ক্রীড়া ডেস্ক, হটনিউজ২৪বিডি.কম ১৭ জানুয়ারী : সাব্বির রহমানের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতেও জিম্বাবুয়েকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। ৪২ রানের দাপুটে জয়ে চার ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে মাশরাফি বিন মুর্তজার দল।
রোববার খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে ৩ উইকেটে ১৬৭ রানের লড়াকু পুঁজি গড়ে বাংলাদেশ। জবাবে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১২৫ রানের বেশি করতে পারেনি জিম্বাবুয়ে।
ব্যাট হাতে ৩০ বলে অপরাজিত ৪৩ রানের পর হাত ঘুরিয়ে ৩ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের জয়ের নায়ক সাব্বির রহমান। ম্যাচসেরার পুরস্কারটা তাই তার হাতেই উঠেছে।
মজার ব্যাপার হচ্ছে, প্রথমে দুই ওভার বল করে দুই উইকেট নিয়েছিলেন সাব্বির। ওদিকে কাঁধে ব্যথার কারণে ম্যাচের শেষ বলটা করতে পারেননি মুস্তাফিজ। আর সাব্বির সেই বলটি করতে এসে গ্রায়েম ক্রেমারকে নিজের ফিরতি ক্যাচে পরিণত করে নেন আরেকটি উইকেট!
১৬৮ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুটা বেশ ভালোই করেছিল জিম্বাবুয়ে। উদ্বোধনী জুটিতে ৬.৪ ওভারে ৫০ রান তোলেন দুই ওপেনার ভুসি সিবান্দা ও হ্যামিল্টন মাসাকাদজা। তবে ৫০ থেকে ৬৮, ১৮ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে যায় সফরকারীরা।
প্রথমে সিবান্দাকে (২১) বোল্ড করে উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন মাশরাফি। এরপর সাব্বির নিজের পর পর দুই ওভারে মাসাকাদজা (৩০) ও রিচমন্ড মুতুম্বামিকে (৭) সাজঘরের পথ দেখান। এর মাঝের ওভারে শেন উইলিয়ামসকে (৭) এলবিডব্লিউ করে নিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি উইকেট নেন শুভাগত হোম।
অবশ্য পঞ্চম উইকেটে প্রতিরোধ গড়েছিলেন ম্যালকম ওয়ালার ও পিটার মুর। অনেকটা আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন ওয়ালার। তবে ওয়ালারকে ফিরিয়েই ৩৭ রানের জুটি ভাঙেন আল-আমিন হোসেন। সৌম্য সরকারের ক্যাচ হওয়া ওয়ালার ২১ বলে ৩টি চার ও এক ছক্কায় ২৯ রান করেন।
এরপর ইনিংসের ১৭তম ওভারে মুস্তাফিজুর রহমান ৪ বলের ব্যবধানে ২ উইকেট তুলে নিলে বাংলাদেশও ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। নেভিল মাদজিভা (০) ও পিটার মুর (৯)- দুজনকেই বোল্ড করেন বাংলাদেশের তরুণ তুর্কি মুস্তাফিজ।
ইনিংসের শেষ ওভারটিও করতে আসেন মুস্তাফিজই। এই ওভার থেকে জিম্বাবুয়ের দরকার ছিল ৪৭ রান। মুস্তাফিজ প্রথম পাঁচ বল থেকে মাত্র ৪ রান খরচ করেন, কিন্তু কাঁধে ব্যথার কারণে শেষ বলটি করতে পারেননি। আর এই বলটি করতে এসে ক্রেমারকে নিজের ফিরতি ক্যাচ বানিয়ে আরেকটি উইকেট নেন সাব্বির।
২.১ ওভার বল করে মাত্র ১১ রানের বিনিময়ে ৩ উইকেট নেন সাব্বির, যা তার টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ার সেরা বোলিংও। মুস্তাফিজ ১৯ রানে নেন ২ উইকেট। এ ছাড়া মাশরাফি, শুভাগত ও আল-আমিনের ঝুলিতে জমা পড়ে একটি করে উইকেট।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের শুরুটা মন্দ হয়নি। তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার মিলে উদ্বোধনী জুটিতে ৪৫ রান তোলেন।
২৩ রান করে তামিম ফিরে গেলে ভাঙে উদ্বোধনী জুটি। মুজারাবানির বলে ভিটোরিকে ক্যাচ দেয়া তামিম ১৭ বলে ৩টি চার ও এক ছক্কায় ২৩ রানের ইনিংসটি সাজান।
এরপর দ্বিতীয় উইকেটে সাব্বির রহমানের সঙ্গে জুটি বেঁধে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন সৌম্য। চার-ছক্কার ধুম ধাড়াক্কা ব্যাটিংয়ে ব্যক্তিগত ফিফটির দিকেও এগিয়ে যাচ্ছিলেন এই বাঁহাতি। তবে ৪৩ রান করে স্পিনার গ্রায়েম ক্রেমারের বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে ম্যালকম ওয়ালারের হাতে ধরা পড়েন সৌম্য। তার ৩৩ বলের ইনিংসে ছিল ৪টি চার ও ৩টি ছক্কার মার।
সৌম্যর বিদায়ের পর চারে নামা মাহমুদউল্লাহ অবশ্য দ্রুতই সাজঘরে ফেরেন। ওয়েলিংটন মাসাকাদজার বলে উইকেটের পেছনে মুতুম্বামির গ্লাভসবন্দি হন মাহমুদউল্লাহ (১)। তবে মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে দলের রান বাড়াতে থাকেন সাব্বির। এ জুটিতে দলীয় শতরান পার করে বাংলাদেশ। কিন্তু দলীয় ১২৮ রানে রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে ক্রিজ ছাড়েন মুশফিক। ক্রিজ ছাড়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ২০ রান।
এরপর চতুর্থ উইকেটে সাব্বির ও সাকিব আল হাসানের ২৪ বলে ৩৯ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি বাংলাদেশকে লড়াইয়ের পুঁজি (১৬৭) এনে দেয়। সাব্বির ৩০ বলে ৩টি ছক্কা ও এক চারে অপরাজিত ৪৩ রান করেন। আর সাকিব ১৭ বলে দুটি চার ও এক ছক্কায় ২৭ রানে অপরাজিত থাকেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে সিরিজের টাইটেল স্পন্সর দেশের স্বনামধন্য ইলেকট্রিক্যাল, ইলেকট্রনিকস, অটোমোবাইলস ও হোম অ্যাপ্লায়েন্স প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন। আর পাওয়ার স্পন্সর ওয়ালটন গ্রুপের জনপ্রিয় ব্র্যান্ড মার্সেল।
হটনিউজ২৪বিডি.কম/এআর
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।