সকল মেনু

গাজীপুর সিটি নির্বাচনে ভোট শুরু

GEC-Nazmul-13-BG-72520130705204004হটনিউজ টিম,গাজীপুর: গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন (জিসিসি) ভোটগ্রহণ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। শনিবার সকাল ৮টা থেকে ৩৯২টি ভোটকেন্দ্রে একযোগে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলবে বিরতিহীন ভোটগ্রহণ।

সরেজমিনে বিভিন্ন ভোটকেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিতে শুরু করেছেন ভোটাররা। ভোটগ্রহণ শুরুর এক ঘন্টা আগে থেকেই লাইনে এসে দাঁড়ানো শুরু করেন ভোটাররা। প্রতিটি লাইনে ৪০ থেকে ৫০ জন ভোটার লাইনে আছেন। তারা পর্যায়ক্রমে ভোটকক্ষে ঢুকে ভোট দিচ্ছেন।

বিশেষ করে নারী ভোটারদের ব্যাপক উপস্থিতি চোখে পড়ছে।
সকাল ৭টা থেকেই শালনা নাসির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্র, শালনা ইসলামিয়া মাদ্রাসা, পোড়াবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভাওরাত হাজী রোকনদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গাজীপুর সরকারি মহিলা কলেজ, জয়দেবপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, টঙ্গীর মুন্নু নগরে মুন্নু টেক্সটাইল মিলস উচ্চ বিদ্যালয় এবং শফিউদ্দিন কলেজ কেন্দ্রে ভোটাররা লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে যান। সকাল আটটা বাজার সঙ্গে সঙ্গে সারিবদ্ধভাবে ভোটকক্ষের ভেতরে ঢুকে ভোট দিতে শুরু করেন তারা।

এদিকে ভোটকেন্দ্রের বাইরে ভোটারদের ভোট দিতে সহায়তা করতে প্রার্থীদের অস্থায়ী ক্যাম্পগুলো তাদের প্রতীক দিয়ে সাজানো হয়েছে। প্রার্থীদের সমর্থকরা ভোটার তালিকা নিয়ে ভোটারদের ভোটার নম্বরের স্লিপ দিচ্ছেন। তবে কেন্দ্রের সামনে থেকে পুলিশ বিভিন্ন প্রতীকের পোস্টারগুলো সরিয়ে ফেলেছেন।

দু’টি পৌরসভা ও ৬টি ইউনিয়ন পরিষদের ৩২৯ দশমিক ৯০ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে গঠিত দেশের ১১তম সিটি কর্পোরেশন গাজীপুর সিটির প্রথম এ নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ১০ লাখ ২৬ হাজার ৯৩৮ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ লাখ ২৭ হাজার ৭৭৭ জন ও মহিলা ভোটার ৪ লাখ ৯৯ হাজার ১৬২ জন।

নির্বাচনে ৭ জন মেয়র, ১২৮ জন সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর এবং ৪৫৬ জন সাধারণ আসনের কাউন্সিলরসহ মোট ৫৯১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সাধারণ ওয়ার্ড সংখ্যা ৫৭টি ও ১৯টি রয়েছে সংরক্ষিত (নারী) ওয়ার্ড।

নির্বাচনে ১৮ দলীয় জোট প্রার্থী অধ্যাপক এম এ মান্নান টেলিভিশন এবং ১৪ দলীয় প্রার্থী আজমত উল্লাহ খান তালা চাবি প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মেয়র পদে ৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম ও নেজামে ইসলাম পার্টির মাওলানা রফিকুল ইসলাম সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। তবে নির্বাচন থেকে সরে গিয়েও জাহাঙ্গীর আলমের আনারস প্রতীক থেকে যাচ্ছে ব্যালটে। নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থীর সংখ্যা ৭ জন। তারা হলেন, আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী অ্যাডভোকেট মোঃ আজমত উল্লাহ খান (দোয়াত-কলম), বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী অধ্যাপক এম এ মান্নান (টেলিভিশন), আমান উল্লাহ (তালা), ডা. নাজিম উদ্দিন আহমেদ (ঘোড়া), মোঃ জাহাঙ্গীর আলম (আনারস), মোঃ মেজবাহ উদ্দিন সরকার রুবেল (হাঁস) এবং রিনা সুলতানা (প্রজাপতি)।

প্রধান দুই মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট মোঃ আজমত উল্লাহ খান টঙ্গির সানফ্লাওয়ার কিন্ডারগার্টেন কেন্দ্রে এবং অধ্যাপক এম এ মান্নান গাজীপুর মহানগরের সালনা নাসির উদ্দিন মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেবেন।

এবারের নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র ৩৯২টি, যার মধ্যে ২টি অস্থায়ী কেন্দ্র। নির্বাচনে ৩৯২টি কেন্দ্রের মধ্যে ২৩৫টিই ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ভোটকেন্দ্রগুলোতে ভোটগ্রহণের কাজে প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসারসহ ৭ হাজার ২৫৯ জন নির্বাচনী কর্মকর্তা দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছেন। তাদের মধ্যে ৩৯২ জন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, ২ হাজার ২৮৯ জন সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও ৪ হাজার ৫৭৮ জন পোলিং কর্মকর্তা।

নির্বাচনে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা দিতে ৫ হাজার পুলিশ সদস্য, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ১২ প্লাটুন সদস্য, ৮৪৭ জন র‌্যাব ও আনসার সদস্যসহ ১১ হাজার সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। যে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে র‌্যাবের ডগ স্কোয়াড ও হেলিকপ্টার টহল ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। শুক্রবার থেকেই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সংশ্লিষ্ট ভোটকেন্দ্রে অবস্থান গ্রহণ করে রয়েছেন।

ভোটকেন্দ্র ছাড়াও পুরো নির্বাচনী এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ, র‌্যাব এবং আনসার-ভিডিপি মোতায়েন করা হয়েছে। ভোট কেন্দ্রগুলোকে ঝুঁকি বিবেচনা করে সাধারণ ও গুরুত্বপূর্ণ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। সে অনুযায়ী নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। সাধারণ ভোটকেন্দ্রে ২২ জন এবং গুরুত্বপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে ২৪ জন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছেন।

এছাড়া নির্বাচনী এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে মোবাইল/স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য পুলিশ, এপিবিএন, র‌্যাব, কোস্টগার্ড, ব্যাটালিয়ান আনসার ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। মোবাইল/স্ট্রাইকিং ফোর্স ভোটগ্রহণের পর্ববর্তী ২ দিন থেকে শুরু করে ভোটগ্রহণের দিন এবং ভোটগ্রহণের পরবর্তী দিনসহ মোট চার দিন সংশ্লিষ্ট এলাকায় মোতায়েন থাকবে। প্রতিটি ওয়ার্ডের জন্য একটি মোবাইল ফোর্স ও তিনটি ওয়ার্ডের জন্য একটি স্ট্রাইকিং ফোর্স নিয়োজিত রয়েছে। সিটি কর্পোরেশন এলাকায় পুলিশ, এপিবিএন ও আনসারের সমন্বয়ে ৫৭টি মোবাইল এবং ১৯টি স্ট্রাইকিং ফোর্স নিয়োজিত রয়েছে। এছাড়া প্রতি ২টি ওয়ার্ডে একটি টিম করে ৠাবের ২৮টি টিম এবং ১২ প্লাটুন বিজিবি নিয়োগ করা হয়েছে।

নির্বাচনী এলাকায় মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্সের সঙ্গে ৫০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েন করা হয়েছে। নির্বাচনী অপরাধীদের সংক্ষিপ্ত বিচারের/তাৎক্ষণিক বিচারের জন্য সিটি কর্পোরেশনে ১০ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েন করা হয়েছে।

শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের স্বার্থে রিটার্নিং অফিসারের নেতৃত্বে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভিজিলেন্স ও অবজারভেশন টিম গঠন করা হয়েছে। নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য ব্যাপক সংখ্যক দেশি ও বিদেশি পর্যবেক্ষক নিয়োজিত আছেন। এছাড়া নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব পর্যবেক্ষকও নিয়োগ করা হয়েছে। বিপুল সংখ্যক সাংবাদিক নির্বাচনী সংবাদ সংগ্রহের জন্য নির্বাচনী এলাকায় দায়িত্ব পালন করছেন।

ভোটের তথ্য মোবাইলে
ভোটাররা যাতে মোবাইল ফোনের মেসেজের মাধ্যমে ভোটার নম্বর ও ভোটকেন্দ্রের নাম জানতে পারেন তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। OU লিখে স্পেস দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর (১৭ ডিজিট) লিখে 2233 নম্বরে প্রেরণ করতে হবে। জাতীয় পরিচয়পত্র ১৩ ডিজিটের হলে প্রথমে জন্ম সাল লিখে পরিচয়পত্রের নম্বর (১৩ ডিজিট) লিখে 2233 নম্বরে প্রেরণ করতে হবে। ফিরতি মেসেজে ভোটার নম্বর ও ভোটকেন্দ্রের নাম জানা যাবে।

জিসিসি নির্বাচনের সবশেষ সংবাদ জানতে 8877 এ ডায়াল কর‍ুন আপনার রবি নাম্বার থেকে

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top