সকল মেনু

৫০ হাজার কৃষক পরিবারের দুরবস্থা

bbbbbনিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া :বিকাল থেকে পাঁচ দিন পরে টানা বৃষ্টি থেমেছে। কিন্তু পানিবন্দী মানুষের দুর্ভোগ কমেনি। কৃষক পড়েছে চরম দুরবস্থায়। কারণ এখন বীজতলা তৈরির সময়, কিন্তু করতে পারছে না। বাড়িঘর থেকে সব পানিতে বন্দী হয়ে আছে। চালচুলো সব ডুবে আছে। অন্তত ৫০ হাজার পরিবারের এমন দুর্দশা কাটছে না। আর সহসা কাটার সম্ভাবনা নেই। কারন বৃষ্টিতে জমে থাকা পানি দ্রুত নিষ্কাশনের জন্য পর্যাপ্ত স্লুইস রয়েছে। কিন্তু এসব স্লুইসের সবগুলো গেট কখনও খোলা হয় না। স্লুইসগুলো নিয়ন্ত্রণ করছে এক শ্রেণীর প্রভাবশালী মহল। তারা মাছ ধরার জন্য স্লুইসের এক থেকে সর্বোচ্চ দুইটি গেট ছেড়ে পানি নামায়। ফলে মানুষের দুর্ভোগ যায় না।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকের দুর্দশার শেষ নেই। নীলগঞ্জ ইউনিয়নের নীজকাটা স্লুইসটির ছয়টি গেট রয়েছে। সেখানে বৃষ্টির জমানো পানি নামার জন্য দুইটি গেট খুলে রাখা হয়েছে। নদীতে ভাটার সময়ে ওই দু’টি গেট দিয়ে যতটুকু পানি নামছে। বাকি গেট আটকে রাখা হয়েছে। ফলে নীজকাটা, পশ্চিম সোনাতলা গ্রামসহ তিন গ্রামের ছয় শতাধিক কৃষক পানিবন্দী রয়েছে। নীলগঞ্জ গ্রামের স্লুইসটির মাত্র দুইটি গেট খোলা রয়েছে। বাকিসব বন্ধ রয়েছে। ফলে নীলগঞ্জ, নবাবগঞ্জ গ্রামের কৃষকের পানির বন্দীদশা কাটছে না। পুর্ব মোস্তফাপুর গ্রামের দুই ভেন্টের স্লুইসটি এক বছর আগে করা হয়েছে। এমনকি সরকারি উদ্যোগে সংলগ্ন খালটিও পুনর্খনন করা হয়েছে। কিন্তু খালটির মাঝখানে ময়নদ্দিন ফরাজী গং বাঁধ দিয়ে জাল পেতে মাছ ধরছে। ফলে বিলে জমে থাকা পানি নামতে পারছে না। কৃষকের দাবির মুখে স্থানীয় চেয়ারম্যানের নির্দেশে ছয় জন চৌকিদার ও দুইজন মেম্বারকে বাঁধটি কেটে পানি নামানোর উদ্যোগ নিতে শোনা গেছে। মিঠাগঞ্জ ইউনিয়নের সাফাখালী, মেলাপাড়া, চরপাড়া, মধুখালী, গোলবুনিয়ায় একই দৃশ্য দেখা গেছে। লতাচাপলী ইউনিয়নের মুসুল্লীয়াবাদ গ্রামসহ আশপাশের চারটি গ্রামের মানুষ পানিবন্দী হয়ে আছে। পানি নামার স্লুইসগুলোর অধিকাংশ গেট বন্ধ করে রাখায় কৃষকের এমন সর্বনাশ হয়ে যাচ্ছে। চাকামইয়া ইউনিয়নের চুঙ্গাপাশা স্লুইস খালের সামনে সেখানকার একটি প্রভাবশালী মহল সাবগেট করে স্লুইস দু’টি তার নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। পানি ওঠানামায় মারাত্মক প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছে। সেখানের বিলে এখনও কোমর সমান পানি জমে আছে। কৃষক বীজতলা করতে পারছে না। ধুলাসারে চরচাপলী গ্রামের খালবিল পানিতে থৈ থৈ করছে। সব ডুবে আছে। সংলগ্ন স্লুইসগুলো আটকে প্রভাবশালী কয়েকটি মহল মাছ ধরছে। ফলে যা হবার তাই হচ্ছে। কৃষকের বাড়িঘর, আবাদি জমি ডুবে আছে। এভাবে বৃষ্টি থামার দুইদিন পরেও পানিবন্দী মানুষের দুর্ভোগ কমছে না। ১২টি ইউনিয়নের অন্তত ৫০টি স্লুইস এখন পানি নামার কাজে ব্যবহার হচ্ছে না। এগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে মাছ ধরার কাজে। তাই কৃষকের দাবি তাদেরকে পানি বন্দীদশা থেকে রক্ষা করতে স্লুইস গেট খুলে দেয়ার ব্যবস্থা করা হোক। এব্যাপারে পাউবো কলাপাড়াস্থ তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর কার্যালয়ের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আবুল বাশার জানান, প্রত্যেকটি স্লুইস নিয়ন্ত্রণের জন্য স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে স্থানীয় কৃষকদের নিয়ে স্লুইস নিয়ন্ত্রন কমিটি রয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top