিক সহযোগিতা না করাতে তারা বিক্ষুদ্ধ রায় প্রদান করেছে।সরকারের ব্যর্থতার কারনে যুক্তরাষ্ট্রের জিএসপি বাতিলের বিষয়টিও সরকারের উপর থেকে আস্থা হারানোর অন্যতম কারন।দেশের আলোচিত বিষয় হেফাযতে ইসলাম ইস্যু:সাম্প্রতিকালে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদ (স:) সম্পর্কে কটুক্তি এবং অশ্লিলভাবে ইন্টারনেটে যে সমস্ত জঘন্য,কুৎসিত বক্তব্য প্রচার করা হয়,এর প্রতিকার চেয়ে হেফাযতে ইসলাম আন্দোলন শুরু করে।সরকারের পক্ষথেকে কয়েকজন মন্ত্রী হেফাজতে ইসলাম’র আমীর ও নেতৃবৃন্দের সাথে সাক্ষাৎ করে তাদের দাবি পূরনে আশ্বাস দিলেও বাস্তবে যারা এ ঘটনার সাথে জড়িত তারা সাহবাগ মঞ্চের আশ্রয় নেওয়ার কারনে সরকার প্রশাসনিক ভাবে সবধরনের সুযোগ সুবিধা দিয়ে পাহারায় রাখে কিন্তু দুশিদের শাস্তি দানে ব্যর্থ হয়।অপর দিকে তাদের পক্ষ্য নিয়ে হেফাজতে ইসলামকে নিশ্চিহ্ন করার উদ্দেশ্যে ৫মে মধ্যরাতে শাপলা চত্তরে যখন বরেণ্য আলেম ওলামা,কুরআনের হাফেজ,মাদ্রাসার শিক্ষক,ছাত্র এবং ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা কেউ কেউ কুরআন তেলাওয়াত করছিলেন,কেউ কেউ আবার আল্লহর ধ্যনে মশগুল ছিলেন, আবার কেউ কেউ ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলেন,রাত আড়াইটার সময় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়ে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনির প্রায়১০ হাজার সদস্য অতর্কিত ভাবে আকরোমন চালায়।সে দৃশ্যগুলি দিগন্ত টিভি,ইসলামিক টিভিতে শাপলা চত্তর থেকে সরাসরি সম্প্রচার করছিল। প্রকৃত ঘটনাবলী জনগন যাতে প্রতক্ষ করতে না পারে এবং সবকিছু আড়াল করার জন্যই তাৎক্ষনিক ভাবে দিগন্তটিভি,ইসলামিকটিভি বন্ধ করে দেওয়া সরকারের হিণমন্যতার পরিচয় মাত্র। তাতে দেখা যায় আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারিবাহিনি টিয়ারশেল,গরম পানি,অজ¯্র গুলিবর্ষণ করেছে এবং শাপলা চতÍরে অবস্থানরত ঘুমন্ত এবং আধা ঘুমন্ত ধর্মপ্রান মানুষগুলো চিৎকার করতে থাকে অতপর শাপলা চত্তরে রক্তের নহর দেখা যায়,একপর্যায়ে তাদের কে স্থানচ্যুত করতে বাধ্য করা হয়।এই ঘটনায় কত মানুষ হতাহত হয়েছে তার হিসেব একমাত্র আল্লাহই ভাল যানেন।সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত সঠিককোন তথ্য জানানো হয়নি।এই ঘটনায় শুধু মাত্র হেফাজতে ইসলামের কর্মী সমর্থক নয় দেশের সাধারন ধর্মপ্রান মানুষ বিষ্মিত ও হতবাগ হয়েছে।বিগত পাচঁটি সিটি নির্বাচনে শাপলা চত্তরের এই ঘটনাবলি নির্বাচন গুলোতে বিরুপ প্রভাব ফেলেছে । বাংলাদেশের এক মাত্র নোবেল বিযয়ী ব্যক্তিত্ব ও যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ কংগ্রেশনাল পদক বিজয়ী ড.মুহাম্মাদ ইউনূস তার প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ব্যাংককে নিয়ে যে প্রতিহিংসা চরিতার্থ করা হচ্ছে এ বিষয়টিও নির্বাচনে গুরূত্বপূর্ন ভুমিকা রেখেছে বলে আমি মনে করি।যেহেতু বর্তমান সরকার দেশনেত্রী বেগম খালেদাজিয়া বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান শহিদ জিয়ার প্রতিচ্ছবি তারেক রহমানসহ বিএপির নেতাকর্মীদের প্রতি যে নির্যাতন নিগ্রহ চালান হচ্ছে এবং প্রশাসনকে দলীয় ও ব্যক্তি স্বার্থে ব্যবহার করা হচ্ছে এবং এই সরকার’র কাছ থেকে দেশের মানুষ ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তাই এই সরকার এবং সরকারের প্রশাসনের কাছ থেকে ন্যায় বিচার আশাকরা যায় না, ফলে বর্তমান মহাজোট সরকারকে ক্ষমতায় রেখে নির্বাচনে অংশগ্রহন করার অর্থ হচ্ছে সবকিছু জেনে শুনে বিষঁপান করে আত্মহত্যার সামিল।দেশের মানুষ দেশ নেত্রী বেগম খালেদাজিয়ার নেতৃত্বাধীন ১৮দলীয়জোটের উত্থাপিত দাবী,নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধিনে জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য ৫টি সিটি নির্বাচনে জনগনই ব্যালটের মাধ্যমে আগাম সংকেত দিয়েছে।দেশ জাতি ও মানুষের কল্যানে অবিলম্বে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধিনে নির্বাচনের দাবি মেনে নিয়ে সরকার শুভবুদ্বির পরিচয় দিবেন বলে আমি আশাকরি।গাজীপুর,খুলনা,বরিশাল,সিলেট ও রাজশাহী মেয়র গণদেরকে জানাই অভিন্দন ও সে সমস্থ এলাকার জনগন ও ভোটারদেরকে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ,মোবারকবাদ ও কৃতজ্ঞতা।উল্লেখ্য এ বিজয় হয়েছে জনগনের আর পরাজয় হয়েছে স্বৈরশাষনের।
অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম
সাবেক সংসদ সদস্য কুষ্টিয়া ০২
সদস্য বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটি

সম্পাদনায়: আতিকুর রহমান(পলাশ)

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top