সকল মেনু

কুষ্টিয়ায় তিন প্রকৌশলী ও এক শিক্ষকের যৌন কেলেংকারীর ভিডিও ফুটেজ নিয়ে তোলপাড়

&K&কাঞ্চন কুমার,কুষ্টিয়া থেকে: কুষ্টিয়ায় তিন প্রকৌশলী ও এক স্কুল শিক্ষকের যৌন কেলেংকারী ভিডিও ফুটেজ নিয়ে জেলা জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। স্কুল পড়–য়া একাধিক মেয়েদের সাথে আলোচিত এসব যৌন কেলেংকারী ভিডিও ফুটেজ মোবাইল আর ইন্টারনেটের কল্যাণে এখন সবার হাতে হাতে ছড়িয়ে পড়েছে। কুষ্টিয়া শহরতলী মঙ্গলবাড়ীয়া আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের লম্পট শিক্ষক হেলাল উদ্দিন পান্না তার বাসায় বন্ধুদের নিয়ে গোপন ক্যামেরায় এ সব ভিডিও ফুটেজ ধারন করে রেখে দেন তার ব্যক্তিগত ল্যাপটপে। শুধু তিন প্রকৌশলীরই নয় কুষ্টিয়ার বেশ কয়েকজন রথি মহারথিরও যৌন কেলেংকারীর ভিডিও ফুটেজ পাওয়া গেছে সেখানে। ঘটনার নায়করা সবাই ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাবেক নেতা-কর্মী বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় যুবকরা এক ছাত্রীর সাথে শিক্ষক হেলাল উদ্দিন পান্নার ছবি দেখে তাকে আটক করে গণ ধোলাই দিয়ে ল্যাপটপ কেড়ে নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটির এক পর্যায় বের হয়ে আসে একাধিক যৌন কেলেংকারীর আলোচিত এ সব ভিডিও ফুটেজ। ঘটনার পর থেকে ওই শিক্ষক রয়েছেন আত্মগোপনে। এদিকে ওই তিন প্রকৌশলী ও লম্পট শিক্ষকের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তুমুলক শাস্তির দাবীতে কুষ্টিয়ায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকাবাসী। বিচারের দাবী জানিয়ে এলাকায় সচেতন নাগরিক সমাজ, ব্যানারে টাঙানো হয়েছে পোষ্টার। ছাড়া হয়েছে লিফলেট। স্কুল পড়–য়া এসব মেয়েদের যৌন কেলেংকারীর ভিডিও ফুটেজ মোবাইল আর ইন্টারনেটে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ায় ওই সব মেয়ে ও তাদের আত্মীয় স্বজনরা পারিবারিক ও সামাজিক ভাবে হেয় পতিপন্নের শিকার হয়েছেন। ঘটনার স্বীকার ওইসব ছাত্রী ও তাদের অভিভাবকরা মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছে। কুষ্টিয়ার শহরতলী মঙ্গলবাড়ীয়া আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গনিতের শিক্ষক হেলাল উদ্দিন পান্না তারই প্রতিষ্ঠানের অসংখ্যক ছাত্রীর সাথে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করে গোপনে প্রতিটি অন্তরঙ্গ মুহুর্তের দৃশ্য নিখুঁতভাবে ভিডিও ধারন করে রাখেন। এ ভাবে দিনের পর পর দিন ওই শিক্ষকের লালসার শিকারে পরিনত হয় তারই প্রতিষ্ঠানের অসংখ্যক ছাত্রী। এদের বেশীর ভাগেরই বয়স ১৮ বছরের নীচে। সুত্র জানায়, গত ১৫জুন এক ছাত্রীর সাথে মোবাইল ফোনে তোলা ছবির সুত্র ধরে স্থানীয় যুবকদের হাতে স্কুল ক্যাম্পাসেই গন ধোলায়ের শিকার হন শিক্ষক হেলাল উদ্দিন পান্না। গন্যমান্য ব্যক্তিদের মধ্যস্থায় যুবকেরা তাকে ছেড়ে দিলেও তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ রেখে দেয়। এই ল্যাপটপের সুত্র ধরেই বেরিয়ে আসে আলোচিত ব্যক্তিদের এসব যৌন কেলেংকারীর একাধিক আলোচিত ঘটনা। ওই ল্যাপটপ সার্চ করে যা পাওয়া যায় তা রীতিমত শিউরে ওঠার মত ভয়ংকর ঘটনা। ওই ল্যাপটপে পাওয়া যায় একাধিক ছাত্রীর সাথে দৈহিক মেলামেশার নিখুঁত ভিডিও ফুটেজ। ঘটনার মুল নায়ক শিক্ষক হেলাল উদ্দিন পান্না এক সময় হাটশ হরিপুর ইউনিয়নের ইসলামী ছাত্র শিবিরের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। আর পান্না যার কাছ থেকে প্রযুক্তিগত সহযোগিতা নিয়ে গোপন ক্যামেরায় এই যৌন কেলেংকারীর দৃশ্য ভডিও ধারন করেন তিনি হলেন এক সময়ের জামায়াতে ইসলামীর হাটশ হরিপুর ইউনিয়নের সাবেক সেক্রেটারী আজ্জাত আলী আজাদ। বর্তমানে তিনি ঢাকায় সিসি ক্যামেরার ব্যবসা করেন। প্রকৌশলী হাসানুজ্জামান হাসান এক সময় ইসলামী ছাত্র শিবিরের সক্রিয় কর্মি ছিলেন বলে জানা গেছে। স্কুল শিক্ষক পান্না কুষ্টিয়া শহরতলী জুগিয়ায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে গোপনে ক্যামেরায় এ সব দৈহিক মেলামেশার দৃশ্য ভিডিও ধারন করে রাখেন। শুধু তাই নয় সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত বন্ধুদের দাওয়াত করে ডেকে নিয়ে গোপন ক্যামেরায় তাদেরও একাধিক দৈহিক মেলামেশার চিত্রও ধারন করে ব্যক্তিগত ল্যাপটপে রেখে দেন লম্পট শিক্ষক হেলাল উদ্দিন পান্না। এ রকম ৯টি ভিডিও ক্লিপের দু’টিতে রয়েছে শিক্ষক পান্নার সাথে তারই প্রতিষ্ঠানের দুই ছাত্রীর। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-প্রধান প্রকৌশলী আলিমুজ্জামান টুটুলের সাথে দুই ছাত্রীর দৈহিক মিলনের দুটি ভিডিও ক্লিপ রয়েছে সেখানে। এর একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায় ওই ছাত্রীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে দৈহিক মিলনে বাধ্য করছেন প্রকৌশলী আলিমুজ্জামান টুটুল। মেহেরপুর এলজিইডিতে কর্মরত উপ-সহকারী প্রকৌশলী হাসানুজ্জামান হাসানের ভিডিও ফুটেজেও রয়েছে এতে। অপর ভিডিও ফুটেজে রয়েছে মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলা এলজিইডি ইঞ্জিনিয়ার শরিফুল ইসলাম সজলের যৌন মিলনের দৃশ্য। অপর ভিডিও ফুটেজটি হাটস হরিপুর ইউনিয়নের যুবলীগ নেতা মনিরুল ইসলাম মনোর। এ ছাড়াও কুষ্টিয়ার আরো কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তির আলোচিত যৌন কেলেংকারীর ভিডিও ফুটেজ রয়েছে সেখানে। ঘটনার নায়ক স্কুল শিক্ষক পান্না এবং ওই তিন প্রকৌশলী টুটুল, হাসান ও সজলের প্রত্যেকের বাড়ীই কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হাটশ হরিপুর ইউনিয়নে। এদের মধ্যে প্রকৌশলী আলিমুজ্জামান টুটুল কুষ্টিয়ার খেতাব অর্জনকারী সাদা মনের মানুষ। নানা সামাজিক কর্মকান্ডের সাথে তিনি সম্পৃক্ত। কুষ্টিয়া পৌরসভার আরবান প্রজেক্টের আওতায় তিনি স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলে মেয়েদের বিনামুল্যে কোচিংসহ নানা ধরনের কালচারাল প্রশিক্ষন প্রদান করে থাকেন। আলোচিত এ যৌন কেলেংকারীর ঘটনা ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর প্রকৌশলী আলিমুজ্জামান টুটুলের একাধিক কেচ্ছা কাহিনী বের হয়ে আসছে। ভুক্তভুগিদের অভিযোগ অতি সুদর্শন প্রকৌশলী আলিমুজ্জামান টুটুল ‘কে হবে লাখো পতি’ সাধারন জ্ঞানের প্রতিযোগীতাসহ চমক প্রদ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মেয়েদের ফাঁদে ফেলে সর্বনাশ করত। এ ব্যাপারে আলিমুজ্জামান টুটুলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি দাবী করেন তার সরলতার সুযোগে কৌশলে তাকে ব্লাক মেলিং করা হয়েছে। তিনি এক পর্যায় বলেন, আমি ভুল করে ফেলেছি মাফ করে দেন। আলোচিত এই যৌন কেলেংকারীর বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে পুলিশ সুপার মফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, এ রকম ভিডিও ফুটেজ আমার হাতে ও এসেছে। তবে এ বিষয়ে ভুক্তভুগি কোন ছাত্রী বা অভিভাবক লিখিত কোন অভিযোগ এখনো করেননি। তার পরেও পুরিশ স্বপ্রনোদিত হয়ে ঘটনার মুল নায়ক শিক্ষক পান্নাকে গ্রেফতারের জন্য বিভিন্ন জায়গায় অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top