সকল মেনু

আসামি আতাউর বিভিন্ন বাহিনীর পোশাকে নির্বিঘ্নে এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন

index যশোর প্রতিনিধি:  মণিরামপুরে নির্মাণ শ্রমিক মানোয়ার হত্যামামলার প্রধান আসামি আতাউরসহ সাত আসামিকে মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে আদালতে চার্জশিট দাখিলের পর এলাকাবাসী আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। কেননা আতাউর এখন র‌্যাবসহ বিভিন্ন বাহিনীর পোশাক পরে নির্বিঘ্নে এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন।
এলাকাবাসীর দাবি, তার ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে সাধারণ মানুষ আরো ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
জানা যায়, মণিরামপুর উপজেলার কুলটিয়া ইউনিয়নের দোহাকোলা গ্রামের আবুল কাশেমের  ছেলে আতাউর রহমান প্রায় ৫ বছর ধরে নিজেকে বিভিন্ন আইন শৃংঙ্খলা বাহিনীর সোর্স পরিচয় দিয়ে এলাকায় সন্ত্রাসীদের নিয়ে বিভিন্ন ধরনের অপরাধ কর্মকান্ড শুরু করেন। কেউ প্রতিবাদ করলে তারা হামলা-মামলার শিকার হতেন।
অভিযোগ রয়েছে, আতাউর সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের পাশাপাশি অস্ত্র ও মাদক ব্যবসা করে অল্প দিনে বনে গেছেন অঢেল ধন-সম্পদের মালিক। এছাড়াও আতাউরকে র‌্যাবসহ বিভিন্ন বাহিনীর পোশাক পরে এলাকায় নির্বিঘ্নে চলাচল করতে দেখা গেছে। এলাকার অনেক মানুষকে ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজি করারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। আবার থানার কতিপয় পুলিশ অফিসারের সঙ্গেও তার রয়েছে বেশ সখ্যতা।
গত বছর আতাউর যশোরের রাজারহাট এলাকায় জমি কিনে বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করেন। আর এ দায়িত্ব পান বাগডাঙ্গা গ্রামের নির্মাণ শ্রমিক মানোয়ারসহ তার লোকজন। বাড়ি নির্মাণ কাজের টাকা পরিশোধ না করায় কাঠ-বাঁশসহ অন্যান্য মালামাল এবং তার  লোকজন নিয়ে বাড়ি ফিরে আসেন মানোয়ার। ফলে ক্ষিপ্ত হয় আতাউর। গত বছরের ২৯ মার্চ রাত আটটার দিকে পাওনা টাকা দেয়ার কথা বলে মানোয়ারকে ডেকে বাগডাঙ্গা স্কুলের পাশে নিয়ে আতাউর ও তার সহযোগীরা গুলি করে হত্যা করেন। এ ঘটনায়  নিহতের বড়ভাই আলতাফ হোসেন বাদী হয়ে আতাউরকে প্রধান করে ১০ জনের নাম উল্লেখসহ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
পরবর্তীতে আতাউরসহ অন্যান্য আসামিদের আটক পূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে এলাকাবাসী একাধিকবার বাগডাঙ্গা স্কুল মাঠে প্রতিবাদ সমাবেশসহ সংবাদ সম্মেলন করেন। এছাড়া ওই সময় একই দাবিতে এলাকাবাসী যশোর জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে।
অভিযোগ রয়েছে এ কর্মসূচি পালন করতে যাওয়ার সময় যশোরের রাজারহাট এলাকায় আতাউরসহ তার সন্ত্রাসীরা নিহতের পরিবার ও গ্রামবাসীর উপর হামলা চালিয়ে মারপিট করে। পরবর্তীতে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য যশোরের সিআইডি পুলিশ দায়িত্ব পান।
এদিকে, মামলার প্রধান আসামি আতাউরসহ সাতজনকে অব্যাহতি এবং তিনজনকে অভিযুক্ত করে সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক মমতাজুল হক আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন গত ৩১ ডিসেম্বর।
মমতাজুল হক জানান, নিরপেক্ষ তদন্তের পর আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, এ মামলা থেকে প্রধান আসামি আতাউরকে বাদ দেয়ায় তিনি আরো  বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। চাকরি না করেও আতাউর কখনও র‌্যাবের পোশাক, আবার কখনও পুলিশ ও আনসারের পোশাক পরে এলাকায় চলাচল করছে।
কলেজ শিক্ষক নাজমুল হক বলেন, অচিরেই আতাউরের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা না নিলে তার দ্বারা সাধারণ মানুষ আরো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
মানোয়ার হত্যামামলার বাদী আলতাফ হোসেন মামলার প্রধান আসামি আতাউরকে অব্যাহতি দেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, আদালতে সিআইডি পুলিশের দাখিলকৃত চার্জশিটের বিরুদ্ধে অতি শিগগিরই নারাজি পিটিশন দাখিল করা হবে।
এদিকে ওই এলাকার শান্তি রক্ষা কমিটির আহবায়ক আবদুর রউফ জানান, চার্জশিট থেকে আতাউরের নাম বাদ দেওয়ায় তিনি এলাকায় প্রতিবাদকারীদের ভয়ভীতি দেয়াসহ হয়রানি করছেন।
মণিরামপুর থানার ওসি তাহেরুল ইসলাম জানান, কেউ লিখিত অভিযোগ করলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে র‌্যাব-৬ যশোর ক্যাম্প কমান্ডার মেজর রইছুল আযম মনি বলেন, আতাউর র‌্যাবের কোনো সোর্স নয়। তাকে আটক করতে র‌্যাবের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top