সকল মেনু

শুধু শহরই নয়, তৃণমূলেও উন্নয়ন করেছি : প্রধানমন্ত্রী

৫০.নিজস্ব প্রতিবেদক, হটনিউজ২৪বিডি.কম ৩ মার্চ : ‘আমরা কেবল শহর কেন্দ্রীক নয়, তৃণমূল পর্যায়ে উন্নয়ন করে যাচ্ছি। আমরা পুরো বাংলাদেশে উন্নয়ন করতে চাই। ৫ হাজ‍ার ২৬৫ ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে, ডিজিটাল কেন্দ্র করে দেওয়া হয়েছে ৮ হাজার পোস্ট অফিসকেও। এতে কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তির দক্ষতা বাড়ছে।’

বুধবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ব্যুরো ও পরিসংখ্যানের (বেনবেইস) উদ্যোগে নির্মিত ১২৫ উজেলায় আইসিটি ট্রেনিং অ্যান্ড রিসোর্স সেন্টার ফর এডুকেশন (ইউআইটিআরসিই) এর উদ্বোধন উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

তথ্যপ্রযুক্তিতে সরকারের নেওয়া নানা উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, নানা উদ্যোগের কারণে এখন একটি ছেলে, একটি মেয়ে উদ্যোক্তা।  কর্মসংস্থান সৃষ্টি করছে তারা।

‘কেউ গৃহহারা থাকবে না। শিক্ষাকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি শিক্ষা ছাড়া উন্নয়ন সম্ভব নয়। এজন্য শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বই দেওয়া হচ্ছে। স্কুলমুখী হওয়ার কারণে প্রাথমিক স্তরে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর হার কমেছে। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়েও সহায়তা দিচ্ছি।’

তথ্যপ্রযুক্তির নানা উপকারী দিক তুলে ধরে তিনি বলেন, এখন মোবাইল হাতে হাতে, ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে ১৩ কোটি সিম ব্যবহার করছে। মোবাইলে বাংলা কন্টেন্ট চালু করা হয়েছে। এতে যাদের অক্ষর জ্ঞান ছিলো না, তারাও যোগাযোগ করার জন্য অক্ষর জ্ঞান অর্জন করে নিচ্ছে।

‘আমরা রাজধানীকে কেন্দ্র করে উন্নয়ন করতে চাই না। শুধু শহরেই নয়, গ্রাম পর্যায়েও সমান উন্নয়ন করতে চাই।’

শেখ হাসিনা বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি শুধু দৈনন্দিন কাজই নয়, বাংলাদেশকে উন্নত দেশে পরিণত করতে ও দুর্নীতিমুক্ত করতে ডিজিটালাইজড করা দরকার-বলেছিল আমার ছেলে সজীব। তার পরামর্শেই প্রযুক্তির উন্নয়নে নানা ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

‘আমরা যখন ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ঘোষণা দিই, তখন লোকে ঠাট্টা করতো। কিন্তু এখন প্রমাণ হয়েছে। গ্রামীণ পর্যায়ে স্থাপিত ডিজিটাল সেন্টারগুলোতে তারা উপকৃত হচ্ছে।’

তিনি বলেন, বিজ্ঞান বিষয় পড়ার ক্ষেত্রে আমাদের শিক্ষার্থীদের অনীহা ছিলো! আমরা পরিকল্পনা করি বিশ্ববিদ্যালয় করবো নাম হবে-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। মাধ্যমিক পর্যায়ে বিজ্ঞান বাধ্যতাম‍ূলক করা হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ১২৫টি উপজেলায় ট্রেনিং অ্যান্ড রিসোর্স সেন্টার স্থাপনে আমরা উদ্যোগ নিয়েছি,  যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখন বিষয় ভিত্তিক মাল্টিমিডিয়‍া কন্টেন্ট নির্মাণের কাজ চলছে।

এছাড়া শিক্ষকদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। স্থানীয় নাগরিকদের একসেস টু ইনফরমেশন নিশ্চিত করা হবে। এজন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও।

ভবিষ্যতে উপগ্রহ স্থাপন করা হলে তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যাবে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, দুর্গম এলাকা যেখানে কেউ চিন্তা করতে পারেনি ইন্টারনেট সার্ভিস থাকতে পারে। এমন সমৃদ্ধ তথ্য বাতায়ন আর কোথাও নেই, যা আমরা করে দিয়েছি।

এবার বাকেরগঞ্জ, মুলাদী, চরফ্যাশন, নলছিটি, আমতলী, বাউফল গলাচিপা, মোরেলগঞ্জ, রায়পুরা, মনোহরদী, মোকসেদপুর, নড়িয়া হালুয়াঘাট, ইসলামপুর, নালিতাবাড়ি, কালীহাতি, উল্লাপাড়া, শাহজাদপুর, রামু, ছাগলনাইয়া, কোম্পানীগঞ্জ, রাঙামাটি সদর, ফরিদগঞ্জ, চৌদ্দগ্রাম, বানিয়াচং, জামালগঞ্জ, দাউদকান্দি, বাজিতপুর, কালীগঞ্জ, মহেশপুর, শৈলকুপা, লোহাগড়া, গাংনী, কুমারখালী, তানোর, পুঠিয়া, গুরুদাসপুর, বাগাতিপাড়া, সুজানগর, ক্ষেতলাল, গাবতলী, শিবগঞ্জ, সাদুল্ল্যাপুর, পীরগঞ্জ, পার্বতীপুর, দেবীগঞ্জ, রাণীশংকৈল, পত্নীতলাসহ দেশের ১২৫টি উপজেলায় ট্রেনিং অ্যান্ড রিসোর্স সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে।

‘আরও ১৬০টিতে কাজ চলছে। পর্যায়ক্রমে দেশের সবগুলো উপজেলায় করা হবে।’

‘ট্রেনিং অ্যান্ড রিসোর্স সেন্টার স্থাপন দেশের জন্য মাইলফলক’ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা প্রমাণ করেছি, যখনই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে, দেশের মানুষের জন্য কাজ করেছে। দারিদ্র্যমুক্ত করেছি, চিকিৎসা দিচ্ছি, অনলাইনে এগিয়ে যাচ্ছি।

‘বিদ্যুৎ নেই, সোলার প্যানেল দিয়ে দিচ্ছি। প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হলে বিদ্যুৎ দরকার, ইতোমধ্যে ১০০-এর বেশি বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। দেশের ৭৬ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ পাচ্ছেন,’ বলেন তিনি।

প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিদের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা সমাজে বিত্তশালী আছেন, তারা যে যে স্কুলে পড়েছেন তারা একটা ল্যাপটপ, মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর নিজ স্কুলকে উপহার দিতে পারেন। আপনাদের সেটা দায়িত্বও।

তিনি বলেন, আজ বিশ্বে বাংলাদেশ একটা মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে আছে। কারও কাছে হাত পেতে চলতে হবে না। আমরা বীরের জাতি, আমরা বিজয়ী হবো। আর এভাবেই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে।

ইউআইটিআরসিই-এর উদ্বোধন শেষে টুঙ্গীপাড়া, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম, রাজশাহীর পবায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

অনুষ্ঠানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব সোহরাব হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন- শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ, ঢাকায় নিযুক্ত কোরিয়ান রাষ্ট্রদূত আন সিয়ং ডু ও ইউআইটিআরসিই প্রকল্প পরিচালক ফসিউল্লাহ।

হটনিউজ২৪বিডি.কম/এআর

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top